করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু না থাকলেও করোনার ওপর সওয়ার হয়ে আতঙ্কবাদী বেনিয়ারা যে ভাইরাসের বিস্তার ঘটাচ্ছে সে সম্পর্কে এখনই পুরোপুরি সতর্ক না হলে সমাজ সভ্যতা মানবিকতাকে দিতে হবে চরম মূল্য!
করোনার ওপর সওয়ার হওয়া এই ভাইরাসের নাম হচ্ছে ভার্চুয়াল ভাইরাস। ভার্চুয়াল আসক্তি।
যা মানুষকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করছে, মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করছে, বন্ধু থেকে বিচ্ছিন্ন করছে, আত্মীয় থেকে বিচ্ছিন্ন করছে, সহপাঠী থেকে বিচ্ছিন্ন করছে। যা আমাদের পরিবার সামাজিক বুননকে নষ্ট করছে।
আর তরুণ প্রজন্মকে করছে অসহিষ্ণু সহিংস বিষণ্ণ এবং নিজের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্ত। ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ।
এক মা চিঠি লিখেছেন-
সন্তান সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে। স্যারের কাছে পড়তে চায় না। বই খাতা পুড়ে ফেলতে বলে। ঘর থেকে কোথাও বেড়াতে যেতে চায় না। পরীক্ষার কথা শুনতে পারে না। সে ঘর ছেড়ে চলে যেতে চায়। সারাক্ষণ নিষ্প্রাণ থাকে। ভালো কিছুই তার ভালো লাগে না। শরীর স্বাস্থ্য অনেক বেড়ে গেছে।
এখন কম্পিউটার চায়।একজন এডিটর ইউটিউবার ইত্যাদি হতে চায়।
আমাকে ‘মা’ বলে না। ‘বুয়া’ বলে ডাকে। আরো যা বলে তা লজ্জার, শোনাও পাপ।
আসলে এই সমস্যা যে কত মায়ের, এই সমস্যা যে কত বাবার, এই সমস্যা যে কত পরিবারের তা শুধু অন্তর্যামীই বলতে পারবেন।
শুধু যে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসহিষ্ণুতা সহিংসতা বিষণ্ণতা হতাশা বিভ্রান্তি বেড়ে গেছে তা নয়। আমাদের পারিবারিক পরিমণ্ডলেও এই অসহিষ্ণুতা সহিংসতা বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস- চার মাসে ৭১ জন নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন।
স্ত্রী স্বামীকে হত্যা করেছে। ছোট ভাই বড় ভাইকে হত্যা করেছে, ভাবীকে হত্যা করেছে। সৎ মা পাঁচ বছরের কন্যা শিশুকে হত্যা করেছে। এক তরুণী তার মা-বাবা-বোনকে খুন করেছে।
এবং প্রত্যেকটা খুনের পেছনেই এই অসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক অবিশ্বাস প্রবলভাবে কাজ করেছে।
এবং এই অবিশ্বাস, অসহিষ্ণুতা বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ভার্চুয়াল ভাইরাস, সোশ্যাল মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি।
গড়ে প্রতিদিন ৩৮টি ডিভোর্স হচ্ছে। এবং ঢাকা শহরে প্রতি ৩৮ মিনিটে একটি সংসার ভেঙে যাচ্ছে। আর মতের অমিল মতের বিরোধ বোঝাপড়া সহিষ্ণুতার অভাব ডিভোর্সের এক নম্বর কারণ হিসেবে উঠে এসছে।