1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩২ অপরাহ্ন

আলফাডাঙ্গার শুভঙ্করের গল্প

  • সময় মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১
  • ১৩২১ বার দেখা হয়েছে

 

আজমুল আজিজ;ঢাবি প্রতিনিধি

ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বারাংকুলা গ্রাম।এ গ্রামেরই সন্তান ঘুরিফিরি ফরিদপুরের স্বপ্নদ্রষ্টা ফরিদপুরের ভবিষ্যত তারেক মাসুদ।এ নামটি ভালবেসে আমিই তাকে দিয়েছি।বাবা নিহার রঞ্জন পাল ও মাতা অমিতা পালের ইচ্ছা বড় ছেলেকে ডাক্তার বানাবেন।কিন্তু ছেলেকে যে ডাক্তারি ইউনিফর্ম ডাকে না।তার যত প্রেম,যত আগ্রহ প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে।

“মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন”-আমাকে দশজন কর্মট যুবক দাও,আমি পুরো মালয়ীদের নিয়ে সারা বিশ্ব জয় করে ফেলব।মাহাথির মোহাম্মদ সত্যিই সারা বিশ্ব জয় করে ছেড়েছিলেন।

এই শুভঙ্কর শুভকে দেখে মনে হয়;সে শুধু ফরিদপুরকে না,সমগ্র দেশটাকেই সে জয় করে ছাড়বে। তাইতো কখনো সে নোকেয়া ফোন দিয়ে ছবি তুলতে তুলতে হারিয়ে যান বারাশিয়া পাড়ে।আবার কখনো সাইকেলে চড়ে ছুটে যায় আলফাডাঙ্গার আকাঁবাকা পথ বেয়ে দূর বহুদুরে।মধুমতি বারাশিয়া আড়িঁয়ালখার দুপাড়ের এ গাঁয়ে ও গাঁয়ে সন্ন্যাসীর ন্যায় ধ্যানমগ্ন থাকেন।

সৃষ্টির নেশা তাকে প্রতিনিয়ত হাতছানি দিয়ে ডাকে।প্রথমে আলফাডাঙ্গা পেজ নিয়ে কাজ করলেও নিজেকে নিজ উপজেলার মধ্যে আবদ্ধ করে রাখেন নি, নতুন করে হারিয়ে যান ফরিদপুরের দর্শনীয় স্থানের ট্রাভেল সো ও ডকুমেন্টারি তৈরীতে।

তিনি অনুভব করেন অনলাইনে ফরিদপুর বিষয়ক কোন তথ্য নির্ভর কোন কন্টেন্ট নেই। যা দেখে ফরিদপুর সম্পর্কে দেশ ও দেশের বাইরের সর্বস্তরের মানুষ জানতে পারবে।নিজের জেলা নিয়ে অহংকার করবে,সেটা শুধু মুখেই কেন হবে?বাস্তবে কেন নয়?কেন আমি ফরিদপুরের গর্বিত সন্তান ” সেটা জেনে শুনে গর্ব করাতেই যত স্বার্থকতা।

এই “কেন?” শব্দের উত্তর খুজতেই শুভংকর ঘুরি-ফিরি ফরিদপুর গ্রুপে কাজ করে যাচ্ছে ফরিদপুরকে নিয়ে। ইতিমধ্যেই আমরা ফরিদপুরের খেজুর রস, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ,গড়াই সেতু,নদী গবেষণা কেন্দ্র,মথুরাপুর দেউল,সাতৈরের শাহী মসজিদ,ভাঙ্গার রেল জংশন সহ আরো অনেক বিষয়ে ঘুরি-ফিরি ফরিদপুরের প্রোগ্রামে পেয়েছি। আর এভাবেই শুভংকর নিজস্ব প্রতিভার প্রমাণ রেখে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ঘুরিফিরি ফরিদপুর পেজের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছে ফরিদপুরের নানা জানা-অজানাকে।

ঘুরি-ফিরি ফরিদপুর কেন এত জনপ্রিয় হচ্ছে । কেন এত এত শেয়ার হয় ? লক্ষ লক্ষ ভিউয়ার্স দেখে ? শুধু ফরিদপুরের বন্ধুরা ফরিদপুরের ভিডিও বলেই কি এত পছন্দ করে । ব্যাপারটা কিন্তু ঠিক এত সহজ নয় ।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ম্যাজিক তার শিক্ষাজীবন ।

শুভংকর আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করে ভর্তি হন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড মিডিয়া ডিপার্টমেন্টে ।ফিল্ম এন্ড মিডিয়া সাবজেক্টের উপর ২০১৮ সালেই অনার্স শেষ হবে শুভঙ্করের । চার বছরের শিক্ষা জীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবগুলো প্রাক্টিক্যাল প্রজেক্ট জমা দিয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বিষয়বস্তুর উপর চিত্রায়ন করে । কারণ ওর গ্রাম ওকে যতটা টানত ততটা শহর নয় । বলা যায় নিজ অঞ্চলের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ওর শিক্ষার মূল উপাদান ।

উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে ২০১৭ সালে নির্মাণ করেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “সম্প্রীতি” । যেখানে শুভংকর বর্তমান সময়ের ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ,ধর্মীয় অবমাননাকে কেন্দ্র করে দুষ্টু চক্রের অস্থিতিশীল পরিবেশ থেকে রক্ষা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করেছে । বুঝিয়েছেন হুজুগে বাঙ্গালি নয় আমাদের হতে হবে বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন ।

ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান ?
শুভংকরের সহজ উত্তর ঃ
যদি বলেন লক্ষ্য তাহলে একটা লক্ষ্য স্থির করে রেখেছি ফিল্ম মেকার হবো । ফিল্ম বলতে শুধুমাত্র কাহিনীচিত্র নয় কাহিনীচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র দুই দিকেই আগ্রহ আছে তবে কাহিনীচিত্র যেহেতু অনেক ভাবনার বিষয় প্রস্তুতির বিষয় তাই আপাতত প্রামাণ্যচিত্র নিয়েই কাজ করব ।

পাওলো কোয়েলহোর সারা পৃথিবীতে সাড়া জাগানো বই “অলকেমিস্টে”বলেছিলেন – মানুষ যখন মন থেকে কিছু পেতে চায়,পুরা পৃথিবী তাকে সেটা পাইয়ে দিতে ফিসফাস করে।শুভঙ্কর শুভর সাথে পরিচিত হওয়ার পরেই পাওলো কোয়েলহোর উক্তির কিছুটা প্রমাণ পেয়েছিলাম।সত্যিই পৃথিবীর সবকিছু তার সফলতার জন্য ফিসফাস করছে।ঘুরিফিরি ফরিদপুর গ্রুপে চোখ রাখলেই সেটা স্পষ্ট চোখে পড়ে।

হাসতে হাসতেই হৃদয়ে জমানো কথা বলতে শুরু করেন।সেদিন শুভঙ্কর বলতেছিল,সব সময় নাকি ছোট ছোট স্বপ্ন আঁকি এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করি । বলতে পারেন এটাই আমার নেশা । বর্তমানে ঘুরি-ফিরি ফরিদপুর নিয়ে আছি । লক্ষ্য ফরিদপুরের সবগুলো দর্শনীয় স্থান এবং সংস্কৃতিকে অনলাইনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া । ঘুরি-ফিরি ফরিদপুর প্লাটফর্মকে দেশ ও বাইরের সর্ব স্তরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া ।আমার অনুপস্থিতিতে যদি এক ঝাক তরুণ প্রজন্ম প্লাটফর্মটিকে বহুদূর অব্দি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে মনে করব আমি সফল ,আমার প্রচেষ্টা সফল । জানি স্বপ্ন গুলো ছোট হলেও বাস্তবায়ন মোটেও সহজ নয় তবুও আপনাদের ভালবাসা পাশে থাকলে স্বপ্ন পূরণ হবেই ।

এভাবেই হাসি মাখা মুখে সহজ উত্তরে বর্ণনা করলেন তার স্বপ্নকে ।বোঝা গেল বর্তমানে ঘুরি-ফিরি ফরিদপুরের জার্নিটা তার চলার পথের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।আমাদের একটু নয় অনেকখানি গর্ব করতে ইচ্ছে হয় শুভংকরের হাতে গড়া প্লাটফর্ম এখন ওর একার নয় আমাদের ফরিদপুরের সকল মানুষের ।
ব্যক্তি জীবনে অনেকের সাথেই পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে,যাদের অনেকেই সামান্য কাজ করেই নিজেদেরকে জাহির করতে ব্যস্ত থাকে।ব্যতিক্রম যাদেরকে পেয়েছি শুভঙ্কর শুভ তাদের মধ্যে অন্যতম

আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় শুভঙ্কর শুভ জোনাকি পোকার ক্ষুদ্র আলো নয় যা সহজেই নিভে যাবে বরং শুভঙ্করকে মনে হয় আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত,যে নক্ষত্র ফরিদপুরের নামকে আরো আলোকিত করবে।

অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল স্বপ্নবাজ এই তরুণের জন্য ।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com