1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসের পাতায় ১০ নভেম্বর

  • সময় রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৬৮ বার দেখা হয়েছে

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩১৪তম (অধিবর্ষে ৩১৫তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি
১৮৫৯ : অস্ট্রিয়া ও সার্ডিনিয়ার মধ্যে জুরিখ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯০৮ : বিপ্লবী কানাইলাল দত্তের ফাঁসি কার্যকর হয়।
১৯৮৬ : বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ম সংশোধনী গৃহীত হয়। এতে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

জন্ম
১৪৮৩ : মার্টিন লুথার, জার্মান সন্ন্যাসী ও পুরোহিত প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কার নেতা।
১৬৯৭ : উইলিয়াম হগারথ, ইংরেজ চিত্রশিল্পী, চিত্রকর ও সমালোচক।
১৮৪৮ : স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ রাষ্ট্রগুরু।
১৮৬৮ : গিচিন ফুনাকোশি, জাপানি মার্শাল আর্টিস্ট, ‘জাপান কারাতে এসোসিয়েশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা।
১৮৯৩ : অমল হোম, বাঙালি সাংবাদিক এবং সাহিত্যিক।
১৯৩৯ : আমজাদ খান চৌধুরী, বাংলাদেশা ব্যবসায়ী, শিল্প উদ্যোক্তা এবং প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা।
১৯৫৪ : জয় গোস্বামী, প্রখ্যাত বাঙালি কবি এবং সাহিত্যিক।

মৃত্যু
১৮৯১ : ফরাসি কবি ও শিক্ষাবিদ জ্যঁ নিকোলা আর্তু র‍্যাঁবো।
১৯০৮ : ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী কানাইলাল দত্ত।
১৯০৯ : অস্ট্রেলিয়ান কবি ও শিক্ষাবিদ জর্জ এসেক্স ইভান্স।
১৯১৫ : বাংলাদেশের বিখ্যাত বাউল মরমি সাধক রাধারমন দত্ত।
১৯৩৮ : তুরস্কের জাতির পিতা, আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি কামাল আতাতুর্ক।
১৯৮৭ : বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন তথা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী নূর হোসেন।

রাধারমন দত্ত
রাধারমণ দত্ত ছিলেন একজন সাহিত্যিক, সাধক কবি, বৈষ্ণব বাউল, ধামালি নৃত্যের প্রবর্তক। সঙ্গীতানুরাগীদের কাছে তিনি রাধারমণ বলেই সমধিক পরিচিত। বাংলা লোকসঙ্গীতের পুরোধা লোককবি ছিলেন তিনি। ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’ রাধারমনের জনপ্রিয় একটি গান।
জন্মগ্রহণ করেন ১৮৩৩ সালে সিলেটের জগন্নাথপুরে। বাবা রাধামাধব ছিলেন পণ্ডিত ও অশেষ গুণের অধিকারী। বাবার সঙ্গীত ও সাহিত্যসাধনা রাধারমণকে প্রভাবিত করে। কালক্রমে তিনি স্বভাবকবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

তিন হাজারেরও বেশি গান রচনা করেছেন রাধারমণ। তাঁর গানের বেশকিছু গানের বই বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। তার গানে প্রার্থনা, আত্মতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব ও পরমাত্মাবিষয়ক সঙ্গীত ছাড়াও স্বদেশপ্রেমও রয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ব্যতিক্রম হচ্ছে ধামাইল গান। ধামাইল গানের শিল্পীরা তালে তালে করতালির মাধ্যমে চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে এই গান পরিবেশন করে থাকেন। তাদের মুখে মুখে থাকে গানের কলি আর ছন্দে ছন্দে ফেলেন পা। হাতের মধ্যেও থাকে তাল, গতি ও মুদ্রা। ঢোল, করতাল প্রভৃতি এসব গানের বাদ্যযন্ত্র। ধামাইল গান এখন এপার বাংলা, ওপার বাংলা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে।

রাধারমনের সৃষ্ট গানের মধ্যে রাধাকৃষ্ণের প্রেম-বিরহ আর ধামাইল গানগুলোই পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। ‘কলঙ্কিনী রাধা’, ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’, ‘আমারে আসিবার কথা কইয়া’, ‘আমার বন্ধু দয়াময়’, ‘আমি রব না রব না গৃহে’, ‘শ্যাম কালিয়া প্রাণ বন্ধুরে’, ‘মনে নাই গো আমারে বন্ধুয়ার মনে নাই’, ‘বংশী বাজায় কে গো সখী’, ‘আমার গলার হার’, ‘বিনোদিনী গো তোর’, ‘দেহতরী ছাইড়া দিলাম’, ‘কার লাগিয়া গাঁথো রে সখী’ প্রভৃতি গান ছাড়াও বৃহত্তর সিলেট, আসাম, শিলিগুড়ি অঞ্চলে ধামাইল গানগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

ভারতের কলকাতার বিখ্যাত ব্যান্ড ‘দোহার’ রাধারমণের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার গানগুলো তুলে ধরছে, ছড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্নভাবে। এমনকি তাজিকিস্তানের বিখ্যাত শিল্পী নইজা কারুমাতুল্ল ‘ভ্রমর কইও গিয়া’ গানটি মূল সুরে তাদের ভাষায় গেয়ে বিশ্বকে চমকে দিলেও রাধারমণ ভক্ত বা দেশের অনেকেই তা জানেন না এখনও। তাজিক ভাষায় গানটির প্রথম দুটি চরণ এভাবেই গাওয়া হয় –

‘খুজই, খুজই, খুজ, বারান্দাই, সিকাআস্তাবলে
রুই দোস্তয়া কিপরে ফিতা দুমুত মারমুদা…’

সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে আমরা অনেকেই তাজিক শিল্পীর এই পরিবেশনা দেখে শুধু মুগ্ধ নয়, দেশের এই গীতিকবিকে নিয়ে গর্ববোধও করি।

রাধারমণের গানে শব্দপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা নয়, বরং সমাজের সম্প্রীতিকে দৃঢ় করতে সচেষ্ট। আল্লাহ-ঈশ্বরে যেমন তিনি পার্থক্য দেখেননি আবার গুরু ও মুর্শিদ শব্দের পার্থক্যও দেখেননি। রাধারমণ দত্তের গানের চর্চা বাড়াতে তার জন্মভিটায় রাধারমণ কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

রাধারমন দত্ত ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১০ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী তাকে দাহ না করে সহজিয়া মতাদর্শে সমাধিস্থ করা হয়। জগন্নাথপুরের কেশবপুরে তাঁর নামে একটি সমাধিমন্দির রয়েছে।

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com