গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৬১তম (অধিবর্ষে ২৬২তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
ঘটনাবলি
১৮৫১ : ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৯২২ : কলকাতার রঙ্গমঞ্চে ‘শারদোৎসব’-এ রবীন্দ্রনাথের অভিনয় দেখা যায়।
১৯৮৮ : সামরিক অভ্যুত্থানের পর ‘বার্মা’ রাষ্ট্রের নাম হয় ‘মিয়ানমার’।
জন্ম
১৭০৯ : ড. স্যামুয়েল জনসন, লেখক ও অভিধান প্রণেতা।
১৮৬৯ : জগদানন্দ রায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক।
১৯০৭ : এডউইন মাটিসন ম্যাকমিলান, নোবেলজয়ী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী।
১৯৫০ : শাবানা আজমি, ভারতীয় গুণী অভিনেত্রী।
মৃত্যু
১৮৯৯ : বাঙালি চিন্তাবিদ এবং সাহিত্যিক রাজনারায়ণ বসু।
১৯৫৬ : বাংলাদেশি সাহিত্যিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কবি ও লেখক। মুক্তবুদ্ধি চর্চা আন্দোলনের তিনি অন্যতম পুরোধা। পরিশীলিত গদ্যের রচয়িতা হিসেবে বাংলা সাহিত্যে তিনি ব্যাপক পরিচিত।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৩ সালে নোয়াখালী জেলার কাঞ্চনপুরে। বাবা সৈয়দ আবদুল মজিদ ও মায়ের নাম ফতেমা খাতুন। কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। আইএ ও বিএ পাস করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এবং ১৯৪৩ সালে প্রাইভেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাস করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুলে একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে লেকচারার পদে যোগদান করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর চট্টগ্রাম কলেজে যোগদান করে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী কিশোর বয়স থেকেই সাহিত্যে আগ্রহী হয়ে উঠেন। প্রথমদিকে তিনি কবিতা লিখতেন। বাঙালি মুসলমান সমাজের অগ্রগতির আন্দোলন হিসেবে পরিচিত ‘বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের’ সাথে যুক্ত ছিলেন। ওই আন্দোলনে কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদির প্রমুখের সহযোগী ছিলেন। তিনি ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনীতে মুক্তবুদ্ধি, মননশীলতা, মানবতার ছাপ পাওয়া যায়। ১৯২৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ এবং এর মুখপত্র ‘শিখা’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি।
মোতাহের হোসেন রবীন্দ্রনাথ ও বার্ট্রান্ড রাসেলের জীবনদর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তবে তার মৌলিক রচনাগুলো স্বকীয়তায় ভাস্বর। প্রচুর প্রবন্ধ লিখেছেন তিনি। তার রচিত উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘সংস্কৃতি কথা’ (১৯৫৮)। এছাড়াও ‘সুখ’ নামে ভাবানুবাদ করেছেন বার্ট্রান্ড রাসেলের ‘কনকোয়েস্ট অব হ্যাপিনেস’ গ্রন্থটি। ক্লাইভ বেলের ‘সিভিলাইজেশন’-এর অনুসরণে লিখেছেন ‘সভ্যতা’। তিনটি গ্রন্থই তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। সৈয়দ আবুল মকসুদের সম্পাদনায় ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি তার প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত সমস্ত রচনা রচনাবলি আকারে প্রকাশ করে।
মোতাহার হোসেন চৌধুরীর রচনায় সংস্কৃতি, ধর্ম, মানবতাবোধ ও মানুষের জীবনাচরণের মৌলিক বিষয়গুলো সংজ্ঞায়িত ও উন্মোচিত করতে চেয়েছেন এবং বিচিত্র ও সুন্দরভাবে বাঁচার মধ্যে মহত্তম জীবনের সন্ধান করেছেন।
মোতাহার হোসেন ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত