1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসের পাতায় ১ ফেব্রুয়ারি

  • সময় রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ১৩২ বার দেখা হয়েছে

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩২তম দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি
১৮৭১ : ভারতে বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষয়িত্রীর অভাব দূর করার জন্যে ভারত সংস্কার সভার উদ্যোগে কলকাতার পটলডাঙায় একটি শিক্ষয়িত্রী বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।
১৮৮৪ : অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির ১ম খণ্ড প্রকাশিত।
১৯৪৬ : নরওয়ের অধিবাসী ট্রিগভে হাভডেন লি জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রপুঞ্জের ১ম মহাসচিবের পদে আসীন হন।
১৯৬৫ : স্যার উইনস্টন চার্চিলের সম্মানে কানাডার ল্যাব্রাডরে অবস্থিত হ্যামিল্টন রিভারের নামকরণ করা হয় চার্চিল রিভার।
১৯৭২ : প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় সেনেগাল।

জন্ম
১৯০৫ : এমিলিও জিনো সেগরে, নোবেলজয়ী ইতালীয়-মার্কিন পদার্থবিদ ও অধিবিদ্যাবিৎ।
১৯০৭ : গোবিন্দ চন্দ্র দেব (জি সি দেব), বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী।
১৯২২ : শক্তিপদ রাজগুরু, ভারতীয় বাঙালি লেখক ও ঔপন্যাসিক।
১৯৩৩ : আতাউর রহমান খান খাদিম, বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ।

মৃত্যু
১৯৪৮ : ভারতীয় বাঙালি কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী।
১৯৫৮ : নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ক্লিনটন জোসেফ ডেভিসন।
১৯৭৬ : নোবেলজয়ী জার্মান পদার্থ বিজ্ঞানী ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ।
১৯৮২ : ভারতের সাঁওতালি ভাষার অলচিকি লিপির বর্ণমালার আবিষ্কর্তা পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু।
১৯৮৩ : ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্রাভিনেত্রী পদ্মা দেবী।
২০০৩ : প্রথম ভারতীয় মহিলা মহাকাশচারী ও প্রকৌশলী কল্পনা চাওলা।

জি সি দেব
গোবিন্দ চন্দ্র দেব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। প্রকৃত নাম গোবিন্দচন্দ্র দেবপুরকায়স্থ। তবে ক্ষণজন্মা এই শিক্ষাবিদ জি সি দেব নামেই সমধিক পরিচিত।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার গ্রাম লাউতাতে। তাঁর পূর্বসূরীগণ ছিলেন উচ্চগোত্রীয় ব্রাহ্মণ; যারা গুজরাট থেকে সিলেট এসেছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর জি সি দেব স্থানীয় মিশনারীদের তত্ত্বাবধানে বড় হন।

শৈশবেই তিনি মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিয়ানীবাজার উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়, কলকাতার রিপন কলেজ, সংস্কৃত কলেজে পড়াশুনা করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবনের শুরু কলকাতা রিপন কলেজের শিক্ষক হিসেবে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন সময়ে রিপন কলেজ কলকাতা থেকে দিনাজপুরে স্থানান্তরিত হলে তিনিও কর্মসূত্রে দিনাজপুর আসেন। রিপন কলেজ পুনরায় কলকাতায় স্থানান্তরের সময় তিনি সুরেন্দ্রনাথ কলেজের (বর্তমানে দিনাজপুর সরকারি কলেজ) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেব যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালের জুলাইয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি পূর্বতন ঢাকা হলের (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল) হাউস টিউটর হিসেবে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন, পরবর্তীতে একই বছর তিনি জগন্নাথ হলের প্রভোস্টের দ্বায়িত্ব পান। ড. দেব ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়্যারম্যানের দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৭ সালে প্রফেসর পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

ষাটের দশকের শেষের দিকে ড. দেব পেনসেলভেনিয়ার wilkes-Barre কলেজে শিক্ষকতা করেন। স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সেখানে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং সেখানে তার গুণমুগ্ধরা তার মানবিক দর্শন প্রচারের লক্ষ্যে The Govinda Dev Foundation for World Brotherhood প্রতিষ্ঠা করে।

ড. দেব ১৯৬০ থেকে আমৃত্যু পাকিস্তান দর্শন সমিতির নির্বাচিত সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করে গেছেন। এছাড়া ড. দেব তাঁর জীবনঘনিষ্ঠ মানবিক দর্শন প্রচারের জন্যে সমস্ত সম্পত্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করে গেছেন; যা দ্বারা পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন কেন্দ্র (ডিসিপিএস) প্রতিষ্ঠিত হয়।

গোবিন্দ চন্দ্র দেবের মোট গ্রন্থ নয়টি, যার মধ্যে দুটি বাংলায় এবং সাতটি ইংরেজিতে৷ বইগুলোর মধ্যে আদর্শবাদ এবং অগ্রগতি, আদর্শবাদ: একটি নতুন প্রতিরক্ষা এবং একটি নতুন প্রয়োগ, আমার জীবন দর্শন, সাধারণ ব্যক্তির আকাঙ্ক্ষা, বিবেকানন্দের দর্শন এবং মানুষের ভবিষ্যত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। মৃত্যুর পরে প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে Parables of the East (পূর্বের উপমা), My American Experience (আমার মার্কিন অভিজ্ঞতা) ইত্যাদি।

জি সি দেব এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক’ ও ‘হেমচন্দ্র মুখার্জি রৌপ্যপদক’, ‘পূর্ব পাকিস্তান শিক্ষিত সমাজ’ কর্তৃক ১৯৬১ সালে ‘দর্শন সাগর’ উপাধি, মরণোত্তর ‘একুশে পদক’ (১৯৮৫) এবং মরণোত্তর ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০০৮’ লাভ করেন।

ড. জি সি দেবের পালিতা কন্যা রোকেয়া বেগম আর তার স্বামী তাঁরই বাসায় থাকতেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সারারাত ধরেই তাঁর বাড়ির উপর গুলিবর্ষিত হয়েছে। ভোরের দিকে তিনি মেয়েকে বললেন: মা তুমি একটু চা করো। আমি ততক্ষণে ভগবানের একটু নাম করি। এ সময় দরজা ভেঙে পাকিস্তানি সেনারা ঘরে প্রবেশ করে। ড. দেব দু’হাত ওপরে তুলে ‘গুড সেন্স গুড সেন্স’ বলে তাদের নিবৃত্ত করতে চেয়েছেন। কিন্তু হাত কয়েক ব্যবধানে থেকে সেনাসদস্যরা ব্রাশ ফায়ার করে গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও রোকেয়া বেগমের স্বামীকে হত্যা করে। রোকেয়া বেগম আকস্মিক আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডে অচেতন হয়ে পড়ায় বেঁচে যান। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জি সি দেব।

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com