গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৬৭তম (অধিবর্ষে ২৬৮তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
ঘটনাবলি
১৯৪৮ : হোন্ডা মোটরস কোম্পানির প্রতিষ্ঠা।
১৯৬০ : আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতি (আইডিএ) গঠিত হয়।
১৯৭৩ : বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় নাইজার।
২০০৭ : ভারতীয় ক্রিকেট দল টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে পরাজিত করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়।
জন্ম
১৫৩৪ : গুরু রামদাস, শিখধর্মের দশ শিখ গুরুর চতুর্থ গুরু।
১৮৯৬ : এফ. স্কট ফিটজেরাল্ড, মার্কিন কথাসাহিত্যিক।
১৮৯৮ : হাওয়ার্ড ফ্লোরি, নোবেলজয়ী অস্ট্রেলীয় জীববিজ্ঞানী।
১৯০৭ : সুধীররঞ্জন খাস্তগীর, বঙ্গীয় শিল্পকলার ভারতীয় চিত্রকর।
১৯৫৯ : মিশুক মুনীর, বাংলাদেশ, টেলিভিশন সাংবাদিকতার রূপকার, বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহক।
মৃত্যু
১৯২৫ : প্রখ্যাত ‘কল্লোল’ পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী সম্পাদক গোকুলচন্দ্র নাগ।
২০১০ : বাঙালি অধ্যাপক, সমালোচক ও প্রাবন্ধিক ক্ষেত্র গুপ্ত।
২০২০ : প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি পরমাণু বিজ্ঞানী শেখর বসু।
অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্ত
ক্ষেত্র গুপ্ত ছিলেন একজন বাঙালি অধ্যাপক, সমালোচক ও প্রাবন্ধিক। তাঁর রচিত বহু গ্রন্থ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩০ সালের ১৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের বরিশালের পিরোজপুরে। বাবা মৃন্ময় গুপ্ত ও মায়ের নাম সরযূবালা দেবী।
ছোটবেলা থেকেই ক্ষেত্র গুপ্ত পড়ালেখায় ছিলেন মেধাবী। পিরোজপুর সরকারি বিদ্যালয় থেকে ডিভিশন্যাল বৃত্তি পেয়ে ম্যাট্রিক পাস করেন। দেশভাগের পর বাবার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। প্রায় সব ক’টি পত্রেই সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ৬টি স্বর্ণপদক ও ১টি রৌপ্যপদক লাভ করেন।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু। পরে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সিটি কলেজে যোগ দেন। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে লেকচারার পরে রিডার এবং বিদ্যাসাগর অধ্যাপক হিসেবে বাংলা বিভাগের প্রধান হন। এছাড়াও তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেছেন। কিছুদিন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন।
অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্ত মূলত ছিলেন অন্যতম সাহিত্য সমালোচক। সম্পূর্ণ নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে বঙ্কিমচন্দ্র, মধুসূদন, তারাশঙ্কর, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র প্রমুখ বিখ্যাত সাহিত্যিকের রচনাসমূহের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণে যে বিশ্লেষণ করেছেন তাতে বাংলা সাহিত্য সমালোচনায় এক নতুন ধারা প্রবর্তিত হয়ছে। তাঁর এমন প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা শতাধিক। ‘মধুসূদনের কবি-আত্মা ও কাব্যশিল্প’ শীর্ষক প্রবন্ধ রচনা করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি লাভ করেন। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস: শিল্পরীতি’ গ্রন্থের জন্যে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট উপাধি লাভ করেন।
এছাড়াও সাহিত্যকীর্তির জন্যে তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে ‘সুকুমার সেন স্বর্ণপদক’, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘বিদ্যাসাগর পুরস্কার’, বাংলাদেশের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নজরুল স্মারক পুরস্কার’, রেনেসাঁস একাডেমির ‘মধুসূদন পুরস্কার’ এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আশুতোষ ভট্টাচার্য লোকসাহিত্য পুরস্কার’ ইত্যাদি লাভ করেন।
অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্ত ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর ৮০ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত