ঘটনাবলি
১৮৭১ : জার্মানির চিকিৎসক হানসেন কুষ্ঠ রোগের জীবাণু আবিষ্কার করেন।
১৮৯০ : আমেরিকান পর্যটক নেলি ব্লাই ৭২ দিনে তাঁর বিশ্বভ্রমণ শেষ করেন।
১৯১৫ : আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল ইউএস ট্রান্সকন্টিনেন্টাল টেলিফোন সার্ভিস উদ্বোধন করেন। নিউ ইয়র্ক থেকে কথা বলেন সানফ্রান্সিসকোতে টমাস ওয়াস্টনের সঙ্গে।
১৯১৯ : লিগ অব নেশন্স প্রতিষ্ঠা চূড়ান্ত হয়।
১৯৬৩ : জুমার নামাজের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বায়তুল মোকারম মসজিদে নামাজ পড়া হয়।
জন্ম
১৭৫৯ : রবার্ট বার্নস, স্কটিশ কবি ও গীতিকার।
১৮২৪ : মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বাঙালি কবি ও নাট্যকার।
১৮৫৬ : অশ্বিনীকুমার দত্ত, বাঙালি রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও লেখক।
১৮৭৪ : সমারসেট মম, সাহিত্যিক ও নাট্যকার।
১৮৮২ : ভার্জিনিয়া উলফ, বিখ্যাত ইংরেজ নারী কথাশিল্পী।
১৯১৭ : ইলিয়া প্রিগোগিনে, নোবেলজয়ী রাশিয়ান রসায়নবিদ।
১৯৪৯ : স্যার পল ম্যাক্সিম নার্স, নোবেলজয়ী ইংরেজ জেনেটিসিস্ট ও জীববিজ্ঞানী।
মৃত্যু
১৮৬৮ : রামগোপাল ঘোষ, ইয়ং বেঙ্গল গ্রুপের নেতা, সফল ব্যবসায়ী, বাগ্মী ও সমাজ সংস্কারক।
১৯৫৭ : আমাশয় রোগের জীবাণু আবিষ্কারক জাপানি জীবাণুবিদ শিগা কিয়োশি মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৭৯ : চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণের অন্যতম নায়ক ও বিপ্লবী অনন্ত সিং।
২০০৫ : আমেরিকান স্থপতি ফিলিপ জনসন।
২০২১ : বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম নৌপ্রধান ক্যাপ্টেন নুরুল হক।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ, বাংলায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক, সনেট রচয়িতা। উনবিংশ শতাব্দির বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার তথা বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। বাংলা সাহিত্যে তিনি ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত।
জন্মগ্রহণ করেন ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্থ পরিবারে। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত এবং মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী।
প্রাথমিক শিক্ষার শুরু মা জাহ্নবী দেবীর কাছে। তেরো বছর বয়সে মদুসূদন দত্ত কলকাতা যান এবং স্থানীয় একটি স্কুলে কিছুদিন পড়াশোনার পর তিনি সেসময়কার হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। তিনি বাংলা, ফরাসি ও সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষালাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতার বিশপস কলেজে অধ্যয়ন করেন। সেখানে তিনি গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখেন।পরবর্তীতে আইনশাস্ত্রে পড়ার জন্যে তিনি ইংল্যান্ড যান।
পাশ্চাত্যের প্রতি আকর্ষিত হয়ে মধুসূদন ১৮৪৩ সালে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন এবং ‘মাইকেল’ উপাধি ধারণ করেন। তিনি ইংরেজদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে এটি রচনা করলে গ্রন্থটি তৎকালীন ইংরেজ সাহিত্যিকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। মধুসূদন থাকলে তাদের সাহিত্যকর্ম স্থান পাবে না এই সংশয় তাদের মধ্যে প্রকটভাবে দানা বাঁধতে থাকে। ইংরেজি সাহিত্যে তার কীর্তির যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় তিনি মনঃক্ষুণ্ন হয়ে পড়েন। তখনই বুঝতে পারেন নিজ স্বদেশ ও শেকড়ের মর্ম।
ইংরেজি সাহিত্য থেকে ছিটকে পড়ে বন্ধু শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শে মধুসূদন বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন এবং বাংলাকে উপহার দেন বিখ্যাত সব সাহিত্যকর্ম। মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য। এটি বাংলা কাব্য সাহিত্যে একক অনন্য সৃষ্টি। বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্যেও তিনি অসামান্য অবদান রাখেন।
এ মহাকবির জন্মের কারণেই সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ নদ জগৎবিখ্যাত। কালের প্রবাহে কপোতাক্ষ নদের যৌবন বিলীন হলেও মাইকেলের কবিতার কপোতাক্ষ নদ যুগে যুগে বয়ে চলেছে। বিদেশ থাকাকালীন তিনি মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে নতুন ও একান্ত আপনভাবে দেখতে ও বুঝতে পারেন, যার চমৎকার প্রকাশ ঘটেছে তাঁর ‘বঙ্গভাষা’, ‘কপোতাক্ষ নদ’ ইত্যাদি সনেটে। তাঁর এই সনেটগুলো ১৮৬৬ সালে চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী নামে প্রকাশিত হয়।
মাইকেল মধুসূদন ১৮৭৩ সালে ২৯ জুন কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত