গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৬৮তম (অধিবর্ষে ২৬৯তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
ঘটনাবলি
১৪৯৩ : ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৭টি জাহাজ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সমুদ্রযাত্রা করেন।
১৬৩৯ : আমেরিকায় প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়।
১৮৯৭ : প্রথম ব্রিটিশ বাস সার্ভিস চালু হয়।
১৯৬৯ : ওআইসি-এর চার্টার স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৭২ : বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভ্যাটিকান সিটি।
১৯৭৪ : জাতিসংঘের ২৯তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দেন।
জন্ম
১৮৬৬ : টমাস হান্ট মর্গান, মার্কিন বংশগতিবিদ ও ভ্রূনতত্ত্ববিদ।
১৮৯৭ : উইলিয়াম ফকনার, নোবেলজয়ী মার্কিন কথাসাহিত্যিক।
১৯২০ : সতীশ ধাওয়ান, ভারতীয় গণিতজ্ঞ এবং বৈমানিক প্রকৌশলী।
১৯২৫ : স্যামসন এইচ চৌধুরী, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি।
১৯৫০ : জাফর ইকবাল, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা ও গায়ক।
১৯৬৫ : মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, বাংলাদেশি ক্রিকেটার।
মৃত্যু
১৯৬২ : চট্টগ্রামে দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার।
১৯৬৯ : বিখ্যাত বাঙালি চিত্রপরিচালক, অভিনেতা এবং নাট্যব্যক্তিত্ব মধু বসু, আসল নাম সুকুমার বসু।
২০০১ : বাংলাদেশি সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক সমর দাস।
২০২১ : ভারতের প্রখ্যাত নারীবাদী লেখক, প্রশিক্ষক এবং অধিকারকর্মী কমলা ভাসিন।
দিবস
ওআইসি প্রতিষ্ঠা দিবস।
বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস।
সুরকার সমর দাস
সমর দাস একজন বিখ্যাত বাংলাদেশি সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে দুই হাজারের বেশি গানের সুর করেছেন। খ্যাতিমান গিটারবাদক হিসেবেও তিনি পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর সুর করা ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ কিংবা ‘নোঙ্গর তোলো তোলো’ গান এদেশের মানুষের জন্যে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে এক সঙ্গীতশিল্পী পরিবারে। বাবা জিতেন্দ্রনাথ দাস ও মায়ের নাম কমলিনী দাস। পারিবারিক গণ্ডিতেই তাঁর সঙ্গীত শিক্ষার শুরু। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তদানীন্তন অল ইন্ডিয়া রেডিওর ঢাকা কেন্দ্রে বংশীবাদক হিসেবে সঙ্গীত জীবনের সূচনা। তরুণ বয়সেই গিটার ও পিয়ানো বাজানোর জন্যে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
সমর দাস ১৯৬১ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুজিবনগর থেকে পরিচালিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও প্রধান পরিচালক ছিলেন। এ সময় বহু গানে সুর দেন তিনি। তাঁর সুর করা গান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী ও দেশবাসীকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে।
কলকাতার এইচএমভি কোম্পানি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ নামে একটি লং প্লে রেকর্ড প্রকাশ করে। এতে ছিল বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ২৬টি গান। সমর দাস ছিলেন এই রেকর্ডের সঙ্গীত পরিচালক। নবগঠিত বাংলাদেশ বেতারের সিগনেচার টিউন বা সূচনা সঙ্গীত সমর দাস কম্পোজ করেছিলেন।
বাংলা ছায়াছবির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও সমর দাস খ্যাতি লাভ করেছেন। তিনি ‘মুখ ও মুখোশ’, ‘লটারি’, ‘মাটির পাহাড়’, ‘আসিয়া’, ‘গৌরী’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘রাজা এলো শহরে’ প্রভৃতি ছবির সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ‘নদীর সন্তান’, ‘নবারুণ’, ‘বীরাঙ্গনা সখিনা’, ‘সোনার সবুজ গাঁয়ে’ নৃত্যনাট্যেরও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ ও ১৯৯৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ গেমস সূচনা সঙ্গীতের সুরারোপ তিনিই করেছিলেন।
শিল্পচর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্যে তাকে ১৯৭৯ সালে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার হিসেবে পরিচিত ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। একুশে পদক’সহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
সমর দাস ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা ওয়ারীর খ্রিষ্টান কবরস্থানে তাঁর সমাধি রয়েছে।
সূত্র: সংগৃহীত