১৯৩৬ : কলকাতায় বাংলা ভাষায় মুসলমানদের প্রথম দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক আজাদ’ প্রকাশিত হয়।
১৯৬৬ : বিশিষ্ট সাঁতারু মিহির সেন পানামা খাল অতিক্রম করেন।
১৭৯৫ : জন কিটস, ইংরেজি সাহিত্যের একজন রোমান্টিক কবি।
১৮২৮ : জোসেফ শোয়ান, রসায়নবিদ ও বিদ্যুত বাতির উদ্ভাবক।
১৮৩৫ : এডলফ ভন বাইয়ের, নোবেলবিজয়ী জার্মান রসায়নবিদ।
১৮৭৫ : সর্দার বল্লভভাই পটেল, ভারতীয় পণ্ডিত ও জাতীয়তাবাদী নেতা, তাকে ভারতের লৌহমানব বলা হয়।
১৯২৫ : জন পোপল, নোবেল বিজয়ী ইংরেজ রসায়নবিদ।
১৯৭৫ : বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, লোকসঙ্গীত শিল্পী শচীন দেববর্মণ।
১৯৮৪ : ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
১৯৮৬ : নোবেলজয়ী আমেরিকান পদার্থবিদ ও রসায়নবিদ রবার্ট সেন্ডারসন মুল্লিকেন।
২০২০ : স্কটিশ অভিনেতা, ‘জেমস বন্ড’খ্যাত অভিনেতা শন কনারি।
শচীন দেববর্মণ বিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় বাংলা ও হিন্দি গানের কিংবদন্তিতুল্য ও জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, গায়ক ও লোকসঙ্গীত শিল্পী। এস ডি বর্মণ নামেও তাকে উল্লেখ করা হয়। কিছুটা অনুনাসিক কণ্ঠস্বরের জন্যে তিনি তার শ্রোতাদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। শত বছরেও তার গান শ্রোতাদের কাছে সমান জনপ্রিয়। শুধুমাত্র সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে নয়, গীতিকার হিসেবেও তিনি সার্থক।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর কুমিল্লার এক সঙ্গীতশিল্পী পরিবারে। বাবা সুগায়ক নবদ্বীপচন্দ্র দেববাহাদুর ছিলেন ত্রিপুরা রাজবংশের সন্তান। আগরতলার বাসিন্দা হলেও শচীন দেবের শৈশব কেটেছে কুমিল্লায় এবং শেষ জীবন মুম্বাইতে। স্ত্রী মীরা দেবী এবং একমাত্র ছেলে রাহুল দেববর্মনও মুম্বাই চিত্রজগতের প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পী।
শৈশব থেকেই লোকসঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বহু লোকসঙ্গীত সংগ্রহ করেন এবং রাগসঙ্গীতের সংমিশ্রণে সুরারোপ করে নতুন সুরজাল সৃষ্টি করেন। রাগসঙ্গীতে তার ভালো দখল ছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। এরপর ত্রিপুরার রাজদরবারে কিছুদিন চাকরিও করেন। পরে চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ওস্তাদ বাদল খাঁ, আলাউদ্দিন খাঁ, ফৈয়াজ খাঁ, আব্দুল করিম খাঁ, ভীষ্মদেব, কানা কৃষ্ণ প্রমুখ সঙ্গীত বিশারদের কাছে রাগসঙ্গীতে আনুষ্ঠানিক তালিম নেন।
শচীন দেব প্রথম গান করেন ১৯২৩ সালে কলকাতা বেতারে এবং ১৯৩২ সালে তাঁর প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড বের হয়। তিনি নজরুল সঙ্গীতও রেকর্ড করেন। এরপর তার বহুসংখ্যক বাংলা ও হিন্দি গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গান হলো: ‘যদি দখিনা পবন’ (রাগপ্রধান), ‘প্রেমের সমাধি তীরে’ (কাব্যগীতি), ‘নিশীথে যাইও ফুলবনে’ (পল্লিগীতি), ‘বধুঁগো এই মধুমাস’ (পল্লিগীতি), ‘ওরে সুজন নাইয়া’ (পল্লিগীতি) প্রভৃতি।
বহু বাংলা গানে সুর দিয়েছেন। ১৯৩৭ সাল থেকে পরপর কয়েকটি বাংলা ছায়াছবিতে তিনি সঙ্গীত পরিচালনা করেন। এক্ষেত্রে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ছায়াছবি হলো: রাজগী, ছদ্মবেশী, জীবন-সঙ্গিনী, মাটির ঘর ইত্যাদি।
শচীন দেব ১৯৪৪ সাল থেকে মুম্বাই-এ বসবাস করেন এবং আশিটির মতো হিন্দি চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করে চিত্রজগতে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী হন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনেও উচ্চ পদ অলঙ্কৃত করেন এবং বহু সংগঠন কর্তৃক সম্মানিত হন। শচীন দেব একজন বিশিষ্ট ক্রীড়ামোদীও ছিলেন। স্বীয় সঙ্গীতজীবনের বর্ণনা দিয়ে তিনি সরগমের নিখাদ নামক একখানি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন।
১৯৩৪ সালে নিখিল ভারত সঙ্গীত সম্মিলনে গান গেয়ে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে সঙ্গীত-নাটক আকাদেমি ও এশিয়ান ফিল্ম সোসাইটি (লন্ডন) এবং ১৯৬৩ সালে ত্রিপুরা ললিতকলা কেন্দ্র তাকে অভিনন্দিত করে। ১৯৬৯ সালে তিনি ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ উপাধি এবং চলচ্চিত্রে হিন্দি গানের নেপথ্য গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবেও বেশ কয়েকবার ফিল্মফেয়ার ও বিএফজেএ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। অনেক সাংস্কৃতিক দলের বিশিষ্ট শিল্পী হিসেবে তিনি ব্রিটেন, রাশিয়া ও ফিনল্যান্ডসহ বহু দেশ ভ্রমণ করেন। ২০০৭ সালে শচীন দেববর্মণ স্মরণে ডাকটিকিট (Rs.১৫ সম মূল্যের) প্রকাশ করা হয়।
১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর মুম্বাইয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত
নতুন মন্তব্য