প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি রম্যলেখক শিবরাম চক্রবর্তী এর মৃত্যুদিন
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৪০তম (অধিবর্ষে ২৪১তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৮৪৫ : সায়েন্টিফিক আমেরিকানের প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ : মুক্তিফৌজ ও মুক্তিযোদ্ধাদের একীভূত করে মুক্তিবাহিনী নামকরণের সিদ্ধান্ত।
১৮৪৯ : জোহান ভল্ফাগং ভন গেটে, জার্মানির খ্যাতনামা লেখক ও কবি।
১৮৫৫ : স্বর্ণকুমারী দেবী, বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতকার ও সমাজ সংস্কারক।
১৮৭৮ : জর্জ এইচ. উইপেল, একজন মার্কিন চিকিৎসক এবং রোগতত্ত্ববিদ।
১৯০৫ : দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায়, বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক।
১৯৪৫ : লতিফুর রহমান, বাংলাদেশি শিল্পপতি, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান।
১৯৮০ : প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি রম্যলেখক শিবরাম চক্রবর্তী।
১৯৯০ : বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের কৃতী অভিনেত্রী সুমিত্রা দেবী।
১৯৯২ : রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট বাঙালি আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য।
২০১৬ : বাংলাদেশি কবি ও লেখক শহীদ কাদরী।
শিবরাম চক্রবর্তী ছিলেন প্রখ্যাত বাঙালি রম্যলেখক। তার অমর সৃষ্টি ‘হর্ষবর্ধন গোবর্ধনের গল্প’ যা আজও পাঠকমহলে সমানভাবে সমাদৃত। রম্যলেখকের কথা অনুযায়ী, তিনি লেখক হয়েছেন পেটের দায়ে।
তার কথায়, ‘গায়ের জোর নেই বলে রিকশা টানতে পারি না তার বদলে কলম টানি। কলমের ওপর টান আমার এইটুকুই।’ এমনই হাস্যরসে তার অসংখ্য লেখা বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের জন্যে সুখপাঠ্যের।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর কলকাতায় মাতুলালয়ে। বিদ্যালয়ে পড়তে পড়তেই তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন এবং দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সংস্পর্শে আসেন।
এজন্যে তাকে কারাবাসও করতে হয়। এই সময় তিনি বিজলী ও ফরওয়ার্ড পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ছিলেন যুগান্তর পত্রিকার প্রকাশক।
তার জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই কেটেছে উত্তর কলকাতার মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের একটি মেসবাড়িতে। তিনি অনাড়ম্বর জীবন কাটাতেন। শেষ জীবনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার জন্যে মাসোহারার ব্যবস্থা করেছিলেন।
সাহিত্য-জীবনের শুরুটা হয় কবিতা রচনার মাধ্যমে। প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ভারতী পত্রিকায়। ১৯২৯ সালে প্রকাশিত প্রথম দুটি বই ‘মানুষ’ ও ‘চুম্বন’। এরপর অজস্র লেখা লিখেছেন।
প্রবন্ধ, নাটক এবং তুলনাহীন অজস্র হাসির গল্প। লিখেছেন ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা ও ভালবাসা পৃথিবী ঈশ্বর নামের অনন্য স্মৃতিকথামূূলক দূটি বই। তার সর্বাধিক আলোচিত উপন্যাস ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’।
লিখেছেন ‘বাড়ি থেকে পালিয়ের পর’, ‘কলকাতার হালচাল’, ‘বর্মার মামা’, মনের মত বৌ, মস্কো বনাম পন্ডিচেরীসহ আরও বেশ কিছু বই। প্রবন্ধের বই : মস্কো বনাম পন্ডিচেরি ও ফানুস ফাটাই। নাটকের গ্রন্থ : যখন তারা কথা বলবে।
অসংখ্য গল্প লিখেছেন। হাতির সঙ্গে হাতাহাতি, ঘোড়ার সঙ্গে ঘোরাঘুরি, অঙ্ক সাহিত্যের যোগফল ইত্যাদি নামের মতোই রম্যে ভরা তার লেখা। প্রবন্ধ, গল্পের পাশাপাশি তিনি কিছু রম্য গোয়েন্দাকাহিনিও লিখেছিলেন। তার গোয়েন্দার নাম কল্কেকাশি।
বিচিত্র জীবন কাটিয়েছেন তিনি। রাজনীতি করেছেন, জেল খেটেছেন, রাস্তায় কাগজ ফেরি করেছেন, ফুটপাথে রাত্রিবাস করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন, আজীবন মেস-জীবন যাপন করেছেন। বিয়ে করেন নি।
মৃত্যুর ৫ মিনিট আগেও তার রম্য চলছিল যেন। ‘ফার্স্টক্লাস’ আছি বলে চলে গিয়েছিলেন শিবরাম। ১৯৮০ সালের ২৮ আগস্ট কলকাতায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত