1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন

ইতিহাসে ডিসেম্বর ৬ স্বনামধন্য বাঙালি বিপ্লবী দীনেশচন্দ্র গুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন .

  • সময় সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১০৮৪ বার দেখা হয়েছে

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী একজন স্বনামধন্য বাঙালি বিপ্লবী দীনেশচন্দ্র গুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ৩৪০তম (অধিবর্ষে ৩৪১তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৮৭৭ : পৃথিবী বিখ্যাত পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম প্রকাশ হয়।
১৮৯৭ : লন্ডন বিশ্বের প্রথম শহর হিসেবে ট্যাক্সিক্যাবের অনুমোদন দেয়।
১৯৭১ : ভারত এবং ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দেয়।

জন্ম

১৮২৩ : ম্যাক্স মুলার, বিখ্যাত ভারত বিদ্যাবিশারদ, সংস্কৃত ভাষার সুপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত ও অনুবাদক।
১৮৫৩ : হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, বিখ্যাত বাঙালি ভারততত্ত্ববিদ, সংস্কৃত বিশারদ, সংরক্ষণবিদ ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচয়িতা।
১৮৯৮ : গুনার মিরদাল, নোবেলজয়ী সুইডিশ সমাজবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদ।
১৯১১ : দীনেশচন্দ্র গুপ্ত, স্বনামধন্য বাঙালি বিপ্লবী।
১৯১৭ : ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত একমাত্র বিদেশি মুক্তিযোদ্ধা।
১৯২০ : জর্জ পোর্টার, নোবেলবিজয়ী ইংরেজ রসায়নবিদ ও অধ্যাপক।
১৯৫৬ : তারেক মাসুদ, বাংলাদেশের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গীতিকার।

মৃত্যু

১৯৯১ : নোবেলজয়ী ইংরেজ অর্থনীতিবিদ রিচার্ড স্টোন
২০০০ : পাকিস্তানি কাওয়ালি গায়ক ও কবি আজিজ মিয়া
২০২০ : ভারতের বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের বিখ্যাত অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়

দীনেশচন্দ্র গুপ্ত

দীনেশচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী একজন স্বনামধন্য বাঙালি বিপ্লবী। দীনেশ গুপ্ত নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। তিনি ঢাকা ও মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন।

জন্মগ্রহণ করেন ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের যশোলং গ্রামে। এলাকায় তিনি ‘নসু’ নামেই পরিচিত ছিলেন। বাবা সতীশচন্দ্র গুপ্ত ও মায়ের নাম বিনোদিনী দেবী। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে দীনেশ ছিলেন তৃতীয়। বাবা ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মচারী। চাকরির সূত্রে তিনি কিছুকাল গৌরীপুরে অবস্থান করেন।

লেখাপড়ার শুরু গৌরীপুরের পাঠশালাতে। পরে নয় বছর বয়সে ভর্তি হন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। প্রথম দিকে দীনেশ ঢাকার গেন্ডারিয়া অঞ্চলে দাদার বাড়িতে বাস করতেন, পরে উয়াড়িতে পৈত্রিক বাসভবনে চলে আসেন। বাল্যকাল থেকেই দীনেশ ছিলেন নির্ভীক, বেপরোয়া ও বাগ্মী। এই সময় থেকেই তার মনে স্বদেশ চেতনা ও ব্রিটিশ বিরোধিতার আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছিল।

সাহসিকতাপূর্ণ কর্মতৎপরতার জন্যে দীনেশচন্দ্র বিপ্লবী সংগঠন বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স (বিভি) বাহিনীর সাধারণ সদস্য থেকে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। ঢাকা জেলায় এবং পরে মেদিনীপুরে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন। এ সংগঠনের প্রভাবেই বিপ্লবী দল মেদিনীপুরে একে একে তিন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সমর্থ হয়।

১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিনয় বসুর নেতৃত্বে বাদল গুপ্ত ও দীনেশচন্দ্র কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং-এ আক্রমণ চালিয়ে কারা বিভাগের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর-জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা এবং অন্য কয়েকজন উচ্চপদস্থ ইউরোপীয় কর্মচারীকে গুরুতরভাবে আহত করেন। এ ঘটনায় গ্রেফতার এড়ানোর উদ্দেশ্যে এ বিপ্লবিত্রয় উগ্র বিষপানে ও নিজেদের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে বিনয় ও বাদলের মৃত্যু হয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে বহু চেষ্টায় বাঁচিয়ে তোলা হয়। কিন্তু দীনেশের দেশপ্রেম এতোই গভীর ছিল যে, বহু চেষ্টা করেও সরকার তার কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে সক্ষম হয়নি।

অবশেষে সরকারবিরোধী কার্যকলাপ এবং হত্যার অভিযোগে বিচারে তার ফাঁসির আদেশ হয়। নির্ভীক দীনেশ ফাঁসির প্রতীক্ষায় থাকাকালীন সময়ে কারান্তরালে বসে কয়েকটি মূল্যবান চিঠি লেখেন, যাতে বিপ্লবীদের বীরত্বগাথা, আত্মত্যাগের মহিমা এবং গভীর দেশপ্রেম ব্যক্ত হয়েছে। চিঠিগুলো সুধীসমাজে রসোত্তীর্ণ সাহিত্য হিসেবে স্বীকৃত ও সমাদৃত।

আলিপুর জেলে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ১৯৩১ সালের ৭ জুলাই মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে কলকাতার প্রসিদ্ধ লালদীঘি ময়দান বিনয়-বাদল-দীনেশ-এ তিন নবীন বীরের স্মরণে উৎসর্গ করা হয়, যা সংক্ষেপে ‘বিবাদী বাগ’ নামে পরিচিত।

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com