ইতিহাসে নাম লিখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন জ্যানেট ইয়েলেন।তাকেই কেবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ এই পদের জন্য বেছে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার সিনেটের ভোটে জ্যানেট ইয়েলেনের অর্থমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এর আগে ১৯ জানুয়ারি কংগ্রেসে ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয় তার মনোনয়নের বিষয়টি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্যটি উঠে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইয়েলেন এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান পদেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। ইয়েলেনকে অর্থমন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে এই পদে ২৩১ বছর ধরে চলা লিঙ্গবৈষম্য দূর হতে যাচ্ছে। ১৭৮৯ সালের বৈশ্বিক মন্দার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে লেবার মার্কেট বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হলেও এবারই প্রথম এই পদে নারীকে মনোনয়ন দেওয়া হলো।
বাইডেন প্রশাসনের আশা, যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য দূর করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন ইয়েলেন। করোনা পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা করের বোঝা থেকে সাধারণ নাগরিকদের বের করে এনে অর্থনীতিকে স্বাভাবিকীকরণের দায়িত্ব তার ওপর অর্পিত হচ্ছে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
৭৪ বছর বয়সী ইয়েলেনের মনিটারি পলিসি নিয়ে ২০ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী হিসেবে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান। ২০১৮ সালে এই পদে তার মেয়াদ বাড়াননি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
জ্যানেট নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকোনোমিকসে পিএইচডি করেন। বিল ক্লিনটনের প্রশাসনে তিনি শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তার স্বামী জর্জ অ্যাকারলফ অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী।
চিকিৎসক ও শিক্ষক পরিবারের মেয়ে জ্যানেট ইয়েলেনের নিজের পরিবারটা গড়ে উঠেছে একেবারেই অর্থনীতি নিয়ে। ইয়েলেনের বেড়ে ওঠা নিউইয়র্কে শহরে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেন। পিএইচডি করেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন তিনি।
জ্যানেট ইয়েলেনের স্বামী নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জর্জ আকেরলফ। দুজনের পরিচয়টাও এই অর্থনীতি নিয়েই। জ্যানেট ইয়েলেন ১৯৭৭ সালে প্রথম চাকরি শুরু করেন ফেডারেল রিজার্ভে। সেখানকার আরেক কর্মী জর্জের আকেরলফের সঙ্গে পরিচয় হয় তার।সেখানেই দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক বছরের মধ্যে বিয়ে করেন তারা। পরে দুজনই একসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। এই দম্পতির এক ছেলে রয়েছে। তিনিও বাবা মায়ের মত অর্থনীতির ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।