1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪১ অপরাহ্ন

ইমাম গাজ্জালি : জীবন ও কর্ম

  • সময় সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৫ বার দেখা হয়েছে

জ্ঞান অনুসন্ধানে ১৫ বছর বয়সে পাড়ি দিলেন ৫০০ মাইলের পথ…
ইমাম গাজ্জালি এখন থেকে ৯৬১ বছর আগে পয়লা নভেম্বর ১০৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল আবু হামিদ মোহাম্মদ। তারা দুই ভাই ছিলেন। তিনি মোহাম্মদ। আরেকজন হচ্ছেন আহাম্মদ।
শৈশবে বাবা মারা যান। মা এবং নানার তত্ত্বাবধানে তিনি বড় হন।
তখনকার দিনে জ্ঞানের অনুসন্ধানে ছাত্ররা বাড়ি ছেড়ে চলে যেত দূরকে দূর বহু দূর আরকি। সেইসময় ১৫ বছর বয়সে ৫০০ মাইল পাড়ি দিয়ে তিনি তার জন্মস্থান তুস থেকে গুরগানে চলে যান।
সেখানে ইমাম আবু নসর ইসমাইলের ছাত্রত্ব গ্রহণ করেন এবং সেখানে শিক্ষালাভ করেন। পাঁচ বছর ওখানে ছিলেন।
শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ইমাম আল জুয়াইনির…
এবং ২০ বছর বয়স যখন হলো তখন তিনি নিশাপুর গেলেন। তখনকার জ্ঞানচর্চার এটা খুব বড় প্রতিষ্ঠান ছিল জামেয়া নিজামিয়া, নিশাপুর।
তো সেখানে ইমামুল হারামাইন ছিলেন ইমাম আল জুয়াইনি, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ। তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
ইমাম গাজ্জালী খুবই মেধাবী ছিলেন এবং বাহাসে ওস্তাদ ছিলেন। ‘বাহাস’ মানে হচ্ছে বিতর্ক।
খুব তার্কিক ছিলেন। আবার জ্ঞানী ছিলেন। যার ফলে যেখানেই যেতেন কেউ তার সাথে পেরে উঠত না। জ্ঞান এবং বিতর্ক একত্র হলে যা হয় আর কি।
অল্প সময়েই হয়ে গেলেন নিজামুল মুলকের সভাসদের লিডার…
তিনি ইমাম জুয়াইনির খুব প্রিয় ছাত্র হলেন। এবং গাজ্জালীও ইমাম জুয়াইনির দেওয়ানা ছিলেন একেবারে।
এবং দেওয়ানা এরকম পর্যায়ের যে, ইমাম জুয়াইনি যখন মারা গেলেন, তিনি এত দুঃখিত হলেন যে বললেন, এই শহরে, নিশাপুরেই আর থাকব না। আমার ওস্তাদ যখন নাই, এই শহর আমার জন্যে না।
উনি চলে গেলেন সেলজুক সুলতান মালিক শাহর প্রধানমন্ত্রী নিজামুল মুলকের দরবারে।
তখনকার দিনে এদের দরবারগুলো সব জ্ঞানীদের দ্বারা অলংকৃত থাকত। নিজামুল মুলকের একটা স্বভাব ছিল- তিনি ক্যাম্প করে বেড়াতেন। শিবির নিয়ে একেক শহরে একেক জায়গায় যেতেন।
তো ইমাম গাজ্জালি তার সভাসদ হয়ে গেলেন। আরো ১০-১২ জন জ্ঞানীর সাথে। যেখানেই যেতেন বিচার-আচার করতেন, খোঁজখবর নিতেন এবং খুব অল্প সময়েই সবার লিডার হয়ে গেলেন।
এরপর ভিসি হলেন জামেয়া নিজামিয়া বাগদাদের!
তার পাণ্ডিত্যে নিজামুল মুলক খুব মুগ্ধ হলেন। ছয় বছর তিনি তার সাথে সাথে থাকলেন।
তারপরে একদিন নিজামুল মুলক বললেন যে, তোমার পাণ্ডিত্যে আমি খুব মুগ্ধ। তোমাকে জামেয়া নিজামিয়া বাগদাদ যেতে হবে।
তখনকার জামেয়া নিজামিয়া বাগদাদ এটা কত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল এটা বোঝানোর জন্যে বলছি-
এখনকার অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ এবং হার্ভার্ড- এই তিনটা একত্র হলে যে ওজন হবে, জামেয়া নিজামিয়া বাগদাদের ওজন ছিল সে-রকম।
অর্থাৎ তখনকার দিনে সারা বিশ্বের নাম্বার ওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রফেসর হলেন। এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভিসিও হয়ে গেলেন।
পাণ্ডিত্য ও এক্সপ্রেশনের জন্যেই ফতোয়া নিতে আসত দূরদূরান্তের মানুষ!
এবং যখন উনি বাগদাদে যান আরো ১৫ বছর পরে তখন ওনার যে বাহন এবং ওনার যে পোশাক-আশাক এটা তখনকার সময় পাঁচশ দিনার। পাঁচশ দিনার মানে হচ্ছে পাঁচশত তখনকার স্বর্ণমুদ্রা! কারণ মন্ত্রীর সভাসদ ছিলেন।
তার পাণ্ডিত্য এত ছিল এবং এক্সপ্রেশন এত ছিল যে দূরদূরান্তের অন্যান্য রাজ্য থেকেও তার কাছে ফতোয়ার জন্যে আসত।
জামেয়া নিজামিয়া বাগদাদের ভিসি হওয়া। মানে কী ব্যাপার বুঝতেই পারেন!
শানশওকত, জ্ঞান এবং বিদ্যার খ্যাতি এবং যে-কোনো বাহাস এবং তর্কযুদ্ধ প্রতিপক্ষকে খুব সহজে কাবু করে ফেলতেন।
তখন বয়স তার ৩৮ বছর মাত্র। ভিসি হলেন ৩০-এর কোঠায়! অর্থাৎ ধার এবং ভার দুটোই সমান ছিল।
শেখ আল ফারাবির কাছে দীক্ষা গ্রহণ করলেন আত্মিক আধ্যাত্মিক জ্ঞানের…
যখন তার ওস্তাদ ইমাম জুয়াইনি মারা গেলেন তখন তিনি সুফিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়লেন। এবং শেখ আল ফারাবির শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন। আত্মিক জ্ঞান আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দীক্ষা গ্রহণ করলেন।
একদিকে দুনিয়ার শানশওকত, সম্মান; অন্যদিকে আধ্যাত্মিক তাড়না। এই দুটোর মধ্যে সংঘাত শুরু হলো। এবং যখন তার ৩৮ বছর বয়স অন্তর্দ্বন্দ্বটা প্রবল রূপ ধারণ করল। এবং এই দ্বন্দ্বে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন।
ডাক্তার বলল, রোগটা শরীরে নয়; রোগটা অন্তরে…
অসুস্থ হয়ে এমন অবস্থা হলো যে, তিনি কথা বলতে গিয়েও কথা বলতে পারেন না, মুখ দিয়ে শব্দ বের হয় না। খাওয়াদাওয়া কোনোকিছুর প্রতি কোনো আগ্রহ নাই। এবং খলিফা স্বয়ং তার ডাক্তার পাঠিয়ে দিলেন চিকিৎসার জন্যে।
এবং ডাক্তারও ছয় মাস চিকিৎসা করে কোনো রোগ পেল না। কারণ রোগ তো হচ্ছে অন্তরের, দিলের। ডাক্তার বলল যে, ওষুধে এই রোগ ভালো হবে না। সমস্যাটা তোমার অন্তরে তোমার ক্বালবে।
দলিল প্রমাণ যুক্তি অন্যকে পরিতৃপ্ত করে, কিন্তু আত্মশুদ্ধি ও সমর্পণে হয় অন্তরাত্মার পরিতৃপ্তি…
এবং তিনি অনুভব করলেন যে, আসলে বিতর্ক করে সত্যের স্তরে ঈমানের স্তরে ঈমানের সর্বোচ্চ স্তর ইয়াকিনের স্তরে পৌঁছা যাবে না। ইয়াকিনের স্তরে পৌঁছতে হলে আত্মশুদ্ধি এবং পরিপূর্ণ সমর্পণ দরকার স্রষ্টার কাছে।
তিনি খুব পরিষ্কার বুঝলেন যে, দলিল প্রমাণ যুক্তি দিয়ে অন্য লোকদের পরিতৃপ্ত করা যায়, কিন্তু নিজের অন্তরাত্মা এতে পরিতৃপ্ত হয় না। নিজের অন্তরাত্মা পরিতৃপ্ত হতে হলে প্রয়োজন আত্মশুদ্ধি এবং পুরোপুরি স্রষ্টার কাছে নিজেকে সমর্পণ করা।
তিনি বুঝলেন এই পার্থিব শানশওকত পদমর্যাদা খ্যাতি জনপ্রিয়তা-এগুলোর প্রতি যে মোহ-আসক্তি এই আসক্তি এই মোহ এইখানে পৌঁছার ব্যাপারে আদৌ সহায়ক নয়। ঐ স্তরে পৌঁছতে হলে এগুলো থেকে বেরিয়ে যেতে হবে।
মৌনতা ও ধ্যানের মধ্যেই খুঁজতে লাগলেন অন্তর্দ্বন্দ্বের অবসান…
এক হচ্ছে, বাস্তব জ্ঞান খ্যাতি পদমর্যাদার প্রতি মোহ। অন্যদিকে ইয়াকিনের স্তরে পৌঁছার আকুতি, ঈমানের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছার যে আকুতি, এই দুইয়ের যে দ্বন্দ্ব আস্তে আস্তে তিনি মৌন হতে শুরু করলেন।
এবং দিনের বড় সময় তিনি মৌনতার মধ্যে হারিয়ে যেতেন। ধ্যানের মধ্যে হারিয়ে যেতেন।
বাস্তবে একদিন এক কাপড়ে রাতের অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন!
এবং একদিন তিনি বাস্তবে হারিয়ে গেলেন। যে মানুষটি বাগদাদে ঢুকেছিলেন ৫০০ দিনারের পোশাক-আশাক-বাহন নিয়ে, সেই মানুষটিই রাতের অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন এক কাপড়ে এক পোশাকে।
যে মানুষটি খুব দামি ঘোড়ায় চড়ে বাগদাদে প্রবেশ করেছিলেন সেই মানুষটি বাগদাদ থেকে দামেস্ক হেঁটে গেলেন। কোনো টাকাপয়সা নাই। কাফেলার সাথে হাঁটতে হাঁটতে।
পরিচয় গোপন করে কাজ নিলেন মসজিদের ঝাড়ুদারের…
এবং তাকে যাতে কেউ চিনতে না পারে এজন্যে মসজিদে ঝাড়ুদারের কাজ নিলেন। ক্লিনারের।
কিন্তু ঐ বিপদ!
আগেকার দিনে মসজিদে আলেমদের জন্যে কিছু কিছু এরিয়া থাকত যে, অমুক হুজুর এখানে বসবেন। অমুক হুজুর ঐখানে বসবেন অমুক হুজুর এখানে। লোকজন যেত ফতোয়ার জন্যে, আলাপ আলোচনার জন্যে জ্ঞানার্জনের জন্যে।
তো ইমাম গাজ্জালী তখন ক্লিনার। একদিন এক লোক এসেছে ফতোয়ার জন্যে। বড় বড় এদের কাছে গিয়ে স্যাটিসফাইড হতে পারছে না। এবং খুব পেরেশান!
এই উত্তর গাজ্জালীর পক্ষেই দেয়া সম্ভব!
এর মধ্যে ইমাম গাজ্জালী তার পেরেশানি লক্ষ করলে তাকে ডাকলেন যে আচ্ছা, আপনার কী সমস্যা?
প্রথমে সে বলল যে, আপনি এগুলো শুনে কী করবেন? এত বড় বড় ইমামরা আমাকে স্যাটিসফাই করতে পারল না!
গাজ্জালী বললেন, আচ্ছা শুনি না।
শোনার পরে জবাব দিয়ে দিলেন।
জবাবটা তার খুব মনঃপুত হলো যে, ঠিক তো। কিন্তু উনি নিশ্চিত হতে পারছেন না যে, এটা শরিয়াসম্মত জবাব হয়েছে কিনা।
তো বলল যে দেখেন, আমি তো নিশ্চিত হতে পারছি না। তো ঠিক আছে, আমি আবার হুজুরদের গিয়ে জিজ্ঞেস করি যে, এই মাসয়ালার এই জবাব কিনা।
এবং জবাব শুনে সব হুজুর বিস্মিত! বলে যে আরে এটা তো ঠিক। আচ্ছা, কে তোমাকে এই জবাব দিয়েছেন? বলে যে ঐ যে মানে ঝাড়ুদার।
সব তো এসে ঝাড়ুদারকে পাকড়াও। তুমি এই জ্ঞান জানলে কোত্থেকে? এই উত্তর তো গাজ্জালী ছাড়া কারো পক্ষে দেয়া সম্ভব না!
আবারও এক কাপড়ে চলে গেলেন জেরুজালেমে…
তোমার পরিচয় বলো? তুমি তো ঝাড়ুদার না।
তো এখন আর কী করবে, মিথ্যা তো আর বলতে পারে না। সব হুজুর মিলে বলল যে কালকে থেকে আমরা তোমার ছাত্রত্ব গ্রহণ করছি। আমাদেরকে ছাত্র হিসেবে গ্রহণ করো।
কারণ ইমাম গাজ্জালী তো পরিচিত নাম। উনি মনে মনে হাসলেন যে, এখানকার রিজিক আমার শেষ হয়ে গেল।
রাত্রিবেলা আবার এক কাপড়ে দামেস্ক থেকে চলে গেলেন জেরুজালেম।
ইব্রাহিমের (আ) মাজারে গিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন তিন ব্যাপারে…
সেখান থেকে মক্কা-মদিনা ১০ বছর। ৩৮ থেকে ১০ বছর ৪৮ বছর বয়সে আবার তিনি বাগদাদে ফিরে গেলেন।
যাওয়ার আগে তিনি হযরত ইব্রাহিমের (আ) মাজারে গেলেন। তিনটা প্রতিজ্ঞা করলেন ।
১. কোনো শাসকের দরবারে কোনোদিন যাবেন না।
২. তাদের কোনো উপহার তিনি গ্রহণ করবেন না।
৩. কোনো ধর্মীয় বাহাস বিতর্কে কোনোদিন যাবেন না।
ধর্মীয় পুনর্জাগরণে নির্বাসিত সেই ধ্যানকেই তিনি করলেন পুনর্বিন্যাস…
এবং তিনি সত্যে উপনীত হলেন। ইয়াকিনের স্তরে উপনীত হলেন। তারপরে তিনি সেখান থেকে ফিরে এলেন তুসে। এবং ১০ বছর সাধনার পরে যে বই লিখলেন ইসলামে শরিয়ত এবং মারেফত। শরিয়ার সাথে ফিকাহর সাথে সাধনার সমন্বয় করলেন। এহইয়াউ উলুমুদ্দীন। ১৫০০ পৃষ্ঠার বই আরকি। ইটস এ মাস্টারপিস।
এবং এহইয়াউ উলমুদ্দীন, ধর্মীয় পুনর্জাগরণ যে, ধ্যান যে তাকওয়া যে সমর্পণ ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, সেই ধ্যান সেই তাকওয়া সেই সমর্পণকে তিনি শরিয়ার সাথে সংযুক্ত করলেন।
আত্মশুদ্ধির প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে এহইয়াউ উলমুদ্দীন!
এই সংযুক্তির যে প্রক্রিয়া আত্মশুদ্ধির যে প্রক্রিয়া এই প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে এহইয়াউ উলমুদ্দীন আরকি।
এহইয়াউ উলুমুদ্দীন যখন প্রকাশিত হলো তিনি তখন নিশাপুরে। নিশাপুরের যারা তখনকার আলেম ছিলেন তারা তার এই বইকে নিষিদ্ধ এবং তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করলেন। তখন তিনি নিশাপুর ছেড়ে আবার তার জন্মভূমি তুসে ফিরে গেলেন।
এবং শুধু যারা সেখানে যেত তার কাছ থেকে জানার জন্যে তাদেরকেই বলতেন। তাদের মধ্যে জ্ঞান বিতরণ করতেন আর মৌনতা সাধনা।
পরবর্তীকালের সাধকরা বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন এই এহইয়াউ উলমুদ্দিন দ্বারাই…
গত হাজার বছর ধরে আত্মশুদ্ধির জন্যে এর কোনো সাবস্টিটিউট বা এর চেয়ে উন্নত বই উন্নত গ্রন্থ আর বেরোয় নি।
এবং রুমী, সাদী, ফরিদুদ্দিন আত্তার, হাফিজ সিরাজি, পরবর্তীকালের যে সাধকরা এই সাধকরা এই জ্ঞানীরা এহইয়াউ উলমুদ্দিন দ্বারাই সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন।
তার জীবদ্দশায় যদিও এহইয়াউ উলমুদ্দীন পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু হাজার বছর ধরে সেই এহইয়াউ উলুমুদ্দীন দ্বীনের আলোকে ধর্মীয় জ্ঞানকে ধ্যানের জ্ঞানকে সাধনার জ্ঞানকে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।
মানুষ কতটা সার্থক এটা বোঝা যায় তার মৃত্যুতে…
আসলে একজন মানুষ কতটা সার্থক এটা বোঝা যায় তার মৃত্যু থেকে। মৃত্যুর সময় যে শান্তিতে তৃপ্তিতে মারা যেতে পারে বোঝা যাবে যে, তার জীবনই হচ্ছে সার্থক জীবন। ৫৩ বছর বয়সে ১৯শে ডিসেম্বর ১১১১ সালে তিনি মারা যান।
এবং ঐতিহাসিক জাওযি তার যে মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন– সোমবার ছিল। ফজরের আজানের সময় তিনি বিছানা ত্যাগ করলেন। ওজু করলেন নামাজ পড়লেন। নামাজের পর এক ভক্তকে বললেন, কাফনের কাপড় নিয়ে আসো।
ভক্ত কাফনের কাপড় নিয়ে এলো। তিনি কাপড় চোখে স্পর্শ করলেন, চুমু দিলেন, কাপড়টাকে বিছিয়ে দিলেন। বললেন যে আল্লাহ, আমি এই সময়ের জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম। তোমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তুমি যখন আমাকে ডাকছ, আমি আসছি। বলে শুয়ে পড়লেন। এবং মারা গেলেন।
এর চেয়ে তৃপ্তির মৃত্যু আর কিছু হতে পারে!
তো আসলে ইসলাম থেকে ধর্ম থেকে যে ধ্যান নির্বাসিত হয়ে গিয়েছিল, সেই ধ্যানকে ইমাম গাজ্জালী আবার ধর্মে পুনর্বিন্যাস করলেন, ফিরিয়ে আনলেন।
[প্রজ্ঞা জালালি, ০৬ নভেম্বর, ২০১৯]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com