আপনি যদি ওয়েট লুজ করতে চান তাহলে আপনাকে একটা ফর্মুলা ফলো করতে হবে। ওজন কমানোর জন্যে কোয়ান্টামের ফর্মুলাটা কী?
ফর্মুলাটা খুব সহজ। খাবারের লাগাম টেনে ধরতে হবে। পরিমিত আহার যাকে বলে। যা পেলাম তাই খেলাম, যত খুশি এবং যখন খুশি তখন খেলাম তা নয়। আপনার ব্রেনকে প্রোগ্রাম দিতে হবে।
অনেক অনেক খাবার আপনার সামনে আসবে। সামনে থাকবে। কিন্তু আপনার যতটুকু প্রয়োজন এর বেশি যখনই আপনি খাবেন না, এভাবে দুই মাস যখন খাবেন না, আপনার টোটাল সিস্টেম বুঝবে যে এখন দুর্ভিক্ষ চলছে, খাবার নাই।
যখন ২৫ কেজি কমে গেল, একটা তৃপ্তি আসল- যে না, ২৫ কেজি কমেছি! আই এম এ গ্রেট লুজার। আমার ওয়েট লুজ করেছি।
আপনি হয়তো এভাবে নিয়মটা ফলো করে যাচ্ছেন। কিন্তু ঘটনাচক্রে আপনার সামনে যখন লোভনীয় খাবার এসে গেলো, আপনি লোভ সামলাতে পারলেন না। ভাবলেন একটু খাই। একটু খাই। আপনি খাওয়া শুরু করলেন। কিন্তু আপনার ব্রেইনে তো আগেই দেয়া প্রোগ্রাম আছে যে এতদিন দুর্ভিক্ষ ছিলো। খাবার ছিলো না। যে কারনে আপনার সিস্টেম কিন্তু এই অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে তৈরী নয়।
ফলে যে খাবারই আপনি দিচ্ছেন ব্রেন প্রথম এটাকে ফ্যাটে বা ফ্যাট বানিয়ে ফেলে। কেন? ভবিষ্যতে যদি আবার ফ্যামিন হয়, আবার যদি দুর্ভিক্ষ হয় তখন যেন এটা কাজে লাগানো যায়।
আর তাছাড়া আপনি তো মানুষ তো! ডেস্টিনেশন হেলের আরেকটা পয়েন্ট হচ্ছে লোভ। একটু লালসা। একটু ভালো জিনিস দেখলে জিহ্বায় পানি চলে আসে। মন বলে আচ্ছা, এত ভালো খাবার ঠিক আছে একটু খাই না। ঐ যে একটু খেলেন, ওটাকেই আপনার বডি তখন আহ্ পাওয়া গেছে। প্রিজার্ভ ইট।
কৃপণ যে-রকম টাকাকে আটকে ফেলে, আপনার বডি তখন ঐভাবে ঐ খাবারটাকে আটকে ফেলে। এটাকে ব্যয় করে না, এটাকে সে জমায়। এটাকে সে চর্বিতে রূপান্তরিত করে ফেলে।
এজন্য ব্রেনকে বারবার প্রোগ্রাম দিতে হবে। বলতে হবে যত লোভনীয় খাবারই সামনে আসুক প্রয়োজন ছাড়া খাওয়া যাবে না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। যখন খুশি তখনই খাওয়া যাবে না।
তখন ব্রেন বুঝবে, যে খাবারটা আমি কমাচ্ছি তা দুর্ভিক্ষের জন্যে না। কমাচ্ছি আমার স্বাস্থ্যের জন্যে। আমার উপকারের জন্যে। আমার কল্যাণের জন্যে। কারণ আমি এরকম ফিগার চাই। এজন্যে আমি খাবারটা খাচ্ছি না।
তখন বডি আপনার এই অতিরিক্ত খাবারটাকে এমনিই প্রত্যাখ্যান করবে। সে ভাববে যে, না খাওয়া যাবে না তো খাওয়া যাবে না।
যে-রকম একজন ঈমানদার মানুষ যদি হারাম খাবার দেখে সে কি খেতে আগ্রহী হয়?
সে বলে যে, না খেয়ে আছি, ভালো আছি। কিন্তু হারাম খাব না।
তো ব্রেনও সে-রকম। সে প্রত্যাখান করে বলবে, আমার এই এই জিনিসটা খাওয়া উচিত না। এই জিনিসটা আমি খাব না।
[সজ্ঞা জালালি, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০]