এই যে টি-শার্টটা কেউ বানিয়েছে। কী হয়েছে? কেউ এটার সূতো তৈরি করেছে কেউ তারপরে এটাকে বয়ন করেছে তারপরে রং করেছে কেউ তারপরে আবার কেউ ‘কোয়ান্টাম’ ছাপ্পা মেরেছে। তারপরে আমরা পরছি। কত মানুষের কাছে ঋণ!
তবে আমাদের একটা আনন্দ কী? আমরা যেরকম ঋণ করছি, আমরা মানুষের কল্যাণও করছি। যে কথা বলা হয়েছে- কাজ করুন মানুষের কল্যাণে। কোয়ান্টামমে এলে আমরা নিজেরা বুঝতে পারি যে আমরা কাজ করছি মানুষের কল্যাণে।
আমরা যখন প্রথম আসি এখানে… কালকে থং ইয়ার সাথে কথা হচ্ছিল। ইয়ংম্যান! তোমরা তো খাবার পাও একদম রেডি। ডাইনিং টেবিল। ডাইনিং টেবিল ছিল না। লম্বাখোলাতে লাস্ট স্টেশন। লম্বাখোলাতে এসে সমস্ত বাজার ফেলে দেয়া হতো। ওখান থেকে থং ইয়ারা এত ছোট ছোট থং ইয়া সেই ছোট্ট থং ইয়া এখন ইঞ্জিনিয়ার থং ইয়া।
তো আমি যখন নয়াপাড়াতে গিয়েছিলাম বেড়াতে তখন থং ইয়া, সুমথং আরো তিনটা বাচ্চা আরেকটি বাচ্চা। খুব মায়া লাগল দেখে। মনে হলো ওদেরকে যদি শিক্ষার সুযোগ দেয়া যায় ওরা দেশকে জাতিকে অনেক কিছু দিতে পারবে।
থং ইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম যে, থং ইয়া তোমার মনে আছে? বলে যে মানে থাকবে না। আমার এখনো মনে আছে এবং খুব ভালো লাগত। এখান থেকে লাইন ধরে সব যেতাম যত বাজার লাউ কদু এটা সেটা কেউ লাউ নিয়ে কেউ অন্য বাজার নিয়ে কেউ চাল নিয়ে ওখান থেকে আসত হেঁটে। হেঁটে আসত।
আল্লাহর রহমত! সাতজন নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম।
অর্থাৎ যখন মানুষ অন্যের কল্যাণে কাজ করে এই কাজটাই তার জন্যে ইবাদত হয়ে যায়।
একজন মানুষ আল্লাহকে ডাকছে, ভগবানকে ডাকছে, ঈশ্বরকে ডাকছে। ডাকার সাথে সাথে কী করছে সে আবার? সে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। তার তো সবটাই ইবাদত।
তো তার সাথে যে আরেকজন মানুষ পাল্লা দিয়ে পারবে কীভাবে! কারণ আল্লাহ তো সবটাই তার ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করছেন, কবুল করছেন এবং তাকে সেভাবে পুরস্কৃত করছেন।
যখন আপনি অন্যের কল্যাণ করবেন তখন আপনার কল্যাণ হবে। এটাই হচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম প্রকৃতির আইন।
সূরা কাসাসের ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন যে, ‘আল্লাহ যেমন তোমাকে অনুগ্রহ করেছেন, তেমনি তুমিও মানুষের প্রতি সদয় হও।’
কারণ আসলে আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহর অনুগ্রহ পাচ্ছি এবং অনুগ্রহ পাচ্ছি বলে আমরা এত ভালো আছি।
বাইবেলেও কিন্তু একই কথা বলা হয়েছে, সার্থক জীবন তাদের যারা দানশীল। যারা দানশীল তারা দয়া পাবে।
এবং বেদে বলা হয়েছে, এসো প্রভুর সেবক হই গরিব ও অভাবীদের দান করি। সব জায়গাতেই সব ধর্মেই সে অভাবী- হিন্দু না মুসলমান বৌদ্ধ না খ্রিষ্টান- কখনো এই প্রশ্ন এটা বলা হয় নি। বলা হয়েছে ‘অভাবী’। বলা হয়েছে ‘মানুষ’।
এবং আমরা কোয়ান্টামে… আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা মানুষের জন্যে কাজ করছি। এবং মানুষের জন্যে কাজ করছি বলে আল্লাহ আমাদেরকে এত ভালো রেখেছেন।
এবং কোয়ান্টামে আমরা কী বলি? আমাদের প্রত্যয়নটা কী? শেষ বাক্যটা কী? জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে মানুষের কল্যাণ করব। এই মানুষের কল্যাণ করার মধ্য দিয়ে নিজের কল্যাণ হয়।
অর্থাৎ অন্যের কল্যাণে যত কাজ করবেন, তত আপনি সুস্থ থাকবেন, তত সুন্দর থাকবেন, তত সুখী জীবনের অধিকারী হবেন প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারেই।