1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ন

খোলেনি ১৯ কারখানা ১২১ শ্রমিক বরখাস্ত

  • সময় বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৯৩ বার দেখা হয়েছে

হাজিরা বোনাস বৃদ্ধিসহ শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি সরকার ও মালিক পক্ষ মেনে নেওয়ার পরের দিন গতকাল বুধবার খুলেছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত সব কারখানা নির্বিঘে চলবে- মালিকপক্ষের এমন ঘোষণা সত্ত্বেও ১৯টি কারখানা গতকালও বন্ধ ছিল। কবে খুলবে সেটাও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কেউ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ আশুলিয়া জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম। এদিকে কারখানায় ভাঙচুর, লুটপাট, উচ্ছৃঙ্খলতা, কাজ না করা, স্টাফদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা এবং আইন বহির্ভূত কাজে সংশ্লিষ্ট থাকায় ১২১ জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অনন্ত গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ বলছে, নানা সংকটে আগে থেকেই শিল্পাঞ্চলে ১ হাজার ৮৬৩টি তৈরি পোশাক
কারখানার মধ্যে বন্ধ ছিল ১৬৯টি কারখানা। এর সঙ্গে আরও ১৯টি কারখানা যোগ হওয়ায় বন্ধ কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৮টিতে।
এদিকে অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে আশুলিয়ায়। মালিকপক্ষ দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে শিল্পাঞ্চলে। তবে শতাধিক শ্রমিক বরখাস্তের ঘটনায়
সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। কোথাও দুয়েকটি দাবি তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের দাবিতে চলে কর্মবিরতি। গতকাল বুধবার সকালে অনন্ত গার্মেন্টসে কাজে যোগ দিতে এসে বরখাস্তের নোটিশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকরা। সেখানে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাদের সরিয়ে দেন। আশুলিয়ার জামগড়া, জিরাবর, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুরসহ শিল্পাঞ্চলজুড়ে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি।
অন্যদিকে জিরাবো এলাকায় ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা বাস্তবায়নের দাবিতে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মমিন মন্ডলের মালিকানাধীন মন্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের শান্ত করে। বিকালে কাঠগড়া এলাকায় জিহান গার্মেন্টসে এক শ্রমিককে মারধরের জেরে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ছাড়া গোটা শিল্প এলাকার পরিস্থিতি ছিল শান্ত।
দেশের পোশাক খাতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলে আসা শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় মালিকপক্ষ। বৈঠক শেষে বুধবার থেকে দেশের সব শিল্পকারখানা খোলা রাখার ঘোষণাও দেওয়া হয়।
শিল্পাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, এখনও আগস্টের বেতন পরিশোধ করতে পারেনি ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠান এক্টর স্পোর্টিং, গোল্ডটেক্স গার্মেন্টস, সাউথ চায়না ব্লিসিং অ্যান্ড ডাইং, গোল্ডটেক্স, সিডকো গ্রুপ নামের পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানা। শ্রমিক বিক্ষোভ এড়াতে এসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। একটি সূত্র বলছে, নিজেদের গাফিলতির কারণে যারা ছুটি ঘোষণা করেছে, সেসব কারখানার শ্রমিকরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাবেন।
অন্যদিকে, শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় না হওয়ায় বন্ধ রয়েছে পাইওনিয়্যার ক্যাজুয়াল, দিপস এপারেল, আয়েশা ক্লোথিং পলমল গ্রুপ, সাফা সোয়েটার। এ ছাড়া আগস্টের বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে কারখানা বন্ধ রেখেছে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, কারখানায় ভাঙচুরের কারণে বন্ধ সিন সিন এ্যাপারেল, বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশের দাবিতে কর্তৃপক্ষের সমঝোতা না হওয়ায় বন্ধ আজুমান ডিজাইনার, ডেকো ডিজাইন, চায়না ইয়াং সাং লেদার কোম্পানি, ভিনটেজ গার্মেন্টস, আগামী এ্যাপারেলস। বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা না হওয়ায় বন্ধ এ.এফ ম্যানুফ্যাকচার, বিভিন্ন দাবির পাশাপাশি মালিকপক্ষের চার কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবিতে সাঙ্গু টেক্স কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বন্ধ রয়েছে কেইজিং ফুড কোম্পানি।
শিল্প পুলিশ বলছে, যে কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে শিল্পাঞ্চল ঘিরে যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা তৎপর রয়েছে।
বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া মেনে আমরা কারখানা খুলে দিয়েছি। আশা করছি, পুরোদমে আবার উৎপাদন কার্যক্রমে ফিরবে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া। এখন আমাদের সবার দায়িত্ব অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে এ খাতকে আরও গতিশীল করা।
গাজীপুরে বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে ফুল এভার বিডি লিমিটেডের শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নগরের ছয়দানা হাজীপুর পুকুর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন যাত্রীরা।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, ফুড এভারের শ্রমিকরা ১০ সেপ্টেম্বর এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ না করে ১২ সেপ্টেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে। গত সোমবার গাজীপুরে প্রায় সব কারখানার সমস্যা সমাধান হলেও ওই কারখানার শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাননি। তাই বেতনের দাবিতে বুধবার শ্রমিকরা কারখানার সামনে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর ১টার দিকে বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে যায়।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com