চিনি, সুগার এটা একটা হোয়াইট পয়জন। এই সাদা বিষ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হবে।
চিনি আপনার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। খাদ্যনালী, ফুসফুসের আবরণ, ক্ষুদ্রান্ত এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে জরায়ুর অভ্যন্তরভাগে ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ায়।
এবং অল্প অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের যে ক্যান্সার এই ক্যান্সারের কারণ বাবা-দাদার চিনির ঐতিহ্য। তার সাথে সাথে তার নিজেরও চিনি খাওয়ার যে বিষয় এই বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে।
উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় ওজন বাড়ায়। ভেতরে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ইনসুলিনের প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এবং যা ক্যান্সার ঝুঁকিকে ত্বরান্বিত করে।
দেহের বিভিন্ন অঙ্গে চর্বি জমায়, চর্বির পরিমাণ বাড়ায় যা হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে।
দুই হাজার তিনশজন টিন এজারের ওপর পরিচালিত গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে ব্রণের কারণ হচ্ছে চিনিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।
গত ৩০ বছরে বিশ্বজুড়ে যে ডায়াবেটিসের হার দ্বিগুণ হয়েছে, এর প্রধান কারণ হচ্ছে চিনিজাতীয় খাবারের আধিক্য।
এবং চিনিজনিত কারণে যে রোগগুলো হয় সে রোগগুলোতে যত লোক মারা যাচ্ছে এখন প্রতি বছর, সেটা যুদ্ধ-হিংসায় যত মানুষ মারা যাচ্ছে তার চেয়ে অনেক অনেকগুণ বেশি!
যে কারণে একজন গবেষক মন্তব্য করেছেন যে “সুগার ইজ নাও মোর ডেঞ্জারাস দেন গান পাউডার। সুগার বারুদের চেয়েও বিপজ্জনক।”
তো এজন্যে আমরা চিনি বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
এবং এই বর্জনের অংশ হিসেবে আমরা কী করতে পারি? প্রথম নিজেরা শুরু করতে পারি।
এবং তার আগে বলি আমি চিনি খাই না। তো আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রামগুলোতে চা থেকে চিনি টোটালি বর্জন করব। এবং কেউ কোনো সুখবর জানাতে ফাউন্ডেশনে মিষ্টি নিয়ে আসবেন না।
এবং আমরা তো এর আগেও বলেছি বিয়ের খবর হলেও খেজুর। আমাদের এখানে বিয়ের খবর জানাতে আসলে খেজুর নিয়ে আসলে ফাইন। খেজুর ঠিক আছে। মিষ্টির পরিবর্তে খেজুর।
মিষ্টির দাম বেশি না খেজুরের দাম বেশি?
খেজুরের দাম বেশি!
ঠিক আছে, খেজুরের চাহিদা সৃষ্টি করেন। আমাদের দেশে দেখবেন যে ‘সৌদি খেজুর’ হতে থাকবে।
উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাঙালির অনেক। দেখবেন যে সৌদি খেজুর হয়ে গেছে! যে জিনিসের চাহিদা সৃষ্টি হবে তার উৎপাদনও শুরু হয়ে যাবে।
আজকে দেখেন ডাব খাওয়ার প্রচলন কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। এমন কোনো রাস্তা নাই যে রাস্তায় ডাব পাওয়া যায় না! এটা আমাদের ২৫ বছরের প্রয়াস!
তো ডাব আসে কোত্থেকে? দেশেই তো! আগে তো ডাব পাওয়া যেত না। এখন কেন আসে? চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
অতএব আপনারা খেজুরের চাহিদা সৃষ্টি করেন, আমাদের দেশে এই ‘সৌদি খেজুর’ হতে থাকবে।
তো আমরা চিনিটাকে বর্জন করতে চাই। বাসা থেকে চিনি বর্জন করবেন।
এবং একদিনে পারবেন না। অল্প অল্প করে কমাতে থাকেন।
আর চায়ের ক্ষেত্রে যেটা হচ্ছে আমরা একদম গ্রিন টি-তে চলে যাই। ফাউন্ডেশনে আমরা যে আয়োজন করব গ্রিন টি। ব্ল্যাক টিও না। এবং এমনি খাওয়া যায়।
ধরেন এই যে চীন, মাও সেতুং। মাও সেতুং দুটো কাজ করেছেন চীনে।
এক হচ্ছে, চীনাদের জুতা পরিয়েছেন। চীনারা কিন্তু শর্ট হতো।
কেন? তাদের কৃমি হতো। তারা জুতা পরত না।
এবং চীনা জুতা যত সস্তা পৃথিবীর কোনো দেশ এত সস্তায় জুতা তৈরি করে না! এবং চীনা জুতার যে ভ্যারাইটিজ পৃথিবীর কোনো দেশে ভেরাইটিজ পারে না।
কেন সস্তা?
এজন্য যে, প্রত্যেকটা মানুষকে জুতা পরাতে হবে। জুতা পরালে কৃমি হবে না। চীনারা লম্বা হবে, স্বাস্থ্যবান হবে। কৃমি যে বাচ্চার হয়েছে, সেই বাচ্চার কিন্তু স্বাস্থ্য কখনো ভালো হয় না।
দুই নাম্বার হচ্ছে, চীনাদের ঠান্ডার রোগ থেকে বাঁচিয়েছেন। চীন ঠান্ডার দেশ।
প্রত্যেক স্টেশনে স্টেশনে রাস্তার মোড়ে মোড়ে গরম পানি। এবং প্রত্যেকের জন্য একটা করে মগ থাকত। গ্রামের কৃষকের জন্য। তারা যখন শহরে আসছে রেল স্টেশন, গরম পানি আছে। ফ্রি গরম পানি।
সে মগে গরম পানি নিচ্ছে। আর সেইসঙ্গে চায়ের পাতা আছে। চায়ের পাতা মগের মধ্যে দিয়ে দিচ্ছে। সে চা খাচ্ছে ফ্রি।
এই দুটো কাজ। এবং চীনাদের স্বাস্থ্য ভালো হয়ে গেল। ঠান্ডা লাগল না। এবং কী হলো না? কৃমি থেকে সে বাঁচল। স্বাস্থ্যবান হলো, লম্বা হলো।
তো তাহলে চিনি আমরা বর্জন করব এবং আগে নিজে টোটালি বাদ দেবো। এবং ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রামে আমরা চিনি ব্যবহার করব না।
দুটো লাভ হবে এতে। শরীরটা ভালো থাকবে। এবং চিনি মানে প্রত্যেক পরিবারে কত লাগে?
এই টাকাটা বেঁচে যাবে। এবং সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে ফিজিকেলি আপনি ফিট থাকবেন।
[সজ্ঞা জালালি, ১৭ জুলাই, ২০১৯]