রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি আলেকজান্ডার ভেনেডিক্টভ বলেছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ভেনেডিক্টভকে উদ্ধৃত করে তাস বলেছে, ‘ইউক্রেন ভালো করেই জানে, এই ধরনের পদক্ষেপের অর্থ হবে নিশ্চিতভাবেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি। আপাতদৃষ্টিতে, তথ্যগত গোলমাল সৃষ্টি করে আবারও নিজেদের প্রতি (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের) দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কাজ করছে ইউক্রেন।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভকে পশ্চিমাদের সামরিক সহায়তা প্রদান নিয়েও কথা বলেছেন রুশ নিরাপত্তা পরিষদের এই ডেপুটি সেক্রেটারি। তার দাবি, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সাহায্য দিয়ে এটিই বুঝিয়ে দিয়েছে যে, ‘তারা (পশ্চিমারা) সরাসরি এই সংঘাতের একটি পক্ষ’।
মূলত ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এই ইঙ্গিত দিয়ে এসেছে মস্কো। আর ভেনেডিক্টভের সর্বশেষ এই মন্তব্য রাশিয়ান অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি মাত্র।
সম্প্রতি ক্রেমলিনে একটি জমকালো অনুষ্ঠানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনীয় অঞ্চল লুহানস্ক, দোনেতস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসনকে রাশিয়ার অংশ করার জন্য নথিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দ্রুত ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্যপদ পেতে আবেদন করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এদিকে আলেকজান্ডার ভেনেডিক্টভের এই ঘোষণার একদিন আগেই কিয়েভে উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেনের ন্যাটো-নেতৃত্বাধীন মিত্র দেশগুলো। গত সোমবার ও মঙ্গলবার রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এই ঘোষণা দেয় ইউক্রেনের ন্যাটো মিত্ররা।
বিবিসি বলছে, বুধবার ব্রাসেলসে ন্যাটো সদর দপ্তরে ইউক্রেনের ৫০টি দেশের মিত্ররা একটি বৈঠকে মিলিত হয়। আর সেখানেই রুশ আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য অস্ত্র সহায়তার এই অঙ্গীকার করা হয়। কিয়েভ এই বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছে।
ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া সোমবার এবং মঙ্গলবার শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং কয়েক ডজন ড্রোন ব্যবহার করেছে। এসব হামলায় জ্বালানি অবকাঠামো এবং অন্যান্য বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে রুশ সেনাবাহিনী।
গত সোমবার রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রথম দিনে অন্তত ১৯ জন নিহত হন। এর ফলে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং একইসঙ্গে পানি সরবরাহও বিঘ্নিত হয়েছে। এছাড়া রাজধানী কিয়েভের কর্তৃপক্ষকে বিদ্যুতের রেশনিং চালু করতে হয়।