1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৬:২৩ অপরাহ্ন

দেশি ফল খান, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান

  • সময় রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩
  • ৪৩৭ বার দেখা হয়েছে

খাবেন ফল।  ফল শুধু নয়, প্রধানত দেশি ফল। কোন দেশি ফল? আমাদের দেশি ফল। বাংলাদেশি ফল। আয়ুর্বেদের একটি সূত্র হচ্ছে- যে স্থানে যে মৌসুমে যে রোগ-বালাই হয়, সেই অঞ্চলে সে মৌসুমে যে ফল জন্মায়, সে ফলে তার উপশমের দাওয়াই থাকে।

তাহলে আমরা যে যে-ই দেশে অবস্থান করছি, সেই স্থানে যে সময়ে যে ফল জন্মাচ্ছে তা খাওয়া সে সময়ের রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। আর সবসময়ের জন্যে ফল তো আমাদের বল বাড়ানোর জন্যে আছেই। যে কারণে বলা হয়- শাকে বাড়ে মল, ফলে বাড়ে বল। মানে শাকের ফাইবার বা আঁশ শরীরের রেচনের কাজকে সাহায্য করে। আর ফল তাৎক্ষণিক প্রাণশক্তি এনে দেয়।

পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রভাবে বর্তমানে আমরা স্বাস্থ্যকর খাবারটি বেছে নেয়ার বদলে স্বাস্থ্যঘাতী খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। কিন্তু এখন সময় এসেছে সুস্থতার জন্যে প্রয়োজনীয় ও উপকারি খাবারটি বেছে নেয়ার। এজন্যে দুর্লভ কোনো খাবারের সন্ধান করার প্রয়োজন নেই বরং পর্যাপ্ত তাজা ফলমূল, সালাদ, আঁশযুক্ত শাক-সব্জি এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করে একজন মানুষ অনায়াসে সুস্থ থাকতে পারেন। আর শত সহস্র বছর ধরে আমাদের শরীরও এসব খাবারেই সুস্থ থাকতে অভ্যস্ত। এর ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস-এর মতো জীবনঘাতী রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকাসহ শরীরের ওজনও থাকে পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। রোগ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও হয়ে ওঠে কার্যকরী ও পূর্ণ কর্মক্ষম।

রোগ প্রতিরোধ করার শক্তি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা টের পেয়েছি করোনাকালে। যেহেতু করোনার কোনো ওষুধ নাই, যেভাবে সাধারণ ফ্লুরও কোনো ওষুধ নাই, আপনার প্রয়োজন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। যে-কোনো ভাইরাস, যে-কোনো সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে, সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ হচ্ছে ওষুধ নয়, ইনজেকশন নয়, টিকা নয়, সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ শক্তি হচ্ছে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যত সুন্দর হবে, যত ভালো হবে, তত আপনি রোগকে প্রতিরোধ করতে পারবেন। এবং রোগ আক্রমণ করলেও, ভাইরাস আক্রমণ করলেও দ্রুত আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই আক্রমণকারী শত্রুকে বিনাশ করে আপনাকে সুস্থ করে তুলবে। আমরা বলেছিলাম যে, প্রতিটি মানুষ দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বাড়াবেন আর সংক্রমণ সংক্রান্ত সাধারণ সতর্কতা মেনে চলবেন, তত সফলভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারবেন। পরম করুণাময়ের অনুগ্রহে তাই-ই হয়েছে। আমাদের দেশে করোনা সুবিধা করতে পারে নি।

পাশ্চাত্যে যেখানে করোনার সবচেয়ে হিংস্র সংক্রমণ হয়েছে, আগ্রাসী সংক্রমণ হয়েছে, সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধূমপায়ী, এলকোহল গ্রহণকারী, এনার্জি ড্রিংকস, সফট ড্রিংকস, ফাস্ট ফুড গ্রহণকারী- এদের ওপরেই আক্রমণটা হয়েছে জটিল। এবং অনেক ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমার পেছনে ফাস্ট ফুড, সফট ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস এবং ধূমপান, এলকোহল মারাত্মক ক্ষতিকারক। আসলে খাবারদাবার, সঠিক পুষ্টিবিজ্ঞানসম্মত খাবার গ্রহণের যে গুরুত্ব শুধু জানা নয়, সেটা অনুসরণ করার গুরুত্ব তখনই আমরা বুঝতে পারব যখন আমরা সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব বুঝতে পারব, সুস্থতার গুরুত্ব বুঝতে পারব।

সুস্বাস্থ্য যে কত বড় নেয়ামত এটা আসলে একজন মানুষ বোঝেন যখন তিনি অসুস্থ হন তখন। যখন তার শরীরে নানারকম রোগের উপসর্গ দেখা দেয় তখন। আসলে যদি শুধু অর্থের পেছনে ছোটেন, বিত্তের পেছনে ছোটেন, ব্যাংক ব্যালেন্সের পেছনে ছোটেন, স্বাস্থ্য-পরিবার-পরিজন-সমাজ–কোনোদিকেই না তাকান, অর্থ আপনাকে কখনো সুস্বাস্থ্য দিতে পারবে না। সুস্বাস্থ্য শুধু টাকা দিয়ে কেনা যায় না। এটার জন্যে প্রয়োজন শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং আত্মিক- প্রতিটি ক্ষেত্রে সুস্থ জীবনদৃষ্টি।

আমরা যেখানে বলছিলাম যে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানোর জন্যে, ঠিক করার জন্যে সুস্থতার জন্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হচ্ছে খাবার, খাদ্য। আর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার একটি আবশ্যক উপকরণ হচ্ছে ফল। সবসময় মনে রাখবেন- ফল মানে হচ্ছে দেশজ ফল, আঞ্চলিক ফল এবং মৌসুমি ফল। অর্থাৎ যে অঞ্চলে যে মৌসুমে যে ফল হয়, সেই অঞ্চলে সেই মৌসুমে সেই ফল আপনি যখনই খাবেন, সেই মৌসুমের যে রোগ, সেই রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা আপনার বেড়ে যাবে।

এবং ফলের রাজা আমরা জানি যে আম। কিন্তু ফলের মহারাজা, মহারাজ বলেন, সম্রাট বলেন, শাহেনশাহ বলেন, ফলের শাহেনশাহ হচ্ছে কাঁঠাল। এবং কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। এ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত ফল পাওয়া গেছে, তার মধ্যে কাঁঠাল হচ্ছে সবচেয়ে পুষ্টিকর এবং এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।

শুধু কাঁঠাল নয়, কাঁঠালের বিচিও সমান পুষ্টিকর! আসলে আপেল, আঙ্গুর, বেদানা-এগুলোর চেয়ে কাঁঠালের পুষ্টিগুণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অনেক অনেক গুণ বেশি। পাশ্চাত্যের মানুষরা এখন কাঁঠালের খোঁজ পেয়েছেন। যারা ভেগান, তারা কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবে এবং পাকা কাঁঠাল ফল হিসেবে খাওয়া শুরু করেছেন। এখন কাঁঠালের সিজন। প্রতিদিন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে কাঁঠাল খাবেন।

৮/১০ কোষ করে কাঁঠাল খান, দুইবেলা খান। কাঁঠাল একদিকে যেরকম বলকারক, আরেকদিকে রোগ প্রতিরোধক এবং তৃতীয় হচ্ছে ফর্সাকারক। কাঁঠাল ত্বকটাকে উজ্জ্বল করে, মসৃণ করে। কেউ কেউ বলতে পারেন যে কাঁঠাল গুরুপাক, হজম হতে চায় না। ফরমুলা কিন্তু খুব সহজ।

কাঁঠাল খান ৬ কোষ, ৮ কোষ অর্থাৎ আপনি যতটা প্রয়োজন কাঁঠাল খান। খাওয়ার পরে কাঁঠালের ভেতরে যে বিচি, একটা বিচি চিবিয়ে রস খান। যা কাঁঠাল খেলেন হজম হয়ে গেল। সারা বছর আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট থাকবে।

এখন আমের সিজন, আম খাবেন। পেয়ারার সিজনে পেয়ারা যখন পাওয়া যায় পেয়ারা খাবেন, কুল খাবেন। আমড়া খাবেন। আসলে এই যে আমড়া, যেখানে পাবেন আমড়া ধরে ধরে কামড়া। কামড়াবেন। চিবোবেন এবং দাঁতটাকে ব্যবহার করবেন। বাচ্চাদেরকেও দাঁত দিয়ে চিবোনোর জিনিস দেবেন।

শুধু কাটলেট খাওয়াবেন না, পুডিং খাওয়াবেন না, নরম নরম জিনিস খাওয়াবেন না। আখ চিবোতে বলবেন, পেয়ারা চিবোতে বলবেন, আমড়া চিবোতে বলবেন। মুরগির হাড় চিবোতে দেবেন। যত দাঁতটাকে ব্যবহার করবেন, তত দাঁত ভালো থাকবে, তত দাঁত সুন্দর থাকবে।

তারপরে আমলকি খাবেন, জাম খাবেন। এখন জামের সিজন, জাম খাবেন। যাদের ডায়াবেটিস আছে, জামের বিচি খাবেন। আয়ুর্বেদে ডায়াবেটিসের ওষুধের মূল উপাদান হচ্ছে জামের বিচি। আর যাদের ডায়বেটিস আছে তারা রাতের বেলা মেথি ভিজিয়ে রাখবেন আর সকালবেলা মেথি ভেজানো পানি খাবেন।

এবং যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা আরো চমৎকার জিনিস খেতে পারেন-করলা। প্রতিদিন সকালবেলা এক গ্লাস করলার জুস! বলবেন যে, তিতা। বরং বলুন যে টেস্টি তিতা। সুস্বাদু তিতা। তিতারও তো স্বাদ আছে! এবং কিশোরীরা তরুণীরা-যাদের ব্রন বেশি হয় বা একনির সমস্যা- প্রত্যেকদিন করলার জুস এক গ্লাস, ছয় মাস! ব্রন-একনি শেষ ইনশাল্লাহ এবং ত্বক মসৃণ হবে।

বেল খাবেন, কদবেল খাবেন। জাম্বুরা খাবেন। আসলে কমলা-মাল্টার চেয়ে জাম্বুরা অনেক অনেক উপকারি। এবং যাদের খুব বেশি ঠান্ডা লাগে, তারা এই যে সামনে জাম্বুরা আসছে, আগস্ট মাস থেকে জাম্বুরা পাওয়া যাবে, প্রত্যেকদিন অর্ধেক জাম্বুরা খাবেন। এবং শীতের সময় হালকা ফিনফিনে কাপড় পরেও আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন।

ঠান্ডা আপনাকে কাবু করতে পারবে না। আর এখন তো প্রায় সারা বছর আনারস পাওয়া যায়, আনারস খাবেন। জ্বর-সর্দির উপশম হবে।

অর্থাৎ যে মৌসুমে যে ফল পাওয়া যায়, সেই মৌসুমের ফল খাবেন। কিন্তু ফলের জুস বলে যা পাওয়া যায়, এগুলো নিজেরা খাবেন না। বাচ্চাকে খাওয়াবেন না। প্যাকেটজাত জুস বলে, টিনজাত জুস বলে যা পাওয়া যায় এটা বর্জন করবেন। ফ্রেশ ফল খাবেন। আর জুস যদি করতে হয় তো ফ্রেশ ফলের জুস করে খান। তবে জুসের চেয়ে চিবিয়ে খাওয়াটা অনেক অনেক বেশি উপকারি।

এছাড়া আপনার শরীরের এনার্জি লেভেল, শক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে ডাব খাবেন। প্রত্যেকদিন একটা করে ডাব খাবেন। আসলে ডাবের মধ্যে ১৯টি উপাদান রয়েছে। কচি ডাবের পানি এবং আপনার রক্তের যে ফ্লুইড, তরল অংশ- একই উপাদানে তৈরি। যার ফলে কখনো যদি স্যালাইন পাওয়া না যায়, ডাক্তাররা কচি ডাবের পানি সরাসরি আপনার ভেইনে প্রবেশ করিয়ে দেন। তো অতএব ডাব খাবেন।

আর সবসময়ের জন্যে সুপার ফ্রুট হচ্ছে খেজুর! অবশ্য সবসময় মনে রাখবেন বেশি খাওয়াটা সবসময়ই অপ্রয়োজনীয়, অপচয়। সবসময় পরিমিত খাবেন, প্রয়োজন মতো খাবেন। পরিমিত খাবেন।

যত পরিমিত খাবেন তত শক্তি বেশি পাবেন। যত বেশি খাবেন তত শক্তি কম পাবেন। কেন? এটা আনডাইজেস্টেড ফুড পার্টিকেলস হিসেবে বেরিয়ে যাবে। কারণ আপনার স্টমাকের ডাইজেশন করার একটা লিমিট আছে! ওর চেয়ে বেশি খাবার সে ডাইজেস্ট করতে পারে না। সেটাকে সে আনডাইজেস্টেড হিসেবে বের করে দেয়।

এবং শহরের মানুষদের অধিকাংশেরই যেটা হচ্ছে যারা বেশি খান তাদের সেভেনটি পার্সেন্ট খাবারই আনডাইজেস্টেড ফুড পার্টিকেল হিসেবে বেরিয়ে যায়। ওটা ডাইজেস্ট করতে পারে না। এজন্যে খাবার সবসময় পরিমিত খাবেন। এবং একটু ক্ষুধা থাকতে থাকতে খাওয়া শেষ করবেন। যে আরো একটু খেতে পারেন- এ সময় খাওয়াটা শেষ করবেন। তাহলে এই খাবার থেকে এনার্জি আপনি সবচেয়ে বেশি পাবেন।

আসলে মানুষ রহস্য বোঝে না। মানুষ মনে করে যে অনেক খেলেই হলো। আরে অনেক খেলে হলো না! খেয়ে ওখান থেকে যে পুষ্টি আছে পুষ্টিটা বডিকে নিতে হবে। বেশি যখন খাবার হয়ে যায় তখন কী হয়? তখন এই পুষ্টিটা নিতে পারে না! পুষ্টি কম নেয় সে। সে ক্লান্ত হয়ে যায় পুষ্টি নিতে নিতে এবং আনডাইজেস্টেড ফুড পার্টিকেল হিসেবে এগুলো বেরিয়ে যায়।

এজন্যে দিনে দুটো খেজুর। খেজুর হচ্ছে, ইনস্ট্যান্ট এনার্জির ভাণ্ডার! নিমিষেই প্রাণশক্তি। অনেক পরিশ্রম করেছেন, ক্লান্ত হয়েছেন, কী করবেন? দুটো খেজুর। খেজুর কীভাবে খাবেন? চিবিয়ে খাবেন। একটু বেশিক্ষণ ধরে চিবাবেন। একদম মানে ছাতু করে ফেলবেন! যেন কোনোকিছু না থাকে চিবাতে চিবাতে। তো এটার মজাটা কী?

মানে এই যে অনেকক্ষণ ধরে দাঁত নাড়ছেন চিবাচ্ছেন, ব্রেন মনে করছে আরে বাপরে বাপ অনেক খাচ্ছি অনেক খাচ্ছি অনেক খাচ্ছি। ব্রেন ইনফরমেশন পায় যে, অনেক হয়ে গেছে, ওহ অনেক হয়ে গেছে, আরে বাপরে বাপ, খালি চিবাচ্ছে দেখি। অনেক হয়ে গেছে। দুটো খেজুর আপনি দুই মিনিট, তিন মিনিট ধরে চিবান। তারপরে পানি খান। ইনস্ট্যান্ট এনার্জি। নিমিষে প্রাণশক্তি। নিমিষে তাজা আপনি। আমরা ইনস্ট্যান্ট এনার্জির জন্যে অনেক সময় গ্লুকোজ খাই।

আসলে ইনস্ট্যান্ট এনার্জির জন্যে এই খেজুর হচ্ছে ন্যাচারাল প্রাকৃতিক গ্লুকোজ ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজের ভাণ্ডার হচ্ছে খেজুর।

খেজুরের অনেক অনেক উপকার। যে-কোনো বয়সের মানুষ খেজুর খেতে পারেন! খেজুর ধমনিতে চর্বির স্তর জমতে দেয় না। কারণ খেজুরে ক্যাটাচিনস নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যেটা রক্তের যে

খারাপ কোলেস্টেরল, এটা কমায়। এবং এই যে ক্যাটাচিন আর কিসে আছে? গ্রিন টি সবুজ চায়ে। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধক। খেজুরে ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। এই ফ্ল্যাভোনয়েড এন্টি-অক্সিডেন্ট ভেতরে প্রদাহজাতীয় যত রোগ আছে, এই রোগটাকে সারাতে উপকারি। এবং খেজুরে যে এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং ফেনোলিক এসিড রয়েছে, এটাও এন্টি-অক্সিডেন্ট। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধক।

খেজুরে ভালো মাত্রায় পটাশিয়াম রয়েছে যেটা রক্তচাপ যাদের বেশি আছে, এই রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং খেজুরে যেটা হচ্ছে সেলেনিয়াম ম্যাঙ্গানিজ কপার ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে যেটা হাড়কে মজবুত করে এবং খেজুরে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে। যেটা দৃষ্টিশক্তির জন্যে উপকারি।

এবং খেজুরে থাকা বিভিন্ন ধরনের এন্টি-অক্সিডেন্ট এটা মস্তিষ্ককে শাণিত করে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়, মস্তিষ্ক উজ্জীবিত রাখে।

এবং খেজুরে যেহেতু প্রচুর ফাইবার আছে, আঁশ আছে, এজন্যে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্যে কাজ করে। এবং যাদের পাইলস আছে তারা নিয়মিত খেজুর খাবেন। এতে আপনার পাইলসের কষ্ট কমে যাবে।

খেজুর এমন একটা ফল যাতে যেহেতু প্রচুর ভিটামিনস রয়েছেন এটা যেমন প্রাণশক্তি বাড়ায় সেরকম ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় ত্বককে কমনীয় আকর্ষণীয় করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে এবং তারুণ্যের শক্তিকে অক্ষুণ্ন রাখে। অর্থাৎ কর্মক্ষমতা বাড়ায় খেজুর। আপনি কর্মক্ষম থাকবেন। আপনি অনেকক্ষণ কাজ করবেন কিন্তু আপনার এনার্জির কোনো কী হবে না? অভাব হবে না।

আজকে আমাদের আলোচনার উপসংহারে আমরা খুব সহজভাবে বলতে চাই, যে জাতিগতভাবে আমাদের এমনিতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। যেটা জন্মগত আমাদের। সেইসাথে আমরা যারা ধ্যান করি, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। দুই হচ্ছে, এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাটাকে আমরা যেন অটুট রাখি।

অটুট রাখার জন্যে দুটি কাজ করতে হবে। যে খাবারগুলো, যে পানীয়গুলো এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়- এটাকে বর্জন করতে হবে। এবং যে খাবারগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যে ফলগুলো সহজলভ্য, সে ফলগুলো খেতে হবে। শাক-সবজি, খাবার সেইভাবে খেতে হবে।

প্রত্যেক মানুষই আলাদা। অতএব সব স্বাস্থ্যকর খাবারই যে আপনার ভালো লাগবে তা নয়। অনেক সময় কোনো কোনো সবজি বা কোনো কোনো ফল কারো কারো স্যুট না-ও করতে পারে। অতএব আপনাকে সেই খাবারটি স্যুট করছে কি না, আপনার মন-মেজাজ দেহের সাথে খাবারটা খাপ খাচ্ছে কিনা, সেটাও আপনি দেখে নিতে পারেন। দেখে নিয়ে নিজে একটা সুষম সুন্দর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

তাহলে আমরা খুব সহজভাবে বলতে পারি যে-বিন্দু বিন্দু ছোট ছোট যত্ন স্বাস্থ্য গড়ে তোলে। আর বিন্দু বিন্দু অবহেলা-অযত্ন, অনাচার আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়, আপনার স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয়। নিজের সুস্থ থাকার দায়িত্ব আপনার নিজেকেই নিতে হবে।

রোগী যদি হন, দুর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে- আপনার তখন পরিচয় শুধুই রোগী। যত খ্যাতিমান হোন, যত নামী হোন, যত দামী হোন, যত বিত্তবান হোন, তখন আপনার একমাত্র পরিচয় শুধু রোগী। ক্লিনিক সে ওয়ান স্টার হোক আর ফাইভ স্টার হোক, ক্লিনিকের করুণার উপরেই তখন আপনাকে নির্ভর করতে হবে!

অতএব সুস্থতার দায়িত্ব নিজে নিন। খাবার এবং পানীয় যা বর্জন করা প্রয়োজন, বর্জন করুন। এবং যা খাওয়া প্রয়োজন, যা উপকারি সুন্দরভাবে, সুষমভাবে সেই খাবারগুলো গ্রহণ করুন। আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং আপনি আপনার জীবনকে সুন্দর গতিশীল আনন্দময় প্রশান্তিময় এবং সফল করতে পারবেন।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com