সরকারবিরোধীদের আন্দোলন-কর্মসূচির চেয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশি চাপে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনশীল রাখাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল। এর পরও বাজার কারসাজি করে ভোক্তাদের পকেট কেটে অতি মুনাফা লাভের পথ ছাড়ছেন না অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রত ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক নানা চাপ এরই মধ্যে সামলে নিয়েছে সরকার ও আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে এখন অনেকটাই নির্ভার ক্ষমতাসীনরা। তাদের এখন মূল চ্যালেঞ্জ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।
দলের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার মতে, আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে বড় অঙ্গীকার ছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা। সরকারের সামনে এখন এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। ডলারের দাম, বৈশ্বিক সংকটের সঙ্গে যোগ হয়েছে এ দেশের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজি। এগুলো মোকাবেলা করে বাজার স্বাভাবিক রাখা দুঃসাধ্য একটি কাজ।
দলের একাধিক সূত্র জানায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে তৃণমূলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। সামনে স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে মাঠে জনসংযোগ করছেন।
তাঁদের মানুষের নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সামনে পড়তে হচ্ছে। তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রীদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন যেভাবে হোক জিনিসপত্রের দাম কম রাখার ব্যবস্থা করতে।
গত ১০ মার্চ থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঢাকার ৩০টি স্থানে কম মূল্যে গরু, খাসি ও মুরগির মাংস, দুধ এবং ডিম বিক্রি শুরু করে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বেশ কয়েকটি স্থানে কম দামে মাছ বিক্রি করছে মৎস্য অধিদপ্তর।
রমজানে নিম্ন আয়ের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল, তেল, লবণসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সারা দেশে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীকে রমজান মাসে দুইবার ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
