1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

প্যারেন্টিং : সন্তানকে স্বপ্ন দিন! চাপিয়ে দিলেই বিপদ!

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৪১ বার দেখা হয়েছে

প্যারেন্টিং : সন্তানকে স্বপ্ন দিন! চাপিয়ে দিলেই বিপদ!

আমাদের সবারই লক্ষ্য যে নতুন প্রজন্ম যে আসছে পৃথিবীতে সে আমাদের স্বপ্নের রূপকার হোক।

আমরা সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তার চেয়ে স্ট্যাটাসের চিন্তা করি বেশি
কখন স্বপ্নের রূপকার হবে? যখন আমরা তাকে স্বপ্ন দিতে পারব।

আমরা আসলে তাদেরকে স্বপ্ন দেই না, আমরা চাপিয়ে দেই।

আমাদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসুবিধাটা কী? আমরা কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তার চেয়ে চারপাশে আমার স্ট্যাটাসের চিন্তা করি বেশি। অ্যা ভাবীকে কী বলব? প্রতিবেশীকে কী বলব? আমার মেয়ে কোথায় ভর্তি হয়েছে কী বলব? স্ট্যাটাসের ব্যাপার!

সন্তানকে নিজের সম্পত্তি মনে করা। আমরা যেভাবে সম্পত্তির মতো তাকে আঁকড়ে রাখা এটা আসক্তি।

আবার সন্তানকে আমার স্ট্যাটাসের কারক বানানো- এটাও হচ্ছে সন্তানের ওপরে জুলুম করা!

আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ভালো মানুষ
এবং অনেক ঘটনা এসছে। গতকাল আমরা বলছিলাম যে দুই ছেলে, শেষ পর্যন্ত মা-বাবার যে চাপ, যে এই করতে হবে, সেটা সইতে না পেরে আত্মহত্যাই করেছে। মায়ের চাপ যে অমুক জায়গায় ভালো স্কুলে ভর্তি হতে হবে।

আরে ভালো স্কুল কী? প্রত্যেকটা স্কুল ভালো স্কুল। সবসময় আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত যে ভালো মানুষ হতে হবে তারা।

এবং যে-কোনো স্কুল থেকে পড়ে সে ভালো রেজাল্ট করতে পারে।

সন্তান যখন চাপ অনুভব করবে, আপনার প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা হারিয়ে ফেলবে
অতএব সন্তানকে নিজের স্ট্যাটাস সিম্বলের একটা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

সন্তান তখন চাপ অনুভব করবে এবং আপনার প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধটা সে হারিয়ে ফেলবে। আপনাকে সে ভালবাসবে না।

আর এখন সন্তানদের সবচেয়ে বড় অসুবিধাটা কী হয়েছে? যে সে চাপ নিতে পারে না।

কারণ আমরা তাকে ছোটবেলা থেকে চাপ নিতে শিখাই নি। অন্য কোনো চাপ দেই নি শুধুমাত্র পড়াশোনা ছাড়া।

সন্তান যখন গর্ভে আসবে ইতিবাচক কথা শুনবেন ও বলবেন
প্যারেন্টিংয়ের বেসিক ফর্মুলা তো আমাদের কোর্সের চতুর্থ দিন আমরা দিয়ে দেই। যে সন্তানকে কী করবেন?

তো অতএব সবসময় মনে রাখতে হবে ফর্মুলা খুব সিম্পল। সন্তান যখন গর্ভে আসবে, কী করবেন? ধর্মবাণী শুনবেন অটোসাজেশন শুনবেন ইতিবাচক কথা শুনবেন ইতিবাচক কথা বলবেন। ঘরে কোনো নেতিবাচক কথা বলবেন না, ঝগড়াঝাঁটি করবেন না।

শুধু বললে তো হবে না, ইউ হ্যাভ টু ফলো ইট। তো অতএব সবসময় ইতিবাচক থাকা, সন্তানের ব্যাপারে বিশ্বাসী থাকা। সন্তানকে বিশ্বাস করতে হবে ইতিবাচক থাকতে হবে।

যদি ভালো জিনিসও চাপিয়ে দেন, সে এটাকে প্রথম ছুঁড়ে ফেলবে
এবং সন্তানকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে কিন্তু সে যেন ফিল না করে যে চাপ দেয়া হচ্ছে। যদি ভালো জিনিসও চাপিয়ে দেন সে এটাকে প্রথম ছুঁড়ে ফেলবে। কারণ হিউম্যান নেচার হচ্ছে সে চাপিয়ে দেয়া জিনিস রাখতে চায় না।

যেরকম আমাদের পরিচিত একজন। তো তার বাবা মেজর ছিলেন। ব্রিটিশ আর্মির মেজর। তিনি ধার্মিক হয়ে গেলেন। ধার্মিক হয়ে বাচ্চাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে শীতের রাতেও মানে সকালবেলা ঐ সময় ওঠে কী করতে হবে? ঠান্ডা পানিতে ওজু করে নামাজ পড়তে হবে।

এবং তিনি যেহেতু মানে তার মেজাজ ঐরকম। বাচ্চারা কী করবে? বাচ্চারা গ্রাম থেকে শহরে এলো, হোস্টেলে এলো। প্রথম কাজ করল কী? নামাজ ছেড়ে দিল। প্রথম ফার্স্ট ওয়ার্ক হচ্ছে নামাজ ছেড়ে দেয়া। নামাজের চেয়ে ভালো কাজ তো কিছু নাই। কিন্তু বাবা তার ওপরে চাপিয়ে দিয়েছিলেন, তাকে উদ্বুদ্ধ করেন নাই।

তো আসলে সন্তানের ওপর কোনোকিছু চাপাবেন না, উদ্বুদ্ধ করবেন।

তাকে ফিল করাতে হবে যে তার চাওয়াটাই আপনি পূরণ করছেন
খুব সিম্পলি বলি, সন্তানকে বলছেন যে এখন ওঠো, এখন ঘুম থেকে ওঠো, মশারিটা ওঠাও।

আচ্ছা মশারিটা কি খুলে দেবো? টেইক পারমিশন। সে কী বলবে মা দাও। তুমি বললে দেবো।

সন্তান তো জানে যে এখন বাবা বা মা মশারি খুলবে। কিন্তু আপনি যদি তার কাছ থেকে জিজ্ঞেস করেন যে মা মশারিটা খুলে দেবো? বাবা মশারিটা খুলে দেবো? আপনি কি ছোট হয়ে যাচ্ছেন? ক্যান ইউ আর টেকিং হার পারমিশন হিজ পারমিশন। সে-তো সম্মানিত বোধ করছে। যে মা আমাকে জিজ্ঞেস করে খুলছে। আপনার এক মিনিট সময় দেরি হবে কিন্তু আপনি তার হার্টটাকে জয় করবেন। অর্ডার না সাজেশন। সে তাকে ফিল করতে হবে যে তার চাওয়াটাই আপনি পূরণ করছেন।

প্রত্যেক স্ত্রী স্বামী সন্তান পরিবারে সম্মান চায়
কিন্তু আপনাকে কৌশলী হতে হবে যে, না, আপনি তার চাওয়াটাকে না আপনার চাওয়াটা পূরণ করছেন তার সম্মতিতে। এই টেকনিকটা হচ্ছে ইম্পর্টেন্ট। কারণ প্রত্যেক সন্তান প্রত্যেক স্ত্রী প্রত্যেক হাজবেন্ড সে পরিবারে কী চায়? সে সম্মান চায়। যে স্ত্রী তাকে সম্মান করুক। স্ত্রী চায় যে স্বামী তাকে সম্মান করুক সন্তান চায় যে বাবা তাকে আদর করুক উইথ গুরুত্ব দিয়ে অর্থাৎ তাকে সম্মান দিয়ে তাকে মর্যাদা দিয়ে।

তো সন্তানকে একটু মর্যাদা দেন একটু মমতা আপনি করবেন সেটাই যা আপনি চাচ্ছেন কিন্তু টেকনিকেলি তাকে আটকাতে হবে। যে মায়ের কথা যে শুনতে হয় এটা তাকে প্রথম বোঝাতে হবে। সে একটা কাজ করতে চাচ্ছে না, তাকে হাত বুলান মাথায় যে বাবা মা মায়ের কথা শুনতে হয়। মা বললে এটা করতে হয় তুমি তো ভালো ছেলে ভালো মেয়ে। অ্যা তুমি করো। তুমি তো মায়ের কথা শোনো সবসময়। এখনো মায়ের কথা শোনো তুমি করো। অর্থাৎ উদ্বুদ্ধ করা তাকে অনুপ্রাণিত করা। এই অনুপ্রাণিত করাটা হচ্ছে খুব ইম্পর্টেন্ট।

লক্ষ্য দিবেন একদম ছোট সময়, যখন দোলনাতে দুলছে তখন
তাকে লক্ষ্য- লক্ষ্য দেয়াটা হচ্ছে খুব ইম্পর্টেন্ট। এটা বড় হয়ে যাওয়ার পরে না। ছোট সময়, একদম ছোট সময়। মানে প্রি ওয়ানের আগে এবং যখন দোলনাতে দুলছে তখন, যখন সে বুঝতে শিখছে তখন। যখন সে কথা শুনতে শিখছে, কথা শুনে রেসপন্ড করতে মানে শুরু করছে তখন। সে শব্দের অর্থ বুঝবে না কিন্তু কথাটা তার কান দিয়ে ব্রেনে গিয়ে জমা হয়ে থাকবে। পরে সে রিকালেক্ট করতে পারবে যে এরকম কথাতো আমি আগেও শুনেছিলাম।

সন্তানকে সময় ও মনোযোগ দেয়াটা আপনার জীবনের বেস্ট বিনিয়োগ
অর্থাৎ সন্তানকে যতটা সময় দিতে পারবেন, যতটা মনোযোগ দিতে পারবেন আপনার জীবনে এর চেয়ে বেস্ট বিনিয়োগ আর কিছু নাই। কারণ সন্তান হচ্ছে আপনার ফিউচার। অ্যা মোবাইল আপনার ফিউচার না। ঐ কোরিয়ান শো আপনার ফিউচার না।

আজকে কোরিয়ান শো আছে, অ্যা পাঁচ বছর পরে এটা মুছে যাবে। কারণ এর আগে বহু শো আমরা দেখেছি। আসছে মুছে গেছে।

মাইকেল জ্যাকসনের নামে পাগল ছিল! এখন মাইকেল জ্যাকসনকে কে দেখে? মুছে যাবে! কিন্তু সন্তান তো রয়ে যাবে।

তো অতএব সন্তানকে সময় দেয়াটা হচ্ছে একজন মায়ের জন্যে সবচেয়ে বড় বিনোদন। এবং একজন বাবার জন্যে সবচেয়ে বড় বিনোদন হচ্ছে সন্তানকে সময় দেয়া। মনোযোগ দেয়া তাকে গুরুত্ব দেয়া। তার কথা শোনা তাকে উদ্বুদ্ধ করা এবং সন্তানের বন্ধু হওয়া!

সন্তান যদি আপনাকে বন্ধু মনে করে, আর কিছু লাগবে না
আর কিছু লাগবে না! সন্তান যদি আপনাকে তার বন্ধু মনে করে, সন্তান যদি আপনার ওপরে ভরসা করে সন্তান যদি মনে করে যে না আমার ওপরে কোনোকিছু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না, আপনার আর কিছু লাগবে না। সন্তান বড় হবে। নিজের শক্তিতে তখন সে বড় হবে। রস নেবে আপনার কাছ থেকে শক্তি নেবে আপনার কাছ থেকে কিন্তু বড় হবে সে আপনার চাওয়ামতো কিন্তু নিজের শক্তিতে।

[প্যারেন্টিং ওয়ার্কশপ, ২৭ মে ২০২৩]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com