1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২২ অপরাহ্ন

প্রবীণসেবা কী? সেবার সুযোগ বাড়াবেন কীভাবে?

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯৯ বার দেখা হয়েছে

আমাদের বাসাতে গত পাঁচ বছর যাবৎ একজন খালা কাজ করত। খালার বর্তমানে কোমর ব্যথা, এজন্যে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে ও বসে কাজ করতে পারে না। ডাক্তার কয়েক মাস রেস্টে থাকতে বলেছেন।

এজন্যে এক মাস হলো তিনি একজন বেশ বয়স্ক (৬০ বছর বয়স) কাজের খালাকে আমার বাসায় দিয়েছে। ওনাকে দিয়ে হালকা কাজ করাই। তারপরও ওনাকে দিয়ে কাজ করাতে আমার খারাপ লাগে। খালার তিন ছেলে, কেউ ওনাকে দেখে না। ঘরে বৃদ্ধ স্বামী আছে, বাধ্য হয়ে কাজ করে।

আমি খালাকে বলেছি, আমাকে একজন মানুষ দেন। আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য করব।

১. হাঁটা চলাফেরায় সক্ষম, কাজে অক্ষম!

এক হচ্ছে যে, বয়স ৬০ যদি মহিলার হয়ে থাকে, তার স্বামীর বয়স নিশ্চয়ই ৬০-এর বেশি হবে বা সমানও হতে পারে আরকি। তার স্বামী কর্মক্ষম না, কাজে অক্ষম। এবং ওনাকে দিয়ে কাজ করাতে মায়া লাগছে মানে উনিও যে খুব একটা কাজ করতে পারেন তা-ও না। কিন্তু যে-কাজ করেন, সেই কাজ দিয়েই তাকে চলতে হয়।

আসলে ধরুন, আমাদের যে প্রবীণসেবা কেন্দ্র রয়েছে, প্রবীণসেবা কেন্দ্রে তো তারা যেতে পারেন। তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করুন। তারা প্রবীণসেবা কেন্দ্রে থাকবেন যতদিন আল্লাহ তাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন।

শুধু আমাদের ওখানে একেবারে যাদেরকে মেডিকেলি সেবা করতে হবে সেটা আমাদের অসুবিধা। কারণ ওখানে সবাইকে মেডিকেলি সেবা করার মতো অবস্থা নাই। কিন্তু যারা একটু চলতে ফিরতে পারেন, তাদের ছোটখাটো চিকিৎসা, অর্থাৎ ঐ বয়সের যে চিকিৎসা, সেগুলোর ব্যবস্থা আমাদের রয়েছে।

আর থাকা-খাওয়া! তারা খেলে আমরা খাবো আরকি। খাওয়া কোনো ব্যাপার না। খাওয়ার ব্যাপারটা হচ্ছে- প্রত্যেকের রিজিক যেখানে যায়, তার রিজিক নিয়ে যায়। আপনি ইচ্ছে করলে খাওয়াতে পারবেন না, যদি রিজিকে না থাকে। আমি নিজে দেখেছি। ইচ্ছে করলেই খাওয়া যায় না। এবং ইচ্ছে করলেই মানে খাওয়ানোও যায় না।

২. বয়স ৫০ থেকে শুরু এবং তার বেশি যত হয়…

আমাদের লামাতে প্রবীণসেবা কেন্দ্র রয়েছে, ওখানে তো আমরা এরকম যারা বয়স্ক যারা প্রবীণ তাদেরকে আমরা সেবা দিচ্ছি। এবং ওখানে আমরা ৫০/৬০/৭০ বাড়লে ১০০/২০০ ও আমরা বাড়াব। যত বাড়ানোর প্রয়োজন হবে আমরা বাড়াব।

অতএব, আপনার এই খালা এবং খালু! কোনো অসুবিধা নাই। ওখানে অনেক আছেন। আবার যদি তাদের ছেলেমেয়েরা কখনো তাদের দেখতে চায়, গিয়ে দেখে আসবে। অথবা ছেলেমেয়েরা যদি কিছুদিনের জন্যে ওখান থেকে আনতে চায়, নিয়ে আসবে। আমাদের এই ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নাই।

আবার আমরা ওখানে ছুটিও দিয়ে থাকি এবং অনেক সময় ছুটিতে যাওয়ার সময় তাদেরকে কী খাবে সেই খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করে দিতে হয়। কেন? আমরা মানবিক থাকতে চাই। আমরা কোনো জেলখানায় নিয়ে যাচ্ছি না। থাকবে ওখানে, খাবে ওখানে সবার সাথে।

এবং আরও ৫/১০ জন, ১৫ জন, ২০ জন তাদের সাথে গল্প করবে, খাওয়া-দাওয়া করবে। নামাজ-কালাম পড়তে চায়, পাশে মসজিদ আছে। কোনো অসুবিধা নেই। সেখানে ইবাদত-বন্দেগী করে কাটাতে পারবেন।

আর আল্লাহ তায়ালা যখন নিয়ে যাবেন, তার যদি নিয়ে আসার কেউ না থাকে আমাদের তো সেখানেও কোনো অসুবিধা নাই। আমাদের সমস্ত রকম ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রাথমিক যে-কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থাও আছে প্রবীণসেবায়…

আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি যে, বাংলাদেশে আমরা একমাত্র একটি সংগঠন যে মাতৃমঙ্গল থেকে অর্থাৎ ভ্রুণ থেকে শুরু করে কবর পর্যন্ত আমরা কাজ করছি।

অতএব, কখনো মন ছোট করবেন না। পাহাড়ে তো ধরুন মানে অনেক বৃদ্ধ, অনেক প্রবীণ আছেন, তারা যে কী পরিমাণ দোয়া করেন এটা বলে বোঝাতে পারব না।

ধরুন একজন বৃদ্ধ, চোখে দেখে না। তাকে যখন চিটাগংয়ে এনে অপারেশন করে সে যখন তার নাতির মুখটা দেখে, সে যখন তার ছেলের মুখটা দেখে দীর্ঘদিন পরে, এই আনন্দটা কী কাউকে বলে দিতে হয়? এবং তখন কী দোয়ার কথা কাউকে বলতে হয়? দোয়ার কথা বলতে হয় না। দোয়া এমনি-ই আসে।

অতএব, যারা প্রবীণ আছেন, যাদের চোখের সমস্যা আছে তাদের প্রয়োজন হলে আমরা সেই ট্রিটমেন্টও দিতে পারি। অর্থাৎ আমাদের পক্ষে সম্ভব এমন সেবার যত ক্ষেত্র আছে, সবক্ষেত্রেই আমরা আমাদের কাজগুলো করতে চাই এবং আন্তরিক সেবা দিতে চাই।

এটার জন্যে কখনো চিন্তা করবেন না। সবসময় শুধু বিশ্বাস রাখবেন যে, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দিয়ে এই কাজটা করাচ্ছেন। অতএব, বাকি জিনিসগুলো আল্লাহ-ই ব্যবস্থা করে দেবেন। শুধু আপনাকে একটু উদ্যোগী হতে হবে। আর কিচ্ছু না।

[প্রজ্ঞা জালালি, ০২ নভেম্বর ২০২৪]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com