মা আমার বাবার সাথে কী অজ্ঞাত কারণে কথা বলা পছন্দ করে না! বাবা বয়স্ক ৭২ বছর বয়স। সন্তান হিসেবে খোঁজখবর নেয়ার জন্যে ফোন করতে হয়।
আমার মা নানান অজুহাতে আব্বুকে ফোন রিসিভ করতে দেয় না। উল্লেখ্য আমার মা দজ্জাল প্রকৃতির। আমি তো ভয় পাই বাবাও আম্মাকে ভয় পায়। একটু ১৯/২০ হলেই খুব সিন ক্রিয়েট করে।
মা সবকিছু নিজের পছন্দমতো চায়। এমনকি আমার চাচা-চাচী, ফুপু এদের সাথে কথা বলাও আম্মা পছন্দ করে না। এমতাবস্থায় আমি কী করব গুরুজী? মায়ের খুশিটা দেখব না সন্তান হিসেবে বাবার খোঁজখরব নেয়া যা আমার দায়িত্ব সেটা পালন করব?
আপনার পরামর্শের ওপর নির্ভর করছে বাবার সাথে কথা বলা না বলা!
মাকেও খুশি করবেন, বাবার প্রতি যে দায়িত্ব সেটাও পালন করবেন। বাবার সাথে যোগাযোগ করবেন নানান কায়দা-কৌশল উসিলায় যোগাযোগ করবেন।
যখন দেখা করার সুযোগ হবে দেখা করবেন এবং দেখা করার সাথে সাথে আবার রেডি থাকবেন মায়ের বকা শোনার জন্যে। এবং বকা শুনতে শুনতে মনে মনে ভাববেন এই বকাগুলো বকা না, এই বকাগুলো দোয়া। কারণ মা-ও আপনার বাবা-ও আপনার। অতএব সব দায়িত্বই আপনাকে পালন করবেন।
এবং এটাকে সহজভাবে করবেন। বাবার সাথে যোগাযোগ করবেন এবং সবসময় মায়ের বকা খাওয়ার জন্যে রেডি থাকবেন।
এবং মুখে হাসতে যাবেন না মনে মনে হাসবেন যে, মা বকছ তোমার এটা তো বকা না এটা একেবারে বেলি ফুলের তুবড়ি এসে পড়ছে। আমার খুব আনন্দ লাগছে মনে হচ্ছে, এটা তোমার দোয়া।
সবকিছুর পরও মা মা-ই! মায়ের কোনো বিকল্প হয় না। এখন তো মা আছে বাবা আছে, মা বলতে পারছেন বাবা বলতে পারছেন।
একদিন হবে যখন বাবাও থাকবে না, মা-ও থাকবে না তখন বকা দেয়ার কেউ থাকবে না ভয় পাওয়ার কেউ থাকবে না।
সে সময়টা যে আপনার খুব ভালো লাগবে তাও না। একটা শূন্যতা ফিল করবেন।
অতএব এই বকাটাকে খুব সহজভাবে নেবেন।
আসলে কিছু কিছু জিনিসকে আমরা খুব সহজভাবে নিতে পারি না এটা হচ্ছে সমস্যা। আরে! মা যে বকছে এটা তো অভ্যাসবশত বকছে। এই বকা তো বকা না। এটা হচ্ছে ইনস্ট্যান্ট রিএকশন অটো। মানে অনেককিছু আছে না অটো।
যেরকম ধরুন যে, আগুনে একটু হাত লাগলে হাতটা কী হয়? অটোমেটিক কিন্তু সরে যায়। তো মায়ের বকাটাও হচ্ছে অটো। তো অতএব এই অটোটাকে অটো নেবেন এবং হাসতে হাসতে নেবেন।
[প্যারেন্টিং ওয়ার্কশপ, ২৭ মে ২০২৩]