শয়তানের গতি কিন্তু মানুষের চেয়ে বেশি না
আমরা আসলে হেরে যাই, বাঁচতে পারি না শয়তানের হাত থেকে। কী কারণে? শয়তানের গতি কিন্তু মানুষের চেয়ে বেশি না, শয়তানের শক্তি মানুষের চেয়ে বেশি না। শয়তানের বুদ্ধি যদি মানুষের চেয়ে বেশি হতো তাহলে শয়তান বিজয়ী হতো মানুষ পরাজিত হতো।
কিন্তু মানুষ বয়সে ইয়ংগার হয়েও- শয়তানের চেয়ে তো ইবলিসের চেয়ে মানুষের বয়স কী ছিল? কম ছিল। শুধু জ্ঞানে-বুদ্ধিতে এই মস্তিষ্কের কারণে সে শয়তানের ওপরে বিজয়ী হয়েছে, শয়তান হেরে গেছে। শয়তানের গতি মানুষের গতির চেয়ে কম।
মানুষও ধরা খায় কারণ সে বারবার পেছন দিকে তাকায়
কিন্তু মানুষ খালি হারে কেন? বার বার শয়তানের দিকে তাকায়, পেছন দিকে তাকায় সেজন্যে। হরিণ যে কারণে বাঘের হাতের ধরা খায়, মানুষও একই কারণে ব্যর্থতার কাছে ধরা খায়। সে বারবার পেছন দিকে তাকায়।
একজন যোদ্ধা যদি পেছন দিকে তাকায় বারবার, সে কখনো যুদ্ধ করতে পারে না। নেতিবাচকতা নেতিবাচকতা হচ্ছে, পেছন দিকে তাকানো। নেতিবাচকতা হচ্ছে বাঘ, আর আপনি হচ্ছেন দ্রুতগতির হরিণ।
কিন্তু নেতিবাচকতা বারবার আপনাকে পেছন দিকে তাকাতে বাধ্য করে বা আপনি মনোজাগতিকভাবে প্রথম পরাজিত হন। বার বার শুধু পেছন দিকে তাকান।
মেষশাবককে কিন্তু নেকড়ে ধরে নি, সে শুধু দূর থেকে নেকড়েকে দেখেছে
ইবনে সিনা যাকে ইউরোপে আবিসিনা বলে, যার ক্যানন অব মেডিসিন এটা ৫০০ বছর ইউরোপে টেক্সটবুক ছিল মেডিসিনের। তো তিনি প্রথম এ এক্সপেরিমেন্টটা করেন! যে, দুটো কী শাবক? মেষশাবক… মেষ হচ্ছে সবচেয়ে নিরীহ প্রাণি। দুটো মেষশাবককে দুই জায়গায় রাখা হলো। একটা মেষশাবক একটা নেকড়েকে দেখতে পায়। দুইজনই খাঁচায় আছে। নেকড়েও খাঁচায় আছে। নেকড়ে কিন্তু ঐ মেষশাবককে ধরতে পারবে না, খাঁচায়।
একটা মেষশাবক নেকড়েকে দেখতে পায়, আরেকটা মেষশাবক নেকড়েকে দেখতে পায় না।
একমাস পরে যে মেষ শাবকটা নেকড়েকে দেখতে পায় সে দুর্বল হতে হতে মারা গেল। আর যে নেকড়েকে দেখতে পায় না সে তরতাজা সবল থাকল।
যে মেষশাবক মারা গেল, তাকে কিন্তু নেকড়ে ধরে নি। সে দূর থেকে শুধু নেকড়েকে দেখেছে। বারবার তার মনে হয়েছে, এই বুঝি নেকড়ে আমাকে এই বুঝি ধরল এই বুঝি ধরল এই বুঝি ধরল।
প্রমাণ করলেন যে নেতিবাচকতা কীভাবে জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে
কারণ বারবার নেকড়ে স্বাভাবিকভাবে সে দেখছে, নেকড়ের দিকে বারবার দৃষ্টি যাচ্ছে, তাকাচ্ছে। তার ভেতরে স্ট্রেস তৈরি হচ্ছে। এবং যখন স্ট্রেস তৈরি হচ্ছে, স্ট্রেসজনিত যত ব্যাধি সেই ব্যাধিতে সে আক্রান্ত হচ্ছে এবং সে মারা গেল। এটা ইবনে সিনার ফার্স্ট এক্সপেরিমেন্ট।
এবং এটা থেকে তিনি প্রমাণ করলেন যে, আসলে যে ভয়-আতঙ্ক বা নেতিবাচকতা কীভাবে একটা জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
অতএব যখন লক্ষ্যস্থির করবেন লক্ষ্যের বিপরীত কাজ করা থেকে সবসময় বিরত থাকবেন। কিন্তু লক্ষ্য স্থির করার আগে লক্ষ্যটা আপনার জন্যে কতটুকু কল্যাণকর এটাও আপনাকে চিন্তা করতে হবে।
[গ্রাজুয়েট রিজুভিনেশন, ২১ অক্টোবর, ২০২২ থেকে ২৪ অক্টোবর ২০২২]