তাই যদি হওয়া যেতো তাহলে ইব্রাহীম ও ইয়াকুব নবীর সন্তানগ তো জন্মসূত্রে মুসলমান! তাহলে তাদের সন্তানদের কেন বললেন? তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করনা।
আল কুরআনে বর্ণিত হয়েছেঃ-
অর্থঃ> আর এরই আদেশ করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।
[সূরা: বাকারা, আয়াত নং-১৩২]
আবার,
কুরআনের অন্য এক আয়াতে আল্লাহ ঈমানদারগণকে বলেছেনঃ-
অর্থ> হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যু বরণ করনা।
[সূরা: ইমরান, আয়াত নং-১০২ ]
:- ঈমানদার এমন একজন অনুগত ব্যক্তি, যিনি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহ ও রাসূলের আদেশ নির্দেশ মেনে চলে।
সেই ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ বললেন; মুসলমান না হয়ে মৃত্যু বরণ করনা।
কেন বললেন ?
কোন কারণে বললেন ?
এর কারণ আমরা একবারও কি জানতে চেয়েছি ?
মুসলমান শব্দের ধর্মীয় অর্থ হলো আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে সমর্পণ বা উৎসর্গ করা।
যিনি আল্লার রাস্তায় নিজেকে সমর্পণ করেন তিনিই আত্মসমর্পণকারী অর্থাৎ মুসলমান।
আমরা সকলেই নিজেকে মুসলমান অর্থাৎ আত্মসমর্পণকারী দাবি করি।
প্রশ্ন হচ্ছে,– আমরা কি আসলেই মুসলমান অর্থাৎ আত্মসমর্পণকারী ?
আল কুরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ-
অর্থ:-মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি বললেই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে, আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না ?
[সূরা-আনকাবুত। আয়াত নং-২]
মৌখিক ভাবে ঈমান এনেছি বললেই যেমন ঈমানদার হওয়া যায় না, তেমনি মৌখিক ভাবে মুসলমান দাবি করলেই মুসলমান অর্থাৎ আত্মসমর্পণকারী হওয়া যায় না। মানুষের চারিত্রিক গুণাবলী এবং ধর্মীয় বিধান পূর্ণ পালনের মধ্যেই প্রকাশিত হয় কে মুসলমান অর্থাৎ আত্মসমর্পণকারী।
আত্বসমর্পণ করার ছোট একটি উদাহরণ:–
একজন সন্ত্রাসী যদি আত্মসমর্পণ করে, তাহলে তার সমস্ত অস্ত্র থানায় বা প্রশাসনের কাছে জমা করতে হয় এবং প্রতিজ্ঞা করতে হয় যে, সে কখনো কোনরকম খারাপ কাজ করবে না। উক্ত সন্ত্রাসী যদি তার অসৎকর্মগুলো সম্পুর্ণভাবে ত্যাগ করতে পারে,তবেই সে সামাজিক দৃষ্টিতে আত্মসমর্পণকারী।
তেমনি ধর্মপথে অগ্রগামী ব্যক্তি যদি আত্মসমর্পণকারী হতে চায়, তাহলে তাকেও কোন এক কামেল মুর্শিদের কাছে গিয়ে প্রতিজ্ঞা করতে হয় এই বলে যে, সে কখনো খারাপ কাজ করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, সুদ-ঘুষ খাবে না, পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না, আল্লাহ ও রাসূলের পূর্ণ আনুগত্য করবে ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। উক্ত প্রতিজ্ঞাপালনকৃত ব্যক্তিকেই বলা হয় মুসলমান অর্থাৎ আত্মসমর্পণকারী। এই জন্যই কুরআনে বর্ণিত হয়েছে যে,, মুসলমান না হয়ে মৃত্যু বরণ কর না।
চলবে