আসলে এই ট্রমা কাটানোটাই হচ্ছে খুব ইম্পর্টেন্ট।
আসলে বাচ্চাদের জন্যে খুব মায়া হয়, খুব ফিল করি আমি।
চিঠি: এই কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে যখন দেখি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হচ্ছে, সেসব দৃশ্য দেখে মানসিকভাবে অশান্ত হয়ে পড়ি। যখন দেখি আমার ভার্সিটিতেও হামলা হয়েছে, তখনো আমার বাবা-মা আমাকে আন্দোলনে যেতে দেয় নি। রাতে ঠিকমতো ঘুম হতো না। পড়ালেখায় মনোযোগ আসে না। পরে আমি এক-দুই দিন বাসায় না জানিয়ে আন্দোলনে গিয়েছিলাম, সেই গত দুইমাস ধরে এখনো পড়ায় মন বসাতে পারি না। এবং মনকে পুরোপুরি শান্ত করতে পারছি না এ থেকে পরিত্রাণের উপায় জানতে চাই।
লামাতে কোয়ান্টায়নে চলে যান, অস্থিরতা কিচ্ছু থাকবে না
উত্তর: কিচ্ছু না। ভেরি ইজি। কোয়ান্টায়ন হচ্ছে সামনে। লামাতে কোয়ান্টায়নে চলে যান। অ্যা তিন দিন সেখানে থাকেন, অ্যা মৌন থাকেন, প্রকৃতির সাথে থাকেন। অ্যা কোরআনের সাথে থাকেন। হাদীসের সাথে থাকেন। এই যে অস্থিরতা এটা কিচ্ছু থাকবে না। কারণ এখন কী করতে হবে?
এখন বড় দায়িত্বের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে
এখন নিজেকে বড় দায়িত্বের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে এবং সেটার জন্যে পড়াশোনা এবং নিজের যোগ্যতা-দক্ষতা ডেভেলপ করার জন্যে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। তাহলে আপনি যা চাচ্ছেন, আপনার স্বপ্নটা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হবে। কারণ আপনার স্বপ্নের রূপকার আপনাকে হতে হবে। এবং সেটার জন্যে আপনার জ্ঞান দরকার, দক্ষতা দরকার। এবং এই জ্ঞান এবং দক্ষতা তখন সৃষ্টি হবে যখন আপনি আপনার পড়াশোনার মধ্যে মনোনিবেশ করবেন। কারণ আপনার ফিল্ডে, আপনার ক্ষেত্রে আপনাকে নেতা হতে হবে। এবং নেতা হওয়ার জন্যে মনোযোগ দরকার। যে সাবজেক্টে আপনি মনোনিবেশ করতে চান, যে বিষয়ে মনোনিবেশ করতে চান, সে বিষয়ে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। এবং এটাই হচ্ছে এই সময়ে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।
সবকিছুর পরেও ছাত্ররা শিক্ষককেই মানে, তাদের কথাই শোনে
এবং এজন্যেই শিক্ষকদের দায়িত্ব অনেক অনেক বেশি।
কারণ শিক্ষাঙ্গণেও এক ধরেনের ট্রমা বিরাজ করছে। তো কী করতে হবে? শিক্ষকদের এটা কাটিয়ে উঠতে হবে যে না ঠিক আছে, যা হয়েছে ইটস পাস্ট, এখন আমাকে এই করতে হবে। আমার এই পজিশন, এই পজিশনে আমি এই করতে পারি। এবং এই করতে হবে। আপনি দেখবেন যে শিক্ষকরা যখন নেতৃত্ব দেবেন, কারণ ছাত্রদের আসলে যতকিছু হোক- সবকিছুর পরেও ছাত্ররা শিক্ষককেই মানে, যতটুকু অনুসরণ করে শিক্ষকের কথাই অনুসরণ করে। যতটুকু শোনে শিক্ষকের কথাই শোনে।
তরুণদেরকে মেডিটেশনে ও সেবামূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করুন
অতএব সেইজন্যে খুব বিশ্বাসের সাথে, দৃঢ়তার সাথে- আমাদের যারা শিক্ষক রয়েছেন তারা খুব শান্তভাবে, দৃঢ়তার সাথে কাজ করুন এই তরুণ প্রজন্মকে আবার জ্ঞানের রাজ্যে, সাধনার রাজ্যে, শিক্ষার রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্যে। এবং এজন্যে তাদেরকে মেডিটেশনে উদ্বুদ্ধ করা। এবং তাদেরকে কোর্সে উদ্বুদ্ধ করা। তাদের কোয়ান্টামের সেবামূলক কাজের সাথে উদ্বুদ্ধ করা। রক্তদান কার্যক্রম থেকে শুরু করে যে-কোনো কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করা।
তরুণদের কাজগুলো আমাদের আশাবাদকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে
এবং আমার এবার খুব ভালো লেগেছে যে কাজগুলো আমরা বছরের পর বছর করেছি, রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ, অ্যা এটা তরুণ প্রজন্ম এই রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ তারা করেছে। অ্যা চমৎকারভাবে তারা করেছে। এবং তারা রাস্তার অনেক জায়গায় অনেক অশ্লীল কথাবার্তা অ্যা লেখা ছিল, সেগুলোকে মুছে যেভাবে রুচিসম্মত বাণী তারা সন্নিবেশ করেছে অ্যা আসলে যেটা আমাদের আশাবাদকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। যে আমরা যে ‘ভালো মানুষ ভালো দেশ, স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’ এই স্বপ্নটা আরো জোরদার হয়েছে, আরো সুন্দর হয়েছে সবকিছুর মধ্য দিয়ে।
[প্রজ্ঞা জালালি, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪]