একটি চিঠি দিয়ে আমরা আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করতে পারি। চিঠিটি এসএসসি পরীক্ষার্থী এক মেয়ের চিঠি।
সে লিখেছে-
তার বাবা ঢাকার কাকরাইলে আলোকায়ন প্রোগ্রাম শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। পথে বাদাম কিনলেন।
বাসায় ফিরে পকেটে হাত দিয়ে দেখেন মানিব্যাগ নেই। মাসের পুরো বেতন, লাইসেন্স, এনআইডিসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র ছিল সেই মানিব্যাগে। সেগুলো যদি আবার নতুন করে করতে হয় লাখ টাকার খরচ। আর পুরো মাসের বেতন তো আছেই।
স্বাভাবিকভাবেই তার বাবা চিন্তায় পড়ে গেলেন। মেয়ে সাথে সাথে তার জমানো টাকা থেকে কিছু টাকা দান করলেন।
ভদ্রলোকের বাসা বনশ্রী। তিনি আবার বেরুলেন মানিব্যাগ খোঁজার জন্যে। খুঁজতে খুঁজতে সেই বাদামওয়ালার কাছে উপস্থিত হলেন যার কাছ থেকে তিনি বাদাম কিনেছিলেন।
তাকে দেখেই বাদামওয়ালা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। মানিব্যাগটা বের করে তার হাতে দিল, যেন এই মানিব্যাগটা দেয়ার জন্যেই সে ওখানে বসে ছিল। মানিব্যাগের ভেতরে পুরো টাকা এবং কাগজপত্র সব একইরকম ছিল।
চিঠিটা পেয়ে খুব ভালো লাগল। আসলে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সততার এই গুণ অবশিষ্ট আছে।
চিঠি পড়তে পড়তে মনে হলো কয়েকমাস আগের নাটোরের ঘটনা।
ট্রাক নিয়ে মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক বাবু। এসময় সামনে একটি মোটর সাইকেলের পেছন থেকে একটি ব্যাগ পড়ে যেতে দেখেন তিনি। এরপর ট্রাকটি থামিয়ে ব্যাগটি হাতে নেন। পরে চেইন খুলে দেখেন ব্যাগটি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের বান্ডিলে ভরা।
এরপর খুঁজতে থাকেন ব্যাগের মালিককে। না পেয়ে এক পর্যায়ে থানায় গিয়ে ঘটনাটি খুলে বলেন। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নেয়ার পর টাকার প্রকৃত মালিকের খোঁজ মেলে। তিনি থানায় এসে টাকাভর্তি ব্যাগটি দেখে কেঁদে ফেলেন।
২৫ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগ ফিরে পেয়ে ঐ ট্রাক চালককে বকশিসও দিতে চান। কিন্তু ট্রাকচালক তা নিতে অস্বীকৃতি জানান।
ট্রাকচালক মোহাম্মদ বাবু বকশিশ না নেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন যে, ২৫ লাখ টাকাই যখন ফেরত দিলাম তখন বকশিস কেন নিতে হবে!
গতমাসে ঢাকার গুলশানে মার্কিন নাগরিকের আইফোন ফেরত দিলেন এক রিকশাচালক।
যাত্রী নামিয়ে দেওয়ার পর রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম গদির ফাঁকে একটা মোবাইল ফোন খুঁজে পান। মডেল না চিনলেও তিনি বোঝেন, ফোনটা বেশ দামি!
তবে চার্জ না থাকায় ফোনটা বন্ধ ছিল। ফলে মালিক কে সেটাও তিনি বুঝতে পারছিলেন না। তাই ফোনটার মালিককে খুঁজে বের করতে তা চালু করার দরকার!
আমিনুল উত্তর বাড্ডার একটি দোকানে গিয়ে চার্জার কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু দোকানদার চার্জারের দাম অনেক বেশি চান।
আমিনুল তখন ফোনটির সিম খুলে নিজের ফোনে চালু করেন। সিম চালু করার পর ফোনের মালিক কল করেন।
আমিনুল পুলিশের মাধ্যমে মালিকের কাছে আইফোন থার্টিন প্রো ম্যাক্স মুঠোফোন ফিরিয়ে দেন।
রিকশাচালক আমিনুলের স্ত্রী গার্মেন্টসকর্মী। আমিনুল বলেন- আমি গরীব। সংসারে অভাব আছে। কিন্তু অন্যের সম্পদের ওপর আমার কোনো লোভ নেই। সততা নিয়েই বাঁচতে চাই।
আমিনুল যেদিন মার্কিনী নাগরিককে আইফোনটি ফেরত ফিরিয়ে দেন সেদিনই বরিশালের আরেকটি ঘটনা।
রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া এক লাখ ৯০ হাজার টাকা স্থানীয় কাউন্সেলরের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেন এক দিনমজুর।
ব্যবসায়ী শংকর কুমার সাহা মোটর সাইকেলে যাচ্ছিলেন। দোকানে গিয়ে টের পান যে, হ্যান্ডেলে ঝোলানো টাকার ব্যাগ হারিয়ে ফেলেছেন।
পরে বরিশাল শহরে মাইকিং করান কিন্তু টাকার হদিস পাওয়া যায় নি। অবশেষে টাকার আশা তিনি ছেড়ে দেন। এরপরে ঐ টাকার ব্যাগটি একজন ওয়ার্ড কাউন্সেলরের কাছ থেকে শংকর বাবু ফেরত নেন।
ওয়ার্ড কাউন্সেলর বলেন, যে টাকা পেয়েছে সে একজন দিনমজুর। নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চায়।
তিনি বলেন, ঐ দিনমজুর টাকা নিয়ে আমার কাছে এসে হারানো ব্যাক্তিকে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তখন পরীক্ষা করার জন্যে বলি- ‘ঐ টাকা তুই নিয়ে যাহ! দেওয়া লাগবে না’!
তখন উত্তরে সে বলে- একদিন মরতে হবে না, হিসাব দিতে হবে না? আপনি বিশ্বস্ত বলেই আপনার কাছে টাকার ব্যাগ রেখে গেলাম। যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দিয়েন। তাকে আমার কথা বলার দরকার নাই।
২০ আগস্ট আরেক খবর।
সন্ধ্যার আগে নিজের গাড়ি নিয়ে বেড়াতে যান এক যুবক। ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়ক ধরে ফেরার পথে একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পান তিনি। ব্যাগের ভেতরে দেখেন পাঁচ লক্ষ টাকা।
সেই টাকার মালিকের খোঁজ না পেয়ে তিনি ঠাকুরগাঁও শহরজুড়ে মাইকিং করছেন।
আসলে ভালো সংবাদগুলো সংবাদপত্রে সাধারণত সামনের পাতায় আসে না। ভেতরের পাতায় থাকে।
সামনের পাতায় কেবল অপরাধ দুর্নীতির খবর পড়তে পড়তে আমরা ভাবি দেশের সব মানুষই বুঝি দুর্নীতিপরায়ণ, সব মানুষই বুঝি খারাপ।
আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তো আমরা দেখব বাংলার সাধারণ মানুষ কখনোই লোভী বা স্বার্থপর ছিল না। বরং আমাদের নির্লোভ স্বভাব আমাদের ধর্মপরায়ণতা সততা বিদেশীদের জন্যে চরম বিস্ময়ের ব্যাপার ছিল।
এখন থেকে ৬০০ বছর আগে বাংলার সুলতান ছিলেন গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ। তার শাসনামলে চীনের সাথে বাংলার কুটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
আমাদের রাজদূতরা যেমন চীনে যেতেন, চীন থেকেও দূতরা বাংলাদেশে আসতেন। চীনা দূতরা বাংলার প্রকৃতি অর্থনীতি ও মানুষের স্বভাব চরিত্রের বিবরণ তাদের লেখা বইগুলোতে দিয়ে গেছেন।
ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলছিলেন, তিনি যখন ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন লন্ডনে অবস্থিত ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে, সেখানে চীনাদের লেখা বইগুলোতে বাঙালিকে দুটো সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে।
এক- বাঙালিরা মিথ্যা বলে না। দুই- তারা কারো সাথে প্রতারণা করে না।
এরও আড়াইশ বছর পরের কথা! সেসময়ে বাংলার সুবেদার ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহজাদা সুজা। সুবেদারের প্রাসাদ ছিল বাংলার তৎকালীন রাজধানী রাজমহলে। এটা এখন ভারতের ঝাড়খণ্ডের একটি ছোট্ট শোহর।
পর্তুগীজ ধর্মযাজক সেবাস্টিন মানরিক তার ভ্রমণকথায় লিখেছেন, তিনি গৌড় নগরের এক প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে গুপ্তধন পাওয়ার কথা শোনেন মোগল কর্মচারী মির্জার কাছে।
তার কাছ থেকে জানতে পারেন- এক রাখাল ছেলে ভেড়া খুঁজতে এসে এখানে একটি ভাঙা দেয়ালের নিচে এক গর্তে দুটি বড় এবং একটি ছোট মোট তিনটি তামার পাত্র পায়।
সে তার কৃষক বাবাকে নিয়ে আসে। রাতের বেলা বাবা-ছেলে দুজনে মিলে ঘটিগুলো নিয়ে যায় বাড়িতে।
একটি পাত্র খুলতেই সেটি সোনার মুদ্রায় ভরা দেখতে পেয়ে কৃষক বাবা আর সেটি ছুঁয়ে দেখেন নি।
কৃষকের মনে হলো এটি রাজকীয় সম্পত্তি এবং রাজার কাছে তা পৌঁছে দেয়া প্রয়োজন।
সেই কৃষক গৌড় থেকে রাজমহলে গিয়ে ঘোরাঘুরি করেন, কিন্তু সুবেদারের সাথে দেখা করার সুযোগ পান না।
অনেক অপেক্ষার পর সুজার দেখা পেলেন এবং তাকে ঘটনাটি জানালেন। সুজা তার কর্মচারী মির্জাকে পাঠিয়ে পাত্রগুলো আনালেন।
প্রথম দুটো পাত্র বিপুল পরিমাণ স্বর্ণমুদ্রায় ভরা ছিল। আর তিন নম্বর অর্থাৎ ছোট পাত্রটি খোলার পর সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়ল। পুরাটাই দামী মণিমুক্তায় ভরা।
পরীক্ষা করে দেখা গেল- শাহ সুজার সংগ্রহে যেসব রত্ন ছিল তার চেয়েও এগুলো উন্নত ও মূল্যবান।
তিনজন অভিজ্ঞ জহুরী দিয়ে এগুলোর দাম যাচাই করেন শাহ সুজা। তিনজনই গড় দাম বলেছিলেন- তিন কোটি টাকা।
১৬৪০-র দশকে তিন কোটি টাকা মানে কী!
এ ঘটনার ১০০ বছর পর অর্থাৎ ১৭৫৭ সালের হিসাব অনুযায়ী তিন কোটি টাকা মানে এক বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ১০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
বাবা-ছেলের সততায় মুগ্ধ হয়ে শাহজাদা সুজা সেই কৃষককে মূল্যবান উপহার ও রাজকীয় পোশাক প্রদান করেন।
আসলে সততার এই ঘটনা আমাদের দেশের জন্যে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ বরাবরই সৎ নির্লোভ ও ধর্মপরায়ণ।
একজন দিনমজুরও বলে- একদিন মরতে হবে না! হিসাব দিতে হবে না!
এই ঘটনাগুলোর উল্লেখ আমরা এ কারণে করছি আপন ইতিহাস আপন মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতন না হলে কোনো জাতি কখনো বড় হতে পারে না, তার মধ্যে আত্মসম্মানবোধ তৈরি হয় না। জাতিগত হীনম্মন্যতা চেপে বসে।
আমাদের দেশের বইতে আলেকজান্ডারের বীরত্ব ও রাজা পুরুর প্রতি তার মহানুভবতার গল্প শিশুরা শেখে।
কিন্তু আলেকজান্ডার যে আমাদের পূর্বপুরুষ গঙ্গরিঢ়িদের ভয়ে রাতের আঁধারে শিবির তুলে পালিয়ে গিয়েছিলেন সেই ঘটনা শিক্ষার্থীরা কখনো শোনে না।
আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের বালক বয়সে একটি চেরি গাছ কেটে ফেলায় তার বাবা যখন জিজ্ঞেস করলেন, কে কেটেছে?
বালক ওয়াশিংটন বলেছিলেন, আমি কেটেছি।
খুশিতে আপ্লুত বাবা পুত্রকে জড়িয়ে ধরলেন। এই গল্পটি বাংলাদেশের স্কুল পর্যায়েও ইংরেজি পাঠ্যবইগুলোতে থাকে।
আমরাও ওয়াশিংটনের সততা পড়ে মুগ্ধ হই। কই শাহ সুজার আমলে গৌড়ের অর্থাৎ মালদা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার এই কৃষকের গল্প তো পাঠ্যবইতে লেখা থাকে না।
এ কারণেই আমরা ভুলে যাই সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলার মানুষ অতিথিপরায়ণ উদারমনা ধর্মপরায়ণ অসাম্প্রদায়িক এবং সৎ। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।
আসলে ঔপনিবেশিক শাসন এবং শোষণ আমাদের সমাজ কাঠামোটাকেই ওলট-পালট করে দেয়। ইংরেজদের দানবীয় ক্ষুধা মেটাতে বাংলার শস্যক্ষেত রাজকোষ ব্যবসা-বাণিজ্য সব উজাড় হয়ে যায়।
সততার প্রতীক আমাদের টোল ও মক্তবগুলো তারা নিশ্চিহ্ন করে ফেলে। অনৈতিক শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে তারা ইংরেজদের বশংবদ শ্রেণি তৈরি করে এদেশীয়দের মধ্য থেকে যারা চেহারা-সুরতে বাঙালি হলেও ব্রিটিশ প্রভুর হয়ে খাজনা আদায় ও লাঠিয়াল বাহিনীর কাজ করত দুর্নীতি ও ঘুষের সিলসিলা এদের হাত ধরেই।
ইংরেজদের তৈরি এই মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী মানুষ এরাই এরাই দুর্নীতি করে এরাই বিদেশে টাকা পাচার করে।
সাধারণ মানুষ তারা চুরি করে না। ঘুষ খায় না। অন্যের সম্পদ বাগাতে চায় না। দেশের ক্ষতি করে বিদেশে টাকা পাচার করে না। বরং তারা বিদেশে পায়ের ঘাম মাথায় তুলে মেহনত করে টাকা উপার্জন করে সেটা দেশে পাঠায়।
আরও নিয়তির পরিহাস হচ্ছে, সাধারণ পরিবারগুলো থেকে যারা মেধার জোরে উঠে আসে এবং এই বিশেষ শ্রেণিতে একটা জায়গা করে নেয় তারাও একসময় চৌর্যবৃত্তি ও দুর্নীতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কারণ সিস্টেম নাকি সেইরকমই। লঙ্কা যে যায় সেই রাবণ হয়ে যায়!
এই দুষ্টচক্র থেকে বেরোনোর জন্যে আমাদের এখন দরকার হচ্ছে ভালো মানুষ। সর্বত্র শুদ্ধাচারের প্রচলন।
৫০-র দশকে চীন ও ৭০-র দশকে সিঙ্গাপুর যেভাবে জাতিগত বদাভ্যাসগুলো থেকে মুক্ত হয়েছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ।
সিঙ্গাপুরের নীতি নির্ধারকরা দেখল, প্রাপ্তবয়স্কদের যতই বোঝানো হোক যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না থুতু ফেলবেন না তাদের আসলে নতুন করে কিছু শেখানো কঠিন।
অতএব তারা সিদ্ধান্ত নিল, স্কুলপড়ুয়া ছোট ছোট শিশুদের শেখাও ভালো কথা শিষ্টাচার শুদ্ধাচার।
শিশুরা যখন এগুলো আত্মস্থ করতে শুরু করল তাদের আচরণ দ্বারা তারা মা-বাবাকে প্রভাবিত করল।
কারণ মা-বাবা হয়তো রাস্তায় বেরিয়ে ঠোঙাটা কোথাও ফেলতে নিয়েছেন, সঙ্গে থাকা বাচ্চা সাথে সাথে বলে উঠছে- এখানে ফেলবে না। স্কুলের টিচার বলেছে, রাস্তায় থুতু ফেলতে হয় না। কোনো জিনিসের ঠোঙা পথের ধারে না, নির্দিষ্ট ঝুড়িতে ফেলতে হবে।
আসলে আমাদের কোনোকিছুর অভাব নেই। অভাব শুধু সিস্টেমের।
আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ফিরে আসছে। আমরা ৩০ বছর আগে যেভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম, যে মনছবি দেখেছিলাম, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিক থেকে আমরা সে পথেই এগোচ্ছি।
এখন প্রয়োজন আমাদের নৈতিক পুনর্জাগরণ। এখন প্রয়োজন সর্বত্র শুদ্ধাচারের প্রচলন। এখন প্রয়োজন শিশু-কিশোরদের শুদ্ধাচারী হিসেবে গড়ে তোলার আয়োজন।
আমাদের শিশু-কিশোররা শুদ্ধাচারী হয়ে গড়ে উঠলে এরাই সময়ের সাথে সাথে যুবক হবে। এবং তাদের নৈতিক বল নৈতিক শক্তি দেশের মানুষের চেহারাটাই সার্বজনীনভাবে পাল্টে দেবে।
তখন বাংলাদেশের মানুষ যে দেশেই যাক সেখানকার মানুষ বলবে- বাংলাদেশের মানুষ ভালো মানুষ শুদ্ধাচারী মানুষ।
নিজে নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা করুন। তাহলে আপনার নৈতিক জাগরণ ঘটবে, অন্তর থেকে আপনি শুদ্ধাচারী হওয়ার তাগিদ অনুভব করবেন এবং আপনার দ্বারা চারপাশের মানুষ শুদ্ধাচারী হওয়ার জন্যে অনুপ্রাণিত হবে।
সবসময় শুক্রবারের সাদকায়নে অংশ নিন। যত অংশ নেবেন তত আপনার অন্তর্গত শক্তি দ্বারা সমাজের মানুষ প্রভাবিত হবে। এবং আপনার চারপাশের মানুষ যত ভালো থাকতে শুরু করবে আপনিও তত ভালো থাকবেন।
সবসময় যারাই ভালো কাজ করছে তাদের ভালো কাজে সহযোগিতা করবেন। তাহলে প্রাকৃতির প্রকৃতির নিয়মানুসারে আপনি আরো ভালো থাকবেন।