মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তাঁর আরো এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তাদের কাছে তোমরা প্রশান্তি অনুভব করো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক হৃদ্যতা ও অনুগ্রহ তৈরি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সুরা রুম, আয়াত : ২১)
পবিত্র কোরআনে আরো বলা হয়েছে,
‘আল্লাহ তোমাদের থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের যুগল থেকে তোমাদের জন্য পুত্র-পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদের উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছেন। তবু কি তারা মিথ্যা বিষয়ে বিশ্বাস করবে? তারা কি আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? (সুরা নাহল, আয়াত : ৭২)
১. নিজেকে পরিবারের প্রাণ মনে করুন
২. সংসারের কাজকে ইবাদত মনে করুন।
৩. স্বামীকে বন্ধু, জীবনসঙ্গী, দিশারী ও পরিবারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করুন।
৪. স্বামীকে লুকিয়ে কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
৫. স্বামীর ভালো কাজ, অবদান ও কৃতিত্বের জন্যে গর্ববোধ করুন।
৬. স্বামীর প্রতি সর্বাবস্থায় বিশ্বস্ত থাকুন। ভালবাসা ও অনুরাগ কথা ও আচরণে প্রকাশ করুন।
৭. স্বামী-সন্তান বাইরে থেকে আসার সাথে সাথে কোনো সমস্যার কথা বলা বা অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকুন।
৮. কোনো ভুল বা অন্যায় হয়ে গেলে নিঃসঙ্কোচে স্বীকার করুন ও স্বামীর কাছে মাফ চেয়ে নিন।
৯. নিজের হাত-খরচা থেকে কখনো কখনো সম্ভব হলে স্বামীর জন্যে ছোট-খাটো উপহার কিনুন। নিজের অর্থ প্রয়োজনে স্বামী ও সংসারের জন্যে খরচ করুন।
১০. স্বামীর কাছে কোনো অযৌক্তিক আবদার করা থেকে বিরত থাকুন।
১১. স্বামীর যুক্তিসঙ্গত আয় সম্পর্কে ধারণা রাখুন। আয়ের মধ্যেই সংসারের খরচ সীমিত রাখার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত খরচ ও চাপ সৃষ্টি করে স্বামীকে দুর্নীতিপরায়ণ হতে বাধ্য করবেন না।
১২. ব্যক্তিগত কেনা-কাটায় সংযমী হোন
১৩. যেকোনো বিপদে বা সংকটে স্বামীর প্রতি পরিপূর্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন।।
১৪. স্বামীর অজ্ঞাতে কাউকে কিছু দেবেন না।
১৫. স্বামীর আত্মীয়-স্বজন নিয়ে খোঁটা দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
১৬. শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মায়ের মতো শ্রদ্ধা করুন। স্বামীর ভাই-বোনদের নিজের ভাই-বোনের মতো ভালবাসুন।
১৭. ঘরের খুঁটিনাটি সমস্যা নিজেই সমাধানে সচেষ্ট থাকুন।
১৮. সন্তানের সামনে স্বামীর সাথে ঝগড়া এবং তার ভুল-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন।
১৯. চাকরিজীবী হলেও সন্তান ও সংসারের ব্যাপারে যাতে কোনো অবহেলা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
২০. স্বামীর যেকোনো অক্ষমতাকে সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করুন।
২১. আত্ম-উন্নয়ন ও আত্মিক উন্নয়নের কাজে স্বামীকে সহযোগিতা করুন। সুযোগ মতো হক্কুল ইবাদ বা সৃষ্টির সেবায় অংশ নিন।
২২. অন্যের কাছে স্বামীকে ছোট করা থেকে বিরত থাকুন।
২৩. মা হিসেবে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো ও সন্তানের মাঝে অনন্য মানুষের গুণাবলিকে বিকশিত করার কাজে সচেষ্ট থাকুন।
২৪. গ্যাসের চুলা প্রয়োজনের বাইরে সব সময় বন্ধ রাখুন। সব ধরনের অপচয়ের বিরুদ্ধে পরিবারে সচেতনতা সৃষ্টি করুন।
২৫. অভিমান করা ও নিজের কষ্টকে বড় করে দেখার প্রবণতা পরিহার করুন।
২৬. পরিবারে নিজের অবদান নিয়ে কখনো খোঁটা দেবেন না।
২৭. ঘর-বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখার ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকুন।
২৮. শাশুড়ি হিসেবে পুত্রবধূকে প্রতিপক্ষ না ভেবে নিজের কন্যার মতো বিবেচনা করুন এবং পুত্রবধূর ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন।
মহানবী (সা.) বলেন,
‘কোনো নারী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজানের রোজা রাখে, নিজের সতীত্ব রক্ষা করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে, তাহলে তাকে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৬৬১)
মহান আল্লাহ বলেন, ‘সাধ্বী স্ত্রীরা হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাজতযোগ্য করে দিয়েছেন, লোকচক্ষুর অন্তরালে তার হেফাজত করে।’ (সুরা আন নিসা, আয়াত : ৩৪)