‘সেবা’ উত্তম ইবাদত!
আসলে অন্যের কল্যাণে কাজ করা, অন্যকে একটা ভালো উপহার দেয়া, অন্যের সেবা করা, অন্যকে সাহায্য করা, অন্যকে সহযোগিতা করা এটাই হচ্ছে সেবা এটাই হচ্ছে দান এটাই হচ্ছে সাদাকা।
এবং এই সেবা দান সাদাকা এটা ইবাদতের মধ্যে উত্তম ইবাদত।
এবং আল্লাহ বলেন, ভগবান বলেন, ঈশ্বর বলেন, স্রষ্টাকে যে নামেই ডাকেন, প্রভুকে যে নামেই ডাকেন, প্রভুকে পাওয়ার পথ হচ্ছে এই সেবা, দয়া, সাদাকা, দান।
রসুলুল্লাহ (স) বলেছেন যে, ‘যাদের দ্বারা মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়, আল্লাহ তাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন’।
তো আল্লাহকে পাওয়ার পথ কী হলো? মানুষের উপকার করা সেবা করা।
স্বামী বিবেকানন্দের একটা বাণী হলো- ‘বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর? জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’!
অর্থাৎ তুমি ঈশ্বরকে কোথায় খুঁজছ? তোমার আশেপাশে যে প্রাণ আছে, যে জীব আছে, এই জীবে দয়া করলেই ঈশ্বরকে পাওয়া যাবে, ঈশ্বরের সেবা হবে।
মহামতি বুদ্ধ খুব চমৎকারভাবে বলেছেন যে, ‘দানের অনন্ত কল্যাণ সম্পর্কে আমি যা জানি, যদি মানুষ তা জানতো, তাহলে কাউকে না দিয়ে সে অন্ন গ্রহন করত না। প্রকৃত নিরন্ন মানুষকে যে অন্ন দান করে, সে পরলোকে স্বর্গে গমন করবে’।
আসলে এই যে সেবা, এটাকে আমরা কোয়ান্টামে বলি, সেবা উত্তম ইবাদত।
কেন বলি?
নবীজী (স) বলেছেন যে, ‘সেবামূলক কাজে আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির মর্যাদা হচ্ছে আল্লাহর পথে জেহাদকারী ব্যক্তির সমান। এবং কাজ শেষ করে ঘরে ফিরে না আসা পর্যন্ত এই মর্যাদা বহাল থাকে’।
এবং নবীজী (স) আরও বলেছেন, নিঃস্ব বঞ্চিত ও অবহেলিতদের কল্যাণ করার মধ্য দিয়ে তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করো।
কোনো কৃপণ কোনো কঞ্জুস এটা করতে পারবে না। আরে! কৃপণ কঞ্জুস তো নিজেই খেতে পারে না, অন্যের উপকার কী করবে?
আমি এমন কৃপণ দেখেছি, ঢাকা শহরে, এখন থেকে ৪০ বছর আগের কথা বলছি। তার যে বাড়ি, বাড়ি ভাড়া মাসে পেতেন আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা। ৪০ বছর আগের কথা বলছি। যখন জিনিসপত্রের দাম অনেক কম ছিল।
এবং সে লোক মানে তার স্যান্ডেল ক্ষয় হয়ে গেছে, তলা ক্ষয় হয়ে গেছে। জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনার এত টাকা, আপনার স্যান্ডেল?
বলে যে, দেখেন, স্যান্ডেল তো কিনতে চাচ্ছিলাম, অনেক দাম। ভাবলাম যে, ঠিক আছে। আরও কয়েকদিন চলুক। তখন মানে হার্ডলি ১০ টাকা হলে স্যান্ডেল পাওয়া যেত।
কেন? টাকা খরচ হয়ে যাবে। কৃপণ কঞ্জুস এরা কখনো অন্যের কল্যাণে কাজ করতে পারে না!
অন্যের কল্যাণে কাজ কারা করে? অন্যের উপকার কারা করতে পারে? যাদের অন্তরে দয়া আছে মায়া আছে। এবং যাদের অন্তরে দয়া আছে মায়া আছে, এরাই হচ্ছে মানুষ। যাদের অন্তরে মনুষ্যত্ব রয়েছে, এরা হচ্ছে মানুষ।
এবং প্রত্যেকটা ভালো কাজ, এটাই হচ্ছে সেবা।
রসুলুল্লাহকে (স) জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসুল, আমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোকে পানি পান করালেও কি সওয়াব পাব?
নবীজী (স) উত্তরে বলেন, প্রতিটি জীবকে পানি পান করালেই সওয়াব পাওয়া যাবে। [বোখারী, মুসলিম শরীফ]
অর্থাৎ যে কাজে সওয়াব হয়, প্রত্যেকটা কাজ ইবাদত। এবং প্রত্যেকটা ভালো কাজ হচ্ছে ইবাদত। প্রত্যেকটা ভালো কাজ হচ্ছে সেবা সাদাকা দান।
ধরুন, এই যে আপনি একজনকে আসসালামু আলাইকুম বললেন, কী করলেন? আপনি তার শান্তি কামনা করলেন। এটাও সেবা হলো। কারণ আপনি যখন হাসি দিয়ে সালাম দিলেন, তখন সেও কী করছে? তার মুখ একটু বেজার থাকলেও তিনি হাসি মুখ করে আপনাকে ওয়ালাইকুমুস সালাম বলছেন। যে, আপনার ওপরও শান্তি বর্ষিত হোক। তো এটা ইবাদত হলো। এটা সেবা হলো।
রাস্তায় একটা কাঁটা পড়ে আছে, এটা সরিয়ে দেয়া- সেবা। রাস্তায় একটা কলার খোসা পড়ে আছে, যে কেউ পিছলে যেতে পারে, এটা সরানো এটা সেবা। একজনকে একটা ভালো পরামর্শ দেয়া, এটাই সেবা, এটাই সাদাকা, এটাই দান।
আপনি আপনার স্ত্রীকে বললেন যে, আমি তোমাকে ভালবাসি। এটা সওয়াবের কাজ। এটা দান। এটা সেবা।
হাজবেন্ডের দিকে তাকিয়ে একটু হাসলেন। হাজবেন্ড বিমোহিত হয়ে গেল যে, এতো সুন্দর হাসি দিয়েছে আমার স্ত্রী আজকে! এটা সেবা এটা ইবাদত। এটা দান।
আমরা খালি মনে করি যে, টাকা দেওয়া দান। না! বন্ধু একটু পিছলে পড়ে যেতে যাচ্ছিল আপনি ধরে ফেললেন তাকে। এটা সেবা হলো। এটা দান হলো। এটা সাদাকা হলো।
বন্ধু একটা ভুল করতে যাচ্ছে, আরেকজনকে ঘুষি দিতে যাচ্ছে, আপনি বললেন যে, দোস্ত! থামো! তাকে ধরে ফেললেন। এটা কী? এটা সেবা এটা দান এটা সাদাকা।
অর্থাৎ প্রত্যেকটা ভালো কাজ, প্রত্যেকটা ভালো কাজ এটা হচ্ছে সেবা এটা দান এটা সাদাকা।
অর্থাৎ মানুষের কল্যাণে যতগুলো কাজ করা সম্ভব, প্রত্যেকটা কাজ হচ্ছে দান। প্রত্যেকটা কাজ হচ্ছে সেবা।
এবং যখন আপনি ইবাদত করবেন সেবা করবেন দান করবেন, তখন কী হবে? স্রষ্টা এটার প্রতিদান দেবেন শতগুণ সহস্রগুণ, কখনও লক্ষগুণ কোটিগুণ।
আমাদের প্রচুর ঘটনা আছে।
একটা ছোট্ট ঘটনা বলি।
আমাদের একজন কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট ডাক্তার। পিজির অথবা মেডিকেলের ডক্টর হবেন।
তো তার পাঁচ বছর ধরে সন্তান হচ্ছে না। হরমোনের সমস্যা। কোনো চিকিৎসায় কিছু হচ্ছিল না। ডাক্তার যখন বলল, কোনো আশা নাই, তখন এই ডাক্তার তার মনে হলো তার সারা জীবনের সব ভালো রেজাল্ট, পেশাগত সাফল্য, পারিবারিক অবস্থান সব অর্থহীন। ইউজলেস।
নিজেকে ব্যর্থ মনে করতে শুরু হলো যে, আমার জীবন ব্যর্থ হয়ে গেছে। আর নিজের ভেতরটা একেবারে হাহাকার শূন্যতা। বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলেন। তীব্র বিষণ্ণতা। ডিপ্রেশন। বিষণ্ণতার জন্যে ওষুধ খেতে শুরু করলেন। যত দিন যায় তত মরার মতন নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছেন।
তার একজন সিনিয়র সহকর্মী ডাক্তার, তিনি পরামর্শ দিলেন, তোমার যেহেতু মন এত খারাপ, তুমি যাও কোয়ান্টামে যাও। কোর্স করো। মেডিটেশন করো।
প্রথমবারের মতো তিনি ভাবতে পারলেন- পৃথিবীর সব শিশুই নিজের শিশু!
তো তিনি কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে এলেন। তিনি কিন্তু তার সমস্যা সমাধানের জন্যে আসেন নাই। তার বাচ্চাকাচ্চা হওয়ার জন্যে আসেন নাই। তিনি তার এই যে ডিপ্রেশন, এই যে তীব্র বিষণ্ণতা, এটা কাটিয়ে ভাবছিলেন যে, মেডিটেশন করলে একটু মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে। মানসিক শান্তির জন্যে তিনি এসছিলেন।
কোর্সের চতুর্থ দিন আমাদের লামার শিশুদের ভিডিও যখন দেখলেন এবং কোয়ান্টাদের সম্পর্কে আমার কথা শুনতে শুনতেই মনে হলো তার যে, আমার সন্তান নেই তাতে কি! পৃথিবীতে অনেক শিশু আছে যার মাথার ওপর হাত রাখার কেউ নাই। আমি সেই শিশুদের জন্যে কাজ করব।
এবং তার জীবনে দৃষ্টিভঙ্গিগত একটা পরিবর্তন চলে এলো। প্রথমবারের মতো তিনি পৃথিবীর সব শিশুকে নিজের শিশু নিজের সন্তান বলে ভাবতে পারলেন।
কোর্সের পরদিন তিনি যখন হাসপাতালে গেলেন, তার সেই সিনিয়র কলিগ, তিনি দেখলেন যে একটা নতুন মানুষ। পূর্ণোদ্যমে ডক্টর কাজ করতে শুরু করলেন। দৈনন্দিন জীবন পরিবার সবকিছুতে আনন্দ ফিরে এলো। সন্তান না থাকার দুঃখটা কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
দেখেন, শুধুমাত্র একটা দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন একটা মানুষের জীবনকে কত বদলে দিতে পারে।
এবং ৩০ বছর ধরে কোয়ান্টাম এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার কাজটাই করছে।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এক বছরের মধ্যে স্রষ্টা তার কোল ভরিয়ে দিলেন। পুত্রসন্তানের মা হলেন তিনি।
আমাদের এরকম বহু ঘটনা।
এক দম্পতি ২০ বছর তাদের কোনো সন্তান নাই। তো যখন আমার সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে এলো, সব কান্নায় ভেঙে পড়ল। মানে স্ত্রীও কানছেন, স্বামীও কানছেন। মানে দুইজন দুইজনকে আবার ভালবাসেন।
অনেকে পরামর্শ দিয়েছে যে, আরেকটা বিয়ে করো, না। দুইজন দুইজনকে খুব ভালবাসেন। দুইজনেই কানছেন।
তো আমি বললাম যে, সন্তান নাই তাতে কী আছে! মনে করেন যে আপনার সন্তান লামাতে আছে। একটা সন্তান- নিজের সন্তানকে যেভাবে দায়িত্ব নিতেন, সেইভাবে তার লালন পালন করেন। সেভাবে তাকে দেখেন।
সৃষ্টি যাদের দ্বারা উপকৃত হয়, স্রষ্টা তাদের সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন!
এবং তিনি দায়িত্ব নিলেন। দায়িত্ব নেয়ার পরে এক বছরের মধ্যে তিনি কনসিভ করলেন। এবং এখন তার বাচ্চার বয়স পাঁচ বছর হয়ে গেছে।
কারণ স্রষ্টা সবসময় কী করেন?
নবীজী (স) আরো পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, যাদের দ্বারা মানুষ সবচেয়ে উপকৃত হয়, আল্লাহ তাদের সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন।
অর্থাৎ সৃষ্টি যাদের দ্বারা উপকৃত হয়, তাদেরকে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন।
স্ব-অর্থায়নে কোয়ান্টামের বহুমুখী সেবামূলক কাজ
এবং এই যে সৃষ্টির সেবা, এই যে কাজ, এই কাজ এত আনন্দের এত গুরুত্বপূর্ণ বলেই কোয়ান্টাম কী করেছে? সৃষ্টিসেবার কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে, সৃষ্টির সেবায় নিজেদেরকে নিবেদিত করেছে।
এবং আমরা প্রভুর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, তিনি আমাদেরকে যে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন, এই রকম বহুমুখী সেবামূলক কাজ আমাদের দেশে খুব কম প্রতিষ্ঠান এবং খুব কম মানুষই করতে পারে।
বরং বলতে পারি, আমাদের দেশে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নাই যারা এরকম বহুমুখী সেবার কাজ করছে, এবং সেটা নিজেদের অর্থায়নে।
তো আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে, ঢাকাতে রক্তদান কার্যক্রম। এবং আপনাদের শুনলে ভালো লাগবে শুরু থেকে এই পর্যন্ত ১৪,৪৯,৫৭৫ ইউনিট রক্ত এবং রক্ত উপাদান আমরা সরবরাহ করেছি মানুষের জন্যে।
অর্থাৎ সাড়ে ১৪ লক্ষ ইউনিট। এবং এই বছর এই পর্যন্ত আমরা ৯২,৮০৯ ইউনিট রক্ত রক্ত উপাদান সরবরাহ করতে পেরেছি।
এবং থ্যালাসেমিয়া রোগী, যাদের প্রতি মাসে রক্ত লাগে, যারা গরীব, যারা অসহায়, তাদের প্রত্যেককে আমরা পারমানেন্ট কার্ড করে দিয়েছি যে তাদেরকে আবেদন করতে হবে না, এই কার্ড নিয়ে এলেই প্রত্যেক মাসে তারা রক্ত পায়।
এবং এই ক্ষেত্রে আমরা এই পর্যন্ত দুই লক্ষ ৬৫ হাজার ইউনিট রক্ত থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরকে দিতে পেরেছি। এবং এই বছর ১৭,৪৬০ ইউনিট রক্ত থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরকে ফ্রি আমরা দিয়েছি।
এবং থ্যালাসেমিয়া রোগী যাদেরই অর্থ নাই বিত্ত নাই, মানে তাদেরকে কোনোরকম সার্ভিস চার্জ ছাড়া, একেবারে ফ্রি আমরা দিয়ে থাকি। এবং তাদেরকে একদম কার্ড করে দেয়া, যাতে বার বার তাদেরকে আবেদন করতে না হয়। নিজেকে যেন ছোট করতে না হয়। যেরকম আমাদের স্টাফদের কার্ড আছে, সেরকম তাদেরকে কার্ড করে দেওয়া।
টিউবওয়েল! দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪১২ টা টিউবওয়েল এবং ইদারা আমরা স্থাপন করেছি।
চিকিৎসাসেবা! ৫,১৯,০০০ মানুষের চিকিৎসাসেবা আমরা করেছি এবং এই বছর ৬৭,২৫৮ জন দুস্থের চিকিৎসাসেবা আমরা করেছি।
চক্ষুসেবা! আমরা এই সেবা দিয়েছি ১০,৬৬২ জনকে। এবং এই বছরেই ২৫৬৬ জনের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
ছানি অপারেশন! এই পর্যন্ত ছানি অপারেশন করা হয়েছে ১৫৬১ জনের। এবং শুধু এই বছর এই গত ১০ মাসে ছানি অপারেশন করা হয়েছে ৫৬০জন। চিন্তা করেন, এই বছর ৫৬০ জন মানুষ আবার পৃথিবীর রঙ রূপ তারা দেখতে পারছে। যারা ছানি পড়ে যাওয়ার কারণে কিছুই দেখতে পারত না। এবং এরা সবাই দরিদ্র বঞ্চিত মানুষ।
মাতৃমঙ্গল! মাতৃমঙ্গলে ৩৩ হাজার ২৩৩ জন মায়ের সেবা আমরা ইতিমধ্যেই দিয়েছি। এবং এ বছর যারা সেবা গ্রহণ করছেন, মাতৃমঙ্গলে, তাদের সংখ্যা হচ্ছে ৭ হাজার ৭২০ জন।
সুন্নতে খতনা! এই ক্ষেত্রেও আমরা কিন্তু পিছিয়ে নাই। ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৯৫৬ জনের সুন্নতে খতনা করা হয়েছে। এবং এই বছর করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৩ জন।
দাফন কার্যক্রম ও সৎকার কার্যক্রম! করোনাকালে তো আমাদের যে দাফন কার্যক্রম, সৎকার কার্যক্রম, এটা ৬০০০’র ওপরে। এবং এ ছাড়া নরমাল দাফন এবং সৎকার এটা এ পর্যন্ত আমরা করেছি ৫ হাজার ৭৬৭ জন। এবং এই বছর করা হয়েছে ৫৪৪ জন।
বৃক্ষ রোপণ! এবং আমরা এই পর্যন্ত গাছ লাগিয়েছি ৯ লক্ষ ১১ হাজার ১৯৬টা। এ বছর বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৩২টা।
প্রবীণ সেবা! প্রবীণ সেবার মূল কাজটা হচ্ছে, আমাদের এই লামাতে। এ পর্যন্ত ৪৩ জন প্রবীণকে সেবা দেয়া হচ্ছে যাদের দেখার কেউ নাই।
এবং প্রবীণ সেবাকেন্দ্র! প্রবীণ সেবাকেন্দ্রের কাজ এখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। আমরা আশা করছি যে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই প্রবীণ সেবা কেন্দ্রের বিল্ডিংয়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
গৃহ নির্মাণ! এই পর্যন্ত আমরা গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছি ৩০২০টা। এবং সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ এবং বিতরণ করা হয়েছে ৫০০-র ওপরে।
সেলাই মেশিন! এবং এই বছর সেলাই মেশিন বিতরণ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ১৬ জনকে।
এবং আর্থিক সাহায্য! দুর্গত অবস্থায় পড়ে যাওয়ার জন্যে আর্থিক সাহায্য এই পর্যন্ত আমরা দিয়েছি ১৬,৮৭৭ জনকে। এবং এই বছর দেয়া হয়েছে ২৩৩৯ জনকে।
আশ্রয়মম! আমাদের আশ্রয়মম কোথায়? রাজবিলা। সেখানে ৫৭জন প্রবীণ, স্থায়ীভাবে বসবাস তারা করছেন। এবং বেশ কয়েকজন ওখানে এসে আয়ু শেষ হয়েছে, তারা মারা গেছেন। এবং তাদেরকে খুব যত্নের সাথে তাদের শেষকৃত্য এবং তাদের দাফন করা হয়েছে।
এবং আমাদের ছেলেদের জন্যে হাফেজিয়া মাদ্রাসা। হাফেজিয়া মাদ্রাসা ডিসেম্বর মাসে শুরু হবে, যেখান থেকে হিফজ শেষ করে আবার নরমাল স্কুলে তারা পড়াশোনা করবে। একদিকে হাফেজ হবে এবং তার পরবর্তী সময়ে নরমাল শিক্ষায় তারা শিক্ষিত হবে।
এটার ভবন তৈরির কাজ অলরেডি শেষ হয়েছে। এখন এটা রঙ করার কাজ চলছে। এবং এই মাসের মধ্যেই এটা নির্মাণ কাজ শেষ হবে এবং হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ছাত্রদের আগমন ঘটবে ডিসেম্বর থেকে। আপনারা দোয়া করবেন এইজন্যে।
আর আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ যেটা বাচ্চাদের নিয়ে, সেটা হচ্ছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এবং কলেজ।
২৫০০ ছাত্রছাত্রী এখানে পড়াশোনা করছে। ভোকেশনাল স্কুলে ২০০ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। এবং এই কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এবং কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন ১৫০ জনের বেশি ছাত্রছাত্রী আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেলে বুয়েটে চুয়েটে তারা পড়াশোনা করছে।
এবং কসমো স্কুলের একজন ছাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী নিয়ে ফুল স্কলারশিপে বিদেশে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করার জন্যে গিয়েছে।
এবং এই সমস্ত কাজ কিন্তু করছি আমরা আমাদের স্ব-অর্থায়নে। এখানে কোনো সরকারি বা বিদেশী কোনো সাহায্য নেই। বিদেশী কোনো সাহায্যকে আমরা আসলে অপছন্দ করি।
সব কাজই হচ্ছে স্ব-অর্থায়নে। আমাদের সবার টাকায় সবার অর্থে। কেন?