ম্যাচটা শুরুর দিকে অনুমিত চিত্রনাট্য মেনেই এগোচ্ছিল। প্রথমে গোল করে চিত্রনাট্য সত্য প্রমাণে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনাই। ২৮ মিনিটে লিওনেল মেসির গোলে নিজেদের ঘরের মাঠে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। মনে হয়েছিল, নেইমার-দি মারিয়াবিহীন পিএসজিকে বেশ হেসেখেলেই হারিয়ে দেবে তাঁরা।
সঙ্গে লিগের দুর্দান্ত ফর্মে থাকার সাহসটা তো ছিলই। কিন্তু পিএসজি শিবিরে এমবাপ্পে নামের একজন যে ছিলেন! পিএসজির সবচেয়ে বড় তারকা কে? এই প্রশ্নে এখনও সিংহভাগ মানুষ নেইমারের কথাই বলেন। এমবাপ্পে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হলেও অনেকের চোখেই এই ফরাসি স্ট্রাইকার নেইমারের ‘ডেপুটি’।
পিএসজিতে নেইমারের লক্ষ্যপূরণের সবচেয়ে দামি সহচর। যতো দামিই হন, ‘সহচর’ তো! এমবাপ্পে নিজেও স্বীকার করেন সেটা। মানেন, পিএসজি নামের বাড়িতে নেইমারই তাঁর বড় ভাই। অবশ্য মনে মনে মানেন কী না, কে জানে! চোটের কারণে এই মহারণ থেকে ছিটকে পড়া নেইমারের অনুপস্থিতিটা ছিল এমবাপ্পের নিজেকে আরেকবার প্রমাণ করার মঞ্চ। নেইমার নন, তিনিই যে পিএসজির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ, সেটা দেখানোর উপলক্ষ্য। সেই লক্ষ্যপূরণে কী দুর্দান্তভাবেই না নায়ক বনে গেলেন এমবাপ্পে!
২৮ মিনিটে গোল করে মেসি বার্সাকে এগিয়ে দিলেও আরেকবার মেসিকে দর্শক বানিয়ে মাঠের মধ্যে সাফল্যের উৎসব করলেন এমবাপ্পে। ঠিক যেমনটা করেছিলেন ২০১৮ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে, মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। এমবাপ্পে-আগুনে আরও একবার পুড়ে ছারখার হলো লিওনেল মেসির দল। তাঁর হ্যাটট্রিকেই ৪-১ গোলে ন্যু ক্যাম্প থেকে জিতে এসেছে পিএসজি। হ্যাঁ, গুনে গুনে তিনটা গোল দিয়েছেন এমবাপ্পে। গতি, ড্রিবলিং, চতুরতার নিপুণ প্রদর্শনীতে অনায়াসেই কাবু করেছেন জেরার্ড পিকে, ক্লেমঁ লংলের মতো ডিফেন্ডারদের। চোট থেকে মাত্র ফিরে আসা পিকের ওপর অনেক আশা ছিল বার্সা কোচ কোমানের।
এতটাই, যে সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নামিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু এমবাপ্পে যেদিন ছন্দে থাকেন, সেদিন বিশ্বের কয়টা ডিফেন্ডারের সাধ্য আছে তাঁকে আটকে রাখে? তার ওপর এই পিকে তো এখন একদম ক্যারিয়ার-সায়াহ্নে, আগের সেই ঝলক আর দেখাতেও পারেন না। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। পিএসজির হয়ে বাকি গোলটা করে বার্সার যন্ত্রণা আরো বাড়িয়েছেন এভারটন থেকে এই মৌসুমে পিএসজিতে খেলতে যাওয়া ইতালিয়ান স্ট্রাইক মইস কিন।
Leave a Reply