1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

শানিত স্মার্টনেস

  • সময় বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১
  • ১০১৩ বার দেখা হয়েছে

-সুখ

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

।এই সুখের জন্যে আমাদের কী করতে হবে সেটাই উল্লেখ করা হয়েছে  পর্বে- আসলে সুখী হতে হলে আগে জানতে হবে সুখী না হতে পারার কারণ কী?

আর সুখী না হতে পারার কারণগুলো হলো-

* ক্রমাগত অন্যের সাথে নিজের তুলনা।

যেমন তার রেজাল্ট ভালো আমারটা ভালো না, তার জামাটা সুন্দর আমার তো এমন নাই। তার দুটো গাড়ি আছে আমার তো একটাও নাই। অর্থাৎ আমরা আমার নিজের অবস্থান ক্রমাগত অন্যের সাথে তুলনা করছি। আর এই তুলনা করার ফলে মনের মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে।

* আবার আমার যা যা আছে সেটা নিয়ে শোকরগোজার হতে পারছি না।

অর্থাৎ সন্তুষ্ট হতে পারছি না, যে কারণে শুকরিয়াও আদায় করতে পারছি না। ফলে সারাক্ষণ অশান্তি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সুখের অনুরণন অনুভব করা যাচ্ছে না। এজন্যে সুখী হতে হলে আমাদের যা করতে হবে তা হলো-

* নিজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। পরম করুণাময়ের প্রতি শোকরগোজার হয়ে অন্যের দিকে না তাকিয়ে গভীর মমতা নিয়ে, ভালবাসা নিয়ে নিজের দিকে তাকাতে হবে। যা নাই তা নিয়ে আফসোস করার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

* পরিপূর্ণরূপে সুখী হতে হলে প্রথমে নিজের এই দেহের দায়িত্ব নিজেকে নিতে হবে। কারণ এই দেহ সুস্থ না থাকলে জীবনের সমস্ত অর্জন ব্যর্থ হয়ে যাবে। অর্থাৎ একজনের অনেক মেধা থাকতে পারে, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকেতে পারে, পেশাগত মর্যাদা থাকতে পারে কিন্তু সে যদি অসুস্থ হয় তাহলে সে ঐ সুখটাকে আস্বাদন করতে পারে না। মেডিটেশন, অটোসাজেশন, বৈজ্ঞানিক খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

* অপরকে ক্ষমা করতে পারতে হবে। অর্থাৎ আরেকজন যত কষ্টই দিক না কেন আমি যেন আমার আচরণ দিয়ে কাউকে কষ্ট না দিই। আসলে যত বেশি অপরপক্ষকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখতে পারবো তত বেশি আমরা সুখী হতে পারবো। আমাদের চারপাশের সম্পর্কগুলোকে শ্রদ্ধা করতে হবে। আসলে অন্যকে কষ্ট দিলে যেটা হয় ল’ অব নেচারাল রিটার্ন হিসেবে নিজেকেও কিন্তু কষ্টই পেতে হয়। সুখী হতে হলে মন্দ কথার জবাবে সুন্দর কথা বলতে হবে।

* অন্যকে সার্ভ করলে, ভালো কাজ করলে কষ্টের পরিমাণটা কমে যায়। আর কষ্টের পরিমাণটা কমলে সুখের পরিমাণটা বেড়ে যায়। * নেতিবাচক আবেগকে পরিহার করলে একটা মানুষ সত্যিকার অর্থে সুখী হতে পারে। আর নেতিবাচক আবেগ হচ্ছে-রাগ ক্ষোভ জেদ ঘৃণা ঈর্ষা। এগুলো থেকে যত বের হতে পারবো তত কিন্তু সুখের পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

* শুধু নিজে সুখী হলে হবে না, এই সুখের অনুরণন যাতে চারপাশে ছড়িয়ে যায়, চারপাশটাও যেন আমাদের সাথে সাথে সুখী হতে পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। সুখী হতে হলে দাতা হতে হবে। যত অন্যকে সুখ দিতে পারবো তত আমাদের কাছেও সুখ এসে ধরা দেবে। প্রোগ্রামের দ্বিতীয় পর্ব শানিত স্মার্টনেস- স্মার্টনেস শানিত করতে হলে শান দিতে হবে। অর্থাৎ চর্চা করতে হবে। আর এই চর্চা না করলে পরিণতি কী হতে পারে সেটা এই গল্পটি থেকে আমরা বুঝতে পারবো- এক কাঠুরে একটি স’মিলে কাজ করতো, সে অন্য কাঠুরেদের চেয়ে খুব ভালো কাজ করতো এবং স’মিলে সে তার মালিকে বলেছিলো যে, সে সবচেয়ে বেশি কাঠ কেটে আনবে। প্রথমবার সে বড় বড় ১৮টি গাছের টুকরা কেটে এনে তার মালিককে দিলো। মালিকও খুশি হয়ে তাকে খুব প্রশংসা করলো, যে খুব ভালো, তুমি কথা রেখেছো। পরদিন কাঠ কাটতে গিয়ে কাঠুরে দেখলো সে গতকালের মতোই পরিশ্রম করে, একই সময়ে সে তার মালিককে জমা দিতে পারলো ১৫টি গাছের টুকরা। তার মনে সন্দেহ হলো যে কেন এমন হলো কারণ প্রতিদিন তো ভালো থেকে ভালো হওয়ার কথা। তৃতীয় দিন যখন সে কাঠ কাটতে গেল তখন সে দেখলো যে সে মাত্র ১০টি টুকরা কেটে তার মালিকের কাছে জমা দিতে পেরেছে। যেহেতু ক্রমাগত তার কাঠের সংখ্যা কমছে, তখন সে তার মালিককে বললো, মালিক আমি তো আমার কথা রাখতে পারি নাই। আমার তো কাঠের পরিমাণ কমে আসছে, মনে হয় আমার শক্তি কমে আসছে। মালিক বললেন, তিন দিনেই তো তোমার শক্তি এভাবে কমে যাওয়ার কথা না, কারণটা কী? তোমার কুড়ালটা নিয়ে আসো। কাঠুরে যখন তার কুড়াল এনে মালিককে দিলো তখন মালিক বললো তুমি এটাকে শেষ বার কবে ধার দিয়েছো? তখন সে বলে যে, আমি তিন দিন আগে ধার দিয়েছি তারপরে আর ধার দিই নি।তো যেহেতু প্রথমদিনের পর সে আর ধার দেয় নি দিনকে দিন তার গাছের পরিমাণ কমে হয়ে গেল ১০টি। আসলে যে জিনিসটাকে আমরা যত শান দিতে পারবো তত বেশি সেটার দ্যুতি বাড়তে থাকবে। এ কারণেই আমরা চাই আমাদের ব্যক্তিত্বটাকে শান দিতে।

এর আগের শিক্ষার্থী কার্যক্রমে ব্যক্তির কিছু নিজস্ব গুণের উল্লেখ করা হয়েছিলো।

যেমন সুন্দর হাসি, নীরবে কোনো শব্দ না করে কাজ করতে পারা,

যেকোনো পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে পারা।

শিক্ষার্থী কার্যক্রমে স্মার্ট ব্যক্তিত্বের জন্যে আরো কী গুণ থাকা দরকার সেটা বলতে গিয়ে ৬২ ধরনের গুণের উল্লেখ করা হয়েছিলো। তবে এই ৬২টি গুণের মধ্যে প্রধান গুণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় সেবক হওয়াকে। যিনি যত বেশি সেবা করতে পারছেন তিনি তত বেশি সুন্দর ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

সেবক হতে হলে শুধু তাকালেই হয় না, দেখতে হয়। হাঁটতে, চলতে, ফিরতে লক্ষ্য রাখতে হয় যে আমি এই মুহূর্তে কাকে সেবা দিতে পারি। এই পর্যবেক্ষণ শক্তি যার আছে তিনি হচ্ছেন ব্যক্তিত্ববান।

এই প্রসঙ্গেও একটি গল্প উল্লেখ করা হয়- এক জেন শিষ্য খুব সুন্দর করে তার অনুশীলনগুলো আয়ত্ব করে তার ট্রেনিং শেষ করে। তার ট্রেনিং সেশনটি ছিলো দশ বছরের। দশ বছর শিক্ষা অর্জনের পর সে যখন জেন মাস্টার উপাধিতে ভূষিত হবেন তখন তার গুরু তাকে মন্দিরে দেখা করতে বললেন। তো শিষ্য মন্দিরে গিয়ে একপাশে তার জুতা খুলে, ছাতা রেখে ভেতরে গেলেন। ভেতরে গিয়ে গুরুকে সম্মান জানিয়ে গুরুর সামনে বসলেন। গুরু তখন শিষ্যকে জিজ্ঞেস করলেন, ছাতা আর জুতাটা তো বাইরে রেখে এসেছো। জুতোর কোন পাশে ছাতাটা রেখেছো, ডান পাশে না বাম পাশে? শিষ্য এই উত্তর দিতে পারলো না। তখন গুরু বললেন তোমার আরো সময় লাগবো। জেন মাস্টার উপাধি পেতে তোমাকে আরো দশ বছর সাধনা করতে হবে। আরো দশ বছর এই সচেতনতা, এই পর্যবেক্ষণ শক্তিটাকে বাড়াও। এ

কজন ব্যক্তিত্ববানের অন্যতম একটি গুণ বলা যেতে পারে এই পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। ব্যক্তিত্বকে শানিত করতে দ্বিতীয় যে গুণটি থাকতে হবে সেটা হলো-ঠান্ডামস্তিষ্ক, উষ্ণ হৃদয়। ব্যক্তিত্বের একটা গুণ হচ্ছে-কথাবার্তা, আচরণ, চলাফেরা। কখন কাকে কী বলছি, কীভাবে বলছি, বলতে গিয়ে গলার টোনটা লো স্কেলে থাকতে থাকতে হাই হয়ে গেল কি না?

আসলে রাগের মাথায় আমাদের গলাটা চড়ে যায়। আর আমরা এরকমটা কেন করি? কেন রেগে গেলে আমাদের গলার স্বর উঁচু হয়ে যায় এটা নিয়েও একটি সুফি গল্প আছে- এক সাধক তার শিষ্যদেরকে নিয়ে পুকুর ধার দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি দেখলেন যে পুকুর পাড়ে দুজন লোক পাশাপাশি দাঁড়িয়ে অনেক জোরে চিৎকার করে কথা বলছেন। ব্যাপারটা এমন যে দুই মাইল দূর থেকেও তাদের কথা অন্যরা শুনতে পারবে। তখন সাধক তার শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন বলো তো এরা কেন এত কাছাকাছি দাঁড়িয়েও এত জোরে চিৎকার করে কথা বলছে?

তখন কেউ উত্তর দিলো তারা তাদের বুদ্ধিশুদ্ধি হারিয়েছে,রেগে গেছে, হুশ নাই, কেউ বললো খেপে গেছে এই জন্যে চিৎকার করছে। কিন্তু তখন সাধক বললেন আসলে সত্য হচ্ছে-যেই মুহূর্তে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেছে সেই মুহূর্ত থেকে তাদের দুজনের হৃদয় দুইদিকে চলে গেছে। আর ঝগড়ার সময় যত বাড়ছে তাদের হৃদয় তত দূরে চলে যাচ্ছে। যে কারণে তাদের কণ্ঠস্বর বেড়ে যাচ্ছে। কারণ কারো কণ্ঠই কারো হৃদয়ে পৌঁছতে পারছে না। আমরা হৃদয়টাকে উষ্ণ আর মাথাটাকে ঠান্ডা রাখলে মুখেও বলতে হবে না, চোখে চোখ রাখলেই আরেকজন আপনার হৃদয়ের কথা বুঝে যাবেন। বাস্তব জীবনে আমাদের আন্তরিকতা বাড়বে এবং আমাদের সুসম্পর্ক আরো গভীর থেকে গভীরতর হবে।

হজরত জালালউদ্দিন রুমির এই গল্পের মধ্যেই আছে শানিত ব্যক্তিত্বের তৃতীয় গুণটি- এক মুসাফির তার গাধাকে নিয়ে সফর করছেন। পথে ক্লান্ত হয়ে একটি সরাইখানা দেখে ডুকে পড়লেন তার গাধাকে নিয়ে এবং বললেন যে আমি আজকের রাতটা এখানে কাটাতে চাই। সরাইখানার কেয়ারটেকারও তাকে সাদরে গ্রহণ করলেন কারণ থাকলে তো তারই কিছু ইনকাম বাড়বে। তখন মুসাফির বললেন আমি তো থাকবো কিন্তু আমার গাধাটারও থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তখন কেয়ারটেকার বলছে হবে হবে, গাধারও থাকার ব্যবস্থা হবে। মুসাফির বললেন, শুধু এমনি রাখলে হবে না যেহেতু ঠান্ডা পড়েছে মাটিতে একটু খড় বিছিয়ে দিতে হবে, তার পিঠের পেছনে কম্বল বা কাপড় দিতে হবে কারণ সে হেলান দিয়ে বসে। কেয়ারটেকার বললো হ্যাঁ হ্যাঁ দেবো। মুসাফিরকে যত্ন নেয়ের ব্যাপারে কেয়ারটেকারের যত চেষ্টা তারচেয়ে শতগুণ কম চেষ্টা ছিলো এই গাধার ব্যাপারে। এরপর মুসাফির বললেন গাধাকে পানি খেতে দিতে হবে, শুধু পানি দিলে হবে না কিছু খাবার দিতে হবে। খাবারটা পানিতে ভিজিয়ে যেন দেয়। তখন কেয়ারটেকার আবার বললেন দেবো দেবো, আমরা প্রফেশনাল, আমরা সবকিছুর ব্যবস্থা করবো আপনি আরাম করেন। এরপর সব বলে মুসাফির রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাওয়া খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। কিন্তু রাতে দুঃস্বপ্ন দেখলেন তার প্রিয় গাধা শীতে ঠক ঠক করে কাঁপছে, ক্ষুধা তেষ্টায় কাতরাচ্ছে। সাথে সাথে তার ঘুম ভেঙে গেল সে বিছানা ছেড়ে উঠে বাইরে গিয়ে সত্যিই দেখলেন যে, তার প্রিয় গাধাটা যেভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো সেভাবেই দাঁড়িয়ে আছে, তাকে খাবারও দেয়া হয় নি, পানিও দেয়া হয় নি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রুমি বলছেন এরকম হলো কেন? তার এত প্রিয় গাধার যত্ন কেন সে নিশ্চিত করতে পারলো না? কারণ সে যত্ন করার দায়িত্ব নিজে নেয় নাই। সে যত্ন করার দায়িত্ব এমন একজনকে দিয়েছে যার গাধার প্রতি কোনো মমতাই নাই। তখন রুমি বলছেন, আমরা আমাদের নিজের কাজগুলো নিজে না করে আরেকজনের আশায় রেখে দেই বলেই আমরা হতাশ হই।

আসলে পরের আশা না করে নিজেকে স্বাবলম্বী হতে হবে। আসলে নিজের কাজটা নিজে করার মধ্য দিয়েই একজন মানুষের ব্যক্তিত্বটা আরো বেশি প্রস্ফূটিত হয়। আর এই সাবলম্বী হওয়াটাই ব্যক্তিত্বের তিন নম্বর গুণ। ব্যক্তিত্ব গড়তে সময় লাগে ভাঙতে সময় লাগে না। ব্যক্তিত্ব আছে কি, নাই সেটা যাচাই করার আরো অনেক মানদণ্ড আছে শিষ্টাচার কণিকায়। শিষ্টাচার কণিকায় ১১টি পর্ব আছে। আর শিষ্টাচার কণিকার প্রথম পর্বের পুরোটাই হচ্ছে এই ব্যক্তিত্ব গড়া বিষয় নিয়ে। কথবার্তায়, আচার-আচরণে, চলাফেরায়, পোশাক-আশাকে কীভাবে ব্যক্তিত্বটা বাড়তে পারে আর সেটা না মানলে কীভাবে ব্যক্তিত্বটা কমতে পারে সেটার উল্লেখ আছে শিষ্টাচার কণিকায়। আমাদের চারপাশে ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের গুণগুলো ছড়িয়ে আছে কিন্তু সেখান থেকে নিজের যেটার কমতি আছে সেটা বেছে নিতে হবে নিজেকে।

আর আমরা যদি শিষ্টাচার কণিকা থেকে বা এই চারপাশ থেকে নিজের জন্যে প্রয়োজনীয় গুণটা বেছে নিতে পারি তাহলে আমরা আমাদের ব্যক্তিত্বের শানটা বাড়াতে পারবো। বোকারা চিন্তা করে কাজ করার পরে আর বুদ্ধিমানরা চিন্তা করেন কাজ করার আগে। আসলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সময়মতো কাজের আগে। এটা নিয়েও সুফিদের একটা মজার গল্প আছে- এক চোর রাতের অন্ধকারে ক্ষেতে গিয়ে পেয়াজ চুরি করলো। গুণে গুণে একশটা পেয়াজই চুরি করলো। পেয়াজ চুরি করে বস্তা নিয়ে যখন সে তার ঘোড়ায় উঠতে নিলো তখন ঘোড়া ডেকে উঠলো এবং এত রাতে ঘোড়ার ডাক শুনে গ্রামবাসী জেগে উঠে চোরকে ধরে ফেললো। পরদিন সকালে তাকে গ্রামের সরদারের কাছে সালিশে নিয়ে যাওয়া হলো। সালিশে সিদ্ধন্ত হলো যেহেতু সে একশটা পেয়াজ চুরি করেছে তাকে একশ স্বর্ণমুদ্রা ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। সেটা দিতে না পারলে একশটা বেতের ঘা খেতে হবে। আর যদি সেটাও না পারে তাহলে তাকে এই একশটা পেয়াজ চিবিয়ে খেতে হবে। তখন চোর ভাবলো পকেট থেকে একশ স্বর্ণমুদ্রা চলে যাবে! না এটা করা যাবে না, একশটা বেতের ঘা এটাও সহ্য করা যাবে না। তাই সে পেয়াজ খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। কিন্তু ২৫টা পেয়াজ খাওয়ার পরে তার অবস্থা একেবারে কাহিল হয়ে গেল, চোখ দিয়ে দর দর করে পানি পড়তে লাগলো।

তখন সে পরাজয় স্বীকার করে দ্বিতীয় শাস্তি মেনে নিলো। দ্বিতীয় শাস্তিতে ১০ ঘা খাওয়ার পরে আর সহ্য করতে পারলো না। তখন সে কাকুতি মিনতি করে বললো আমাকে ছেড়ে দাও আমি একশ স্বর্ণমুদ্রা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি আছি। আসলে প্রথমেই যদি প্রথম শাস্তিটা মেনে নিতো তাহলে তাকে এত কষ্ট করতে হতো না। আসলে জীবনের অঙ্কও কিন্তু খুব সহজ-রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন, প্রো-একটিভ সমান জয়, রি-একটিভ সমান পরাজয়-সূত্র খুবই সরল। ব্যক্তিত্ববান হওয়ার জন্যে ছোটখাটো এই গুণগুলোর পাশাপাশি মূল প্রয়োজন হচ্ছে-অন্তরের শক্তি।

আমরা তো জানি অন্তর্গত শক্তিই হচ্ছে সত্যিকার ব্যক্তিত্ব। যত আমরা আরেকজনকে সেবা দেয়ার জন্যে ভেতরটাকে তৈরি করতে পারবো তত আমাদের শক্তির জাগরণ ঘটবে। আর এ কারণেই আমাদের এ বছরের প্রত্যয়ন হচ্ছে-আমার কষ্টের কারণ যা-ই হোক না কেন আমি অন্যকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকবো। নিজে সুখী হওয়ার জন্যে আমি আরেকজনকে সুখী করবো।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All rights reserved © RMGBDNEWS24.COM
Translate »