1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন

উন্নয়নের জন্যে জনসংখ্যাই নিয়তি

  • সময় শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১
  • ১০৫৩ বার দেখা হয়েছে

নাইনটিন সেভেনটিন সিক্সে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট অর্থাৎ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমেরিকান প্রেসিডেন্টকে একটা মেমোরেন্ডাম দেয়া হয়েছিল। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল পপুলেশন পলিসির অর্জন সম্পর্কে ধারনা দেয়া হয়েছিল। এটা একটা ডিক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

এই ডকুমেন্টে তারা যেসব দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেসব দেশে জনসংখ্যা কমানোর জন্য কী নীতি অবলম্বন করা উচিত সেটার ডিটেইলস রিপোর্ট ছিল।

৮টি দেশের নাম উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে এই অঞ্চলের ডেমোগ্রাফি বা জনসংখ্যা যদি বেড়ে যায় তাহলে আমাদের যে কর্তৃত্ব রয়েছে বিশ্বের ওপরে, এই কর্তৃত্বটা কমে যাবে।

ওই রিপোর্টে যেসব দেশের নাম ছিল তার মধ্যে একটি ছিল চীন। এবং তাদের যারা এজেন্ট তারা সাকসেসফুলি চীনকে এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, জনসংখ্যা হচ্ছে তোমাদের সবচেয়ে বড় প্রবলেম হবে।

অতএব এটাকে কমাতে হবে। ‘ওয়ান চাইল্ড পলিসি’ করো তোমরা। তোমাদের তো এমনি এত লোক। ‘ওয়ান চাইল্ড পলিসি’ করলে তোমরা লাভবান হবে।

বাংলাদেশ, চীন ছাড়াও ভারত, তুরস্ক তারপরে ইন্দোনেশিয়া মানে যে যে এলাকায় জনসংখ্যা বাড়ছে।

কারণ তারা খুব ভালোভাবে জানত যে জনসংখ্যা শুধু সম্পদ না, উইথ গ্রেট ডেমোগ্রাফিকস কামস গ্রেট পাওয়ার- হোয়াই পপুলেশন উইল ড্রাইভ জিওপলিটিকস, এটা তাদের এসেসমেন্ট।

আসলে যে অঞ্চলের জনসংখ্যা যত বড় হবে নেক্সট গ্রেট পাওয়ারের উদ্ভব হবে সেখানে। অতএব যে যে জায়গায় জনসংখ্যা বাড়তি হচ্ছে আমেরিকান পলিসি হলো সে সে জায়গায় জনসংখ্যাকে কমাতে হবে।

কারণ আমরা তো কোন কাজ করতে গেলে চিন্তা করি যে আমার ইমিডিয়েট লাভ কত হবে। আর তারা (আমেরিকা) চিন্তা করে কীভাবে ডমিনেট করব ২০ বছর ৩০ বছর ৫০ বছর।

তো চীনের একসন্তান নীতিতে কী হলো? হরিবল ব্যাপার!

ধরেন বাবা-মা দুজন দাদা-দাদি দুজন, নানা-নানি দুজন। কত হলো? ছয়জন। ছয়জনের নেক্সট জেনারেশন হচ্ছে একজন।

এটা আরেকটা রিপোর্ট- ৩৬ বছরের চীনের যে অভিজ্ঞতা, এই অভিজ্ঞতা বলছে যে ওখানে এখন পরিবার ভেঙে গেছে।

কারণ এক সনতান। একজন। একটা সন্তান ছেলে বা মেয়ে সে তো ছয়জনকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে না। কখনোই পারবে না।

কারণ তার সাথে একটি ছেলে বা মেয়ে যদি যুক্ত হয় তাহলে কতজন হচ্ছে? দুইজনের জন্যে ১২ জন হচ্ছে। কারণ ওয়ান চাইল্ড পলিসি।

ছেলে হোক, মেয়ে হোক এবং চীনে যেটা হয়েছে, প্রযুক্তি যেহেতু ডেভেলপ করেছে যখনই বোঝা যাচ্ছে যে মেয়ে হবে, মেরে ফেলেছে। এবং ভ্রূণ হত্যা যে-কোনো কারণে হোক ভ্রূণ হত্যা আর নরহত্যা- এর মধ্যে কোনো তফাত নাই। নরহত্যা যেরকম পাপ ভ্রূণ হত্যাও একইরকম পাপ।

তো এটার শাস্তি তো পেতে হবে। আজকে চীনের একটা বড় শক্তি ছিল তার ফ্যামিলি।

আমাদের চেয়েও চীনারা মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি মানে তারা পরিবারকেন্দ্রিক। এই পরিবার শেষ হয়ে গেছে। এটা হচ্ছে আরেকটি রিপোর্ট।

এবং ইকনমিস্টের নতুন রিসার্চ তারা প্রশ্ন তুলছে যে হোয়ার গ্রোথ ইজ কনসার্ন, ইজ পপুলেশন ডেসটিনি? উন্নয়নের জন্য কি জনসংখ্যাই হচ্ছে নিয়তি?

এবং জনসংখ্যাই হচ্ছে নিয়তি। তো আমাদের আমাদের সুখবরটা কোথায়?

গত একযুগ ধরে আমাদের এখানে স্লোগান ছিল দুই সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়। ১২ বছর ধরে সরকারি এই স্লোগান চলে আসছিল।

আমাদের সুখবর হচ্ছে যে, গত জুলাই মাসে এসে সরকার নীতিগতভাবে তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে।

এখন নতুন স্লোগান হচ্ছে- ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট। অর্থাৎ ‘একটি হলে ভালো হয়’- এটা আর কেউ বলছেন না।

তো আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি যে নতুন যে স্লোগান ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে আমাদের সরকার একটি হলে ভালো হয় এই নীতি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবেই সরে এসেছেন।

এখন জনসংখ্যা বাড়ানোর কথা তারা বলছেন। কিন্তু এই কথাগুলো আমরা বলে আসছি গত ৩০ বছর ধরে।

এবং এজন্যে আমরা সরকারকে অভিনন্দন জানাই। কারন একটি ভালো সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন।

এবং আমরা সেদিনের প্রত্যাশায়, যেদিন সরকারিভাবে বলা হবে চারের কম নয়, বেশি হলে ভালো হয়।

৩০ বছর আগে যা বলেছি আজকেও আমরা তাই বলছি। কারণ আমরা যা বলছি এটা যদি চলতে থাকে তাহলে কি হবে? এই শতাব্দীর মধ্যেই বাঙালি জনসংখ্যা একশ কোটি হবে। জায়গার অভাব নাই তো।

এই যে পাহাড় পর্বত এত আছে! ওখানে কত লোক থাকে?

দরকার হলে হিমালয়ে গিয়ে থাকব আমরা, অসুবিধা কী আছে?

বঙ্গোপসাগরে গিয়ে থাকব। নৌকায় থাকব। বেদেরা নৌকায় থাকত না বছরের পর বছর! প্রয়োজনে আমরা সাগরে নৌকায় থাকব।

কারণ আমাদের দেশের মানুষ নৌকায় করে, স্পিডবোটে করে সাগর পাড়ি দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। হয়তো একদিন দেখা যাবে যে পৃথিবীর সব জায়গায় চায়না টাউনের মতন বাংলা টাউন গড়ে উঠেছে।

কারণ জনসংখ্যা হচ্ছে শক্তি। এবং নেক্সট সুপারপাওয়ার তারাই হবে।

যেখানে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ যারা ঘটাতে পারবে। এবং সেই বিস্ফোরিত জনসংখ্যাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারবে।

তো আমরা অভিনন্দন জানাই যে আমরা এই সাম্রাজ্যবাদী প্রয়াস থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি।

চীনের শক্তি ছিল তার জনসংখ্যা। কিন্তু একসন্তান নীতি চীনকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এটা ৮ নভেম্বরের রিপোর্ট ২০১৫ সালের।

তো আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি যে আমরা একসন্তান নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি এবং এই দুই সন্তান তারপরে তিন সন্তান চার সন্তান। এবং জনসংখ্যার বিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপিত হবে।

[সজ্ঞা জালালি, ১৭ জুলাই, ২০১৯]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All rights reserved © RMGBDNEWS24.COM
Translate »