ধর্মের মূল শিক্ষা একটাই- আর তাহলো স্রষ্টা এক ও অদ্বিতীয়। এক স্রষ্টার উপাসনা করো, নিজের ও অন্যের কল্যাণ করো- এটাই হচ্ছে ধর্মের মূল শিক্ষা। আর বাকি সব হচ্ছে ধর্মাচার। আপনি ধর্মের মূল শিক্ষা অনুসরণ করেন, দেখবেন আর সমস্যা হচ্ছে না।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্ম এতগুলো কেন? প্রথমত, সব ধর্মই এক উৎস থেকে এসেছে। আল্লাহ বলেছেন, এমন কোনো জনপদ নাই, যেখানে তিনি তার বাণীবাহক পাঠান নি। তার মানে সমস্ত আদিধর্মের উৎসই যে এক তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু কালের বিবর্তনে ধর্মাচারে বা ধর্মবিশ্বাসে অনেক কিছু সংযুক্ত হয়েছে, বিয়োজিত হয়েছে। লুপ্ত হয়েছে, যুক্ত হয়েছে।
আর স্রষ্টা যদি চাইতেন সবাইকে এক ধর্মের করে ফেলতে পারতেন। তাঁর চাওয়াটাই যথেষ্ট ছিল। তিনি শুধু বলতেন ‘কুন’- আর সব এক হয়ে যেত। তারপরও তিনি এত বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছেন যাতে আমরা বৈচিত্র্যকে উপভোগ করতে পারি। তিনি তো একটা ফুল তৈরি করলেই পারতেন- শুধু গোলাপ থাকবে, বেলি-চামেলি থাকবে না! তা-তো করেন নাই। পুতুল তৈরি হয়- বার্বি ডল, সব একইরকম। মেশিন থেকে একের পর এক বের হচ্ছে।
মানুষের ক্ষেত্রে তো তা নয়। বৃদ্ধাঙ্গুলির এতটুকু জায়গায় ৭০০ কোটি বৈচিত্র্য! কত নিখুঁত তাঁর সৃষ্টি। একটা প্রজাপতি তার মধ্যে কত ধরনের রং, অবাক হয়ে যেতে হয়। একই সবুজ পাতা তার মধ্যে কত ধরনের সবুজ রং, হিসেব করতে গেলে থেমে যেতে হবে! এর পেছনে রহস্য হচ্ছে, স্রষ্টার সৃজনশীলতা। তিনি অভ্যাসবশত সৃষ্টি করেন নাই, সৃষ্টির আনন্দে সৃষ্টি করেছেন, মনোযোগ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এটা স্রষ্টার বৈশিষ্ট্য, তাঁর মাহাত্ম্য।
এ প্রসঙ্গে সূরা মায়েদার ৪৮ নম্বর আয়াতটি প্রণিধানযোগ্য।
“আমি তোমাদের প্রত্যেকের জন্যে (আলাদা) বিধান ও স্পষ্ট পথনির্দেশ প্রদান করেছি। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের এক উম্মাহ বা জাতিতে পরিণত করতে পারতেন। (কিন্তু তিনি তা করেন নি।) কারণ তিনি তোমাদের যে পথনির্দেশ ও বিধান দিয়েছেন, তার আলোকেই তোমাদের পরীক্ষা করতে চান। অতএব তোমরা সৎকর্মে (নিজের সাথে) প্রাণপণ প্রতিযোগিতা করো। শেষ পর্যন্ত তোমরা আল্লাহর দিকেই ফিরে যাবে। তখন তোমাদের মতভেদের বিষয়সমূহের ব্যাপারে আল্লাহ আসল সত্য প্রকাশ করবেন।”
অর্থাৎ এখানে আল্লাহ মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে নিজ নিজ ধর্মাচারের পার্থক্য নিয়ে কোন্দল করার পরিবর্তে সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাই বুদ্ধিমান মানুষ কখনো ধর্মাচার নিয়ে কোন্দলে লিপ্ত হয় না। বরং আন্তরিকভাবে নিজ ধর্ম অনুসরণ করে।