1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

পোশাক কিনে অপচয়, যে পরিণতি ডেকে আনছে বিশ্বের

  • সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১০৭৮ বার দেখা হয়েছে

একটি পোশাকের গড় আয়ুকাল কমছে তো কমছেই। বিশ্ব একটু একটু পরিণত হচ্ছে ফ্যাশন বর্জ্যের ভাগাড়ে। ‘পোশাক কিনে অপচয়, যে পরিণতি ডেকে আনছে বিশ্বের’-এমন শিরোনামে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ প্রথম আলো অর্থনীতি বিভাগে লিখেছেন জিনাত শারমিন।

ফাস্ট ফ্যাশনের দৌরাত্ম্য বাড়িয়ে কিছু ব্র্যান্ড আর সেই ব্র্যান্ডের আড়ালের মানুষগুলোর পকেটে এসে ধরা দিয়েছে মিলিয়ন ডলার। পরিমিতিবোধের মাত্রা ছড়িয়ে পড়ছে সীমাহীনতায়। একটি পোশাকের গড় আয়ুকাল কমছে তো কমছেই। বিশ্ব একটু একটু পরিণত হচ্ছে ফ্যাশন বর্জ্যের ভাগাড়ে। ক্রমশ বেড়ে চলেছে কার্বন। এসবের বিপরীতে আবার শুরু হয়েছে স্লো ফ্যাশন, ইকো ফ্রেন্ডলি ফ্যাশন, সীমিত পরিসরে আপসাইক্লিং আর রিসাইক্লিং, থ্রিফট শপ-এ রকম সব মুভমেন্ট। আলো ফেলা যাক ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির অম্লমধুর পরিপ্রেক্ষিত ও আমাদের কী করণীয়, সেদিকে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

পোশাক অপচয়ের অসুবিধা কোথায়

আপনি ভাবছেন, আপনার টাকায় আপনি ফ্যাশন করবেন। আপনি ফাস্ট ফ্যাশনে আগ্রহী। আপনার এক পোশাকের একটা ছবি সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করার পর আপনার আর সেটি পরতে ইচ্ছে করে না। তারকারা তো এক পোশাক দুবার পরলেই ‘খবর’ হয়ে যান! এভাবে ফাস্ট ফ্যাশনের ফ্যালাসিতে বুঁদ হয়ে পড়েছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি। ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রি বেড়েছে হু হু করে। তাতে সমস্যা কোথায়? সমস্যা আছে।

ফাইবার টু ফ্যাশন ডট কম এই বিষয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পোশাক যে কাপড় দিয়ে তৈরি হয়, সেটি উৎপাদনে অনেক প্রাকৃতিক শক্তি, জায়গা আর পানি খরচ হয়। সুতি কাপড় বিশ্বের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কাপড়গুলোর একটি। একটি সুতির টি-শার্ট বানাতে যে পরিমাণ কাপড় লাগে, সেটির জন্যে প্রয়োজনীয় তুলা উৎপাদন করতে ২০ হাজার লিটার পানি খরচ হয়।

বিশ্বে যত পানি ব্যবহৃত হয়, তার শতকরা ২০ ভাগ খরচ হয়ে যায় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে। এর সঙ্গে রয়েছে এনার্জি-প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম। এসব দিয়ে উৎপাদিত পোশাক দ্রুতই বর্জ্যে পরিণত হচ্ছে। তা ল্যান্ডফিল করে, বায়ুদূষণ, মাটিদূষণ, পানিদূষণ করে নানাভাবে পরিবেশদূষণে অবদান রাখছে।

ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেসপনসিবল অ্যাক্রিডিটেড প্রোডাকশন (ডব্লিউআরএপি) জানাচ্ছে, প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে ১৪০ মিলিয়ন পাউন্ড বা ১ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার জামাকাপড় ফেলে দেওয়া হয়। আর সেগুলো কেবল ল্যান্ডফিল করে।

ফেলে দেওয়া পোশাক কী হয়?

আমরা যখন কোনো জামাকাপড় ফেলে দিই, তখন আসলে কী হয়? এর উত্তর জানিয়ে ‘হোয়াই ক্লোদস আর হার্ড টু রিসাইকেল’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিবিসি। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭৩ শতাংশ পোশাক হয় পুড়িয়ে ফেলা হয়, নতুবা ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয় বা আবর্জনা হিসেবে ল্যান্ডফিলে জমা হয়।

১২ শতাংশ পোশাক ডাউনসাইকেলড হয়ে ম্যাট্রেস, ক্লিনিং ক্লোদস, পাপোশ, লুসনি বা অন্যান্য কম দামের নানা কিছুতে পরিণত হয়। শতকরা মাত্র ১ ভাগ আপসাইকেলড হয়ে নতুন কাপড়ে পরিণত হয়। প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের কাপড় ফেলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশি অর্থমূল্যে যার দাম দাঁড়ায় ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা।

ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে কম বর্জ্য উৎপাদন করা দেশের নাম জার্মানি। তারাও মাত্র ৫০ ভাগ ফেলে দেওয়া পোশাক রিসাইকেল করে নতুন পোশাক বানায়। কেবল ২০১৬ সালেই ১১ লাখ টন ফ্যাব্রিক নষ্ট হয়। আরও দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এর ৭৩ ভাগই প্রিকনজিউমার ওয়েস্ট।

মানে, ওই পোশাকগুলো ভোক্তারা কেনেননি বা কিনলেও ব্যবহার করেননি। এমন পুরোনো অব্যবহৃত ফেব্রিকসের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ টন। এর কারণ ছিল ভোক্তাকে ‘আউট অব স্টক’ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে না হয়, এ জন্যে অনেক ব্র্যান্ডই ১০ শতাংশ পর্যন্ত উদ্বৃত্ত স্টক রাখে। তবে এখন বিশ্বব্যাপী বেশ কিছু ব্র্যান্ড দাঁড়িয়ে গেছে, যারা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব ফ্যাশন নিয়ে কাজ করছে।

 

সূত্র : প্রথম আলো (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১)

নতুন মন্তব্য

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All rights reserved © RMGBDNEWS24.COM
Translate »