ভারতীয় বাঙালি কবি এবং সাংবাদিক সমর সেন এর জন্মদিন
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৮৩ তম (অধিবর্ষে ২৮৪ তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৯৬৪ : এশিয়ার প্রথম টোকিও অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭০ : দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপ দেশ ফিজি দ্বীপপুঞ্জ ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৭২ : বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বশান্তি পরিষদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রদান করা হয়।
১৯৭৩ : বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গিনি।
১৯৯২ : এ বছর থেকে দিনটি ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১৮৬১ : ফ্রিডটজফ নান্সেন, নোবেল পুরস্কারজয়ী নরওয়েজিয়ান এক্সপ্লোরার ও বিজ্ঞানী।
১৯১৬ : সমর সেন, ভারতীয় বাঙালি কবি এবং সাংবাদিক।
১৯৩০ : হ্যারল্ড পিন্টার, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী ব্রিটিশ সাহিত্যিক।
১৯৭১ : বাঙালি কথাশিল্পী, ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ।
১৯৯৪ : বাংলাদেশি প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান (শেখ মোহাম্মদ সুলতান)।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস
স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস
সমর সেন ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য বাংলাভাষী স্বাধীনতা-উত্তর কালের ভারতীয় কবি এবং সাংবাদিক। প্রথিতযশা গবেষক দীনেশচন্দ্র সেন তার পিতামহ ছিলেন।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৬ সালের ১০ অক্টোবর কলকাতার বাগবাজারে। বাবা অরুণ সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন। কাশিমবাজার স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, স্কটিশ চাচ কলেজ থেকে আইএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি মার্কসের সাম্যবাদী মতবাদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করলেও সরাসরি মার্কসীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেননি।
কিছুদিন অধ্যাপনা করেন কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজ এবং দিলীর কমার্সিয়াল কলেজে। কর্মজীবনের একটি বড় অংশ কাটে সাংবাদিকতায়। স্টেটস্ম্যান, হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, নাও ইত্যাদি পত্রিকায় তিনি সাংবাদিকতা করেন। Frontier (ফ্রন্টিয়ার) ও নাও পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। কলকাতা-এর সংবাদ বিভাগ, বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং মস্কোর প্রগতি প্রকাশনালয়ে অনুবাদক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন।
নাগরিক জীবনের স্বভাব, অভাব ও অসঙ্গতির বিদ্রুপাত্মক চিত্রায়ণ ঘটেছে তার কবিতায়। আলোর জন্যে অনাবিল অস্থিরতা থেকেই তিনি অন্ধকারময় জীবনের বিবিধ বিপর্যয়ে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন, যদিও তার এ ক্ষোভের প্রকাশ কখনও খুব তীব্র হয়নি। তার বিদ্রুপের ভাষা তীক্ষ্ণ, ভঙ্গি মর্মান্তিক, লক্ষ্যভেদী। মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি স্বশ্রেণীর স্বরূপ উন্মোচনে স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর রেখেছেন।
সামন্ততন্ত্রের প্রতি আসক্তি, উপনিবেশের শৃঙ্খল, আর্থিক-সামাজিক-রাষ্ট্রিক-আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতার অভিঘাত তার মধ্যবিত্তকে বিচলিত করে। স্নেহ-প্রেম প্রভৃতি মানবিক অনুভূতির আড়ালে মধ্যবিত্তের দোদুল্যমানতা, স্বার্থপরতা ও পাশবিকতার মর্মঘাতী রূপ তুলে ধরেছেন তিনি কবিতায়। কিন্তু তার কবিতা দুঃসময়ের কাছে আত্মসমর্পণের পরিবর্তে সমৃদ্ধ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নে ঐক্যবদ্ধ হতে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি তার কবিতায় ক্রমাগত পুঁজিবাদপ্রসূত ক্ষয়িষ্ণু সমাজকাঠামোর অন্তঃসারশূন্যতা তুলে ধরেন, যা তার জীবনদৃষ্টি ও শিল্পভাবনার স্মারক। তার প্রকাশ-কৌশল অনাড়ম্বর, কোনো রকমের ভূমিকা ছাড়াই তিনি অবলীলায় আপন অভিজ্ঞতার কাব্যিক বুননে পাঠককে সম্পৃক্ত করেন। ফলে পরিচিত পৃথিবীই তার কবিতার আধার হয়ে ওঠে।
রচিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে কয়েকটি কবিতা, গ্রহণ, নানা কথা, খোলা চিঠি, তিন পুরুষ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার আত্মজীবনী ‘বাবু বৃত্তান্ত’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৮ সালে।
১৯৮৭ সালের ২৩ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত