Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
কবির আহমেদ লিঞ্জু
বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমবায় এবং সমাজসেবায় যাদের কর্মপ্রচেষ্টা স্মরণীয় হয়ে আছে, তাদের মধ্যে খান বাহাদুর আসাদ উজ জামান অন্যতম। তিনি ১৮৭৭ সালে কলকাতায় জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা আনওয়ার উজ জামান ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের অধীন একজন পুলিশ কর্মকর্তা । মাত্র দেড় বছর বয়সেই তিনি তাঁর পিতাকে হারিয়েছিলেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল তৎকালীন পূর্ববাংলার যশোহর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার বুড়াইচ গ্রামে। ১৯৬০ সাল থেকে আলফাডাঙ্গা থানা ফরিদপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। ব্যক্তি জীবনে আসাদ উজ জামান ৩ জন পুত্র ও ১১ জন কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। পুত্র এবং কন্যাগণ সকলেই যার যার অবস্থানে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন।
তিনি তার শিক্ষাজীবন ঢাকায় শুরু করলেও কলকাতা স্কুলের অধীনে ১৮৯৩ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন এবং ২য় স্থান অধিকার করেন। এই ঘটনা তৎকালীন মুসলিম সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। এরপর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন এবং ইংরেজি সাহিত্য, গণিত ও ফার্সি বিষয় নিয়ে ১৮৯৭ সালে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । ১৮৯৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে সনদ অর্জন করেন।
খান বাহাদুর আসাদ উজ জামান পিরোজপুরের মহকুমা প্রশাসক পদে চাকরীতে থাকাকালীন অনেক সমাজসেবামূলক ও জনহিতকর কাজ করেন। কর্মের স্বীকৃতিস্বরুপ ইংরেজ সরকার তাঁকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করে। ১৩৩৬ সালে বাংলা-বাঙ্গালী জাতির পক্ষ থেকে কবি নজরুলের যেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়েছিলো তিনি সেই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেছিলেন। উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি কোলকাতার মুসলিম ইন্সটিটিউট (ওয়েলসলী স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো )। এ সংবর্ধনায় কবি নজরুলকে সোনার দোয়াত-কলম ও রুপার তৈরী ক্যাসকেট দেওয়া হয়েছিলো।
জীবনের কিছু সময় তিনি সমবায় সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। শেষ জীবনে আইন ব্যবসায় নেমে পড়েন এবং পাশাপাশি আলফাডাঙ্গা এ জেড পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তার সম্পত্তির উপরে আলফাডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। আলফাডাঙ্গার বুড়াইস গ্রামে খান বাহাদুর আসাদ উজ জামানের বাড়িতে এখনো দৃষ্টিনন্দন ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে। বিল্ডিংগুলো কালের বিবর্তে সামান্য বিবর্ণ হলেও ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে।