বিশ শতকের শুরুতে মনোবিজ্ঞানীরা এই ‘ভালো আছি’ বলার গুরুত্ব বুঝতে শুরু করলেন। ফরাসী মনোবিজ্ঞানী ডা. এমিল কোয়ে বাস্তব গবেষণায় দেখলেন- ভালো কথা বার বার বললে ভালো জিনিসগুলোই তার দিকে আকৃষ্ট হয়। সে ভালো হতে থাকে। তিনি তার ক্লিনিকে রোগমুক্তির জন্যে প্রয়োগ করলেন অটোসাজেশন।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!১৯১০ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত মাইগ্রেন, মাথাব্যথা, বাতব্যথা, অ্যাজমা, প্যারালাইসিস, তোতলামি, টিউমার, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, অনিদ্রা থেকে হাজার হাজার মানুষকে ভালো করেছেন এই অটোসাজেশন প্রয়োগ করে। তার এই নিরাময় প্রক্রিয়ায় রোগীকে কিছুদিন সকালে ও বিকেলে একাগ্র মনোযোগ দিয়ে ২০ বার বলতে হতো ‘ডে বাই ডে ইন এভরি ওয়ে আই অ্যাম গেটিং বেটার অ্যান্ড বেটার’। ব্যস, রোগ উধাও।
বাংলাদেশে ফলিত মনোবিজ্ঞানের পথিকৃত প্রফেসর এম ইউ আহমেদ নিজের ওপর এই অটোসাজেশন প্রথম প্রয়োগ করেন ১৯৩৪ সালে। প্যারাটাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে ৪ মাস ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে থাকার পর ডাক্তাররা তার বাঁচার আশা বাদ দিয়ে তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। তাকে বজরা নৌকা করে বরিশালে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বুড়িগঙ্গায় নৌকায় উঠেই তিনি ভেতর থেকে বাঁচার মন্ত্র পেলেন। অন্তর থেকেই বার বার বলতে লাগলেন- ‘আমি বাঁচতে চাই! আমি বাঁচবো!’ তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন। একই প্রক্রিয়ায় ১৯৭৩ সালেও ৬৪ বছর বয়সে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ অবস্থা থেকে বেঁচে ওঠেন তিনি।
প্রফেসর এম ইউ আহমেদ শুধু নিজের ওপরই অটোসাজেশন প্রয়োগ করেন নি; তার প্রবর্তিত মেডিস্টিক সাইকোথেরাপি প্রক্রিয়ায় অটোসাজেশন দিয়ে হাজার হাজার রোগী বিভিন্ন জটিল ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিস্ময়করভাবে। মনোদৈহিক রোগ নিরাময়ে প্রফেসর এম ইউ আহমেদ অত্যন্ত সফলভাবে অটোসাজেশন প্রয়োগ করেন তিন দশক ধরে।