ঋণ করে কোনো ভোগ্যপণ্য কিনবেন না।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!ক্রেডিট কার্ড এটা কার্স কার্ড। বলবেন এটা অভিশপ্ত কার্ড। অর্থাৎ বাকিতে কেনার এই অভ্যাসটাকে চেঞ্জ করতে হবে। যা কিনবেন উপার্জন করবেন তারপরে কিনবেন। আপনার টেনশন থাকবে না।
আমি যত চিঠি পাই তার মধ্যে কত? আমার মনে হয় যে, ৩০ শতাংশের অধিক চিঠি হচ্ছে শুধু ঋণ। গুরুজী, ঋণমুক্তির জন্যে দোয়া করবেন। আরে আমি দোয়া করলে কী হবে? আপনাকে তো কুমিরে আটকে ফেলেছে। কুমিরের দাঁতের মধ্যে পড়লে এটা কিন্তু বেরুনোও যায় না ঢোকাও যায় না।
কুমির কিন্তু খুব বিপজ্জনক। অনেক লম্বা দাঁত তো। এভাবে যখন ধরল আপনি বের হতেও পারবেন না ঢুকতেও পারবেন না। টুকরা টুকরা করে খাবে। ঋণ হচ্ছে এরকম জিনিস।
যে-কোনো জিনিস কেনার আগে কী করবেন? নিজেকে জিজ্ঞেস করবেন যে, এটা আসলে আমার কেনা প্রয়োজন কিনা? এখনই কেনা প্রয়োজন কিনা? দেখবেন, সেভেনটি পার্সেন্ট কেনাকাটা থেকে আপনি নিজেকে রক্ষা করতে পারছেন।
অবস্থা এখন যেটা হয়েছে অতি ধনীর পরিমাণ কীরকম বেড়ে গেছে। যেমন, জেফ বেজোস, তার সম্পদের পরিমাণ ১১,২০০ কোটি ডলার বেড়েছে একবছরে। তার সম্পদের মাত্র এক শতাংশ ইথিওপিয়ার ১০ কোটি ৫০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশের পুরো স্বাস্থ্য বাজেটের সমান।
ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানী। স্বাস্থ্যখাত ও স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ খাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও সকল প্রাদেশিক সরকার মিলে যা ব্যয় করে তার চেয়ে বেশি টাকার মালিক মুকেশ আম্বানী। কীভাবে? এই আমাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে।
উইপোকা যে-রকম আগুনকে আলো মনে করে ঝাঁপ দেয় এবং পাখা পুড়ে যায় এবং মরে যায়। আমাদের অবস্থা হচ্ছে সে-রকম।
অতি ধনী বৃদ্ধির দিক থেকে বাংলাদেশ বোধ হয় শীর্ষে না দ্বিতীয় স্থানে? শীর্ষস্থান, চিন্তা করেন।
এবং কিছু কিছু মানুষের এত টাকা হয়ে গেছে সে টাকা দিয়ে কী করবে সে বোঝে না।
বলবেন যে, আমরা কী করতে পারি এই প্রেক্ষাপটে?
আমরা গরিব হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারি অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা না করে। অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা আমরা করব না। অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা যদি না করেন, ধরুন ৭০ ভাগ কেনাকাটাই হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা।
এখন আমাদের যে কেনাকাটার ব্যাপার, এবার চার দিনের কোর্সে একজন মহিলা প্রত্যয়নে খুব ভালো বলেছিলেন। তৃতীয় দিন এই ঋণের কথা আলোচনা হয়েছে। চতুর্থদিন সকালে আসছেন।
আসার পরে উনি প্রত্যয়নে বললেন যে, উনি চকলেট কালার বা ব্রাউন কালারের ড্রেস পরে আসছেন। মনে হলো যে, এই কালারের একটা ব্যাগ লাগে। হঠাৎ মনে হলো যে, কেন? আমি তো কালো কালারের ব্যাগ দিয়েই চলতে পারি।
বলে যে, আমি আর ব্যাগ কিনলাম না। আমি কালো ব্যাগটাই নিয়ে আসলাম এবং আমার কিছু পয়সা বাঁচল।
আমাদের এই যে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা। মানে অপচয় যদি বন্ধ করি আপনাকে কখনো ঋণগ্রস্ত হতে হবে না।
কারণটা হচ্ছে যত আপনি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনবেন তত ধনীর হাতে সম্পদ বাড়তে থাকবে। আর যত অপ্রয়োজনীয় জিনিস বর্জন করবেন আপনার সম্পদ বাড়তে থাকবে। কারণ ধনীদের সম্পদ বৃদ্ধি হ্রাস পাবে। মূল কারণ হচ্ছে এখন এই কনজ্যুমারিজম।
অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা আপনাকে বাধ্য করছে। আপনি বুঝতেই পারছেন না যে, এটা ছাড়া আপনি চলতে পারেন। আপনার মনে হচ্ছে এটা এসেনশিয়াল, এটা কিনতেই হবে।
এই অপ্রয়োজনীয় কেনাটাই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্যের সবচেয়ে বড় কারণ। যে কারণে অপচয়কারীকে বলা হয়েছে শয়তানের ভাই। এজন্যে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা বর্জন করবেন আর ঋণ করে কিছু কিনবেন না যদি না সেটা লাইফ সেভিংস হয় যে, আমার জীবন বাঁচানোর জন্যে এখন কিছু প্রয়োজন। সেটা আলাদা কথা।