1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : Azmul : Azmul Aziz
  3. [email protected] : musa :
বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৫৩ অপরাহ্ন

দুর্ভিক্ষ দুর্যোগ কীভাবে সৃষ্টি হয়?

  • সময় মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩
  • ১০৭ বার দেখা হয়েছে

যেভাবে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ দুর্যোগ সৃষ্টি করে আসছে সাম্রাজ্যবাদীরা

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

আসলে এই যে দুর্ভিক্ষ দুর্যোগ সাম্রাজ্যবাদীরা কীভাবে সৃষ্টি করে?

কলম্বাস যখন আমেরিকা অভিযান করলেন তখন হাইতিতে যেখানে গিয়েছিলেন সেখানে আরাওয়াক জাতির আড়াই লক্ষ মানুষ বাস করত।

এবং দুই বছরের মধ্যে অত্যাচার হত্যাযজ্ঞ এবং নির্যাতন থেকে বাঁচতে গণহারে আত্মহত্যার ফলে ৫০ শতাংশ আরাওয়াক নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল! যারা বেঁচেছিল স্প্যানিশরা তাদের দাস বানিয়ে ফেলল।

কলম্বাস গেল ১৪৯২ সালে। ১৫১৫ সালে অর্থাৎ স্প্যানিশরা আসার ২৩ বছরের মধ্যে আরাওয়াকদের সংখ্যা এখানে নেমে আসে ৫০ হাজারে! এবং ১৫৫০ সালে হাইতিতে মাত্র পাঁচশ জন আরাওয়াক বেঁচে ছিল। কারণ তাদের এটাই ছিল শেষ করে দেয়া।

স্প্যানিশরা যখন ক্যারিবিয়ান দ্বীপগুলো দখল করল, সেখানে ২০ লক্ষ মানুষ বাস করত। ১২ বছর পর সেখানকার জনসংখ্যা নেমে আসে ৬০ হাজারে। কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ এবং লুট-খুন এবং ধরে ধরে দাস বানানো।

২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন গবেষণা করে জানায় যে কলম্বাসের আমেরিকা অভিযানের পরবর্তী একশ বছরে ইউরোপীয়রা উত্তর আমেরিকা দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ৯০ শতাংশ আদিবাসী মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে যার সংখ্যা অন্তত সাড়ে পাঁচ কোটি। এটা গার্ডিয়ান ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি সংখ্যার রিপোর্ট।

যে কারণে ইংরেজরা বাংলায় এনেছিল দুর্ভিক্ষ

এবং এই পটভূমিটা যদি আপনি মাথায় রাখেন তাহলে বাংলায় যে দুর্ভিক্ষ এই দুর্ভিক্ষটাকে আপনি বুঝতে পারবেন। এবং ১৭৭০ সালে যে দুর্ভিক্ষ, যেটা বাংলা ১১৭৬ সাল ছিল, এই দুর্ভিক্ষের এই মন্বন্তরের কারণ এবং ফলাফলটাকে বুঝতে পারবেন।

ইংরেজরা বাংলা দখল করল ১৭৫৭ সালে।

এর আগ পর্যন্ত সারা পৃথিবীর যে ব্যবসা-বাণিজ্য এই বাণিজ্যিক ভারসাম্য এটা বাঙালির হাতে ছিল।

এবং বলা হতো যে পণ্য রপ্তানি বাবদ যে সোনারূপা, এটা শুধু বাংলার ধনভাণ্ডারে ঢুকত, কিন্তু বেরুত না কিছুই। যে কারণে সম্রাট আওরঙ্গজেব বলেছিলেন যে এই বাংলা হচ্ছে স্বর্গ। এটা হচ্ছে স্বর্গ। প্যারাডাইস অব ন্যাশনস।

বাংলার অর্থনীতি বৃটেনের তুলনায় ছয় গুণ বড় ছিল

এবং মোগল আমল বাদ দেন। যখন ১৭৫৭ সালের আগে বাংলার অর্থনীতি বৃটেনের তুলনায় ছয় গুণ বড় ছিল। ছয় গুণ বড়।

আরে ইংল্যান্ডের চেয়ে ছয় গুণ বড় অর্থনীতি ছিল আমাদের। ইংল্যান্ডের বাজারে ইংল্যান্ডে উৎপাদিত নিম্নমানের কাপড়ের অর্ধেক দামে, ইংল্যান্ডে যে কাপড় তৈরি করছে তারা নিম্নমানের কাপড় যেটা তার অর্ধেক দামে বাংলার উন্নতমানের কাপড় বিক্রি করা হতো। আমরা ওখানে গিয়ে বিক্রি করতাম। তারপরও লাভ থাকত।

কারণ রপ্তানিবাবদ বাংলা বছরে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা উপার্জন করত এই রপ্তানি কাপড় রপ্তানি করে সেই সময়। এই তথ্যটা হচ্ছে দি কর্পোরেশন দ্যাট চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড, নিক রবিন্সের লেখা বই। দি কর্পোরেশন দেট চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

পলাশি যুদ্ধের পর পরিকল্পিতভাবে তারা বাংলার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডটা ভেঙে দিল

পলাশি যুদ্ধের পরে কী হলো? পরিকল্পিতভাবে তারা বাংলারও অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডটা ভেঙে দিল। ছয় গুণ বড় অর্থনীতি। হস্তচালিত তাঁত ভেঙে ফেলল। শুল্ক ও রাজস্ব হার ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে দিল।

পলাশি যুদ্ধের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার তাঁতিদের ন্যায্য দাম দিত না। আবার তাদের নিযুক্ত দালাল ছাড়া অন্য কারো কাছে কাপড় বিক্রি করলে তাঁতিদের কুঠিতে ধরে নিয়ে গিয়ে চরমভাবে নির্যাতন করা হতো। ফলে কাপড় বুনে ও কাপড় বিক্রি করে পেট চালানো অসম্ভব হয়ে গেল।

তাঁতিরা বাধ্য হয়ে কৃষি কাজে ঝুঁকে পড়ল। যেরকম ১৭৭৬ সালে ঢাকায় ২৫ হাজার তাঁতি এবং ৮০ হাজার কাপড় বয়নকারী বাস করত। মোট জনসংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ।

১৮২০ সালে ঢাকার জনসংখ্যা নেমে আসছিল ৫০ হাজারে। কী বুঝলেন?

আরে আমরা এখন মানে এত বছর পরে দুই কোটি জনসংখ্যা আশ্চর্য হই। আরে ১৭৭৬ সালে এখানে ১০ লক্ষ লোক এই ঢাকায় বাস করত। এবং গ্রামের বহু পরিবারে সুতা কাটার কাজ করত মহিলারা। পুরুষরা তাঁতে কাপড় বুনত বা মাঠে চাষাবাদ করত। ফলে মহিলারাও উপার্জনহীন হয়ে পড়ল।

একদিকে শিল্প শেষ করা হলো। তারপরে খাদ্য উৎপাদন করে চাষাবাদ করে যে সে মানে চলবে সেটাও রাখল না। বাধ্যতামূলক নীল চাষের প্রবর্তন করল যাতে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়।

এবং অন্যদিকে- একদিকে তো আয় কমে যাচ্ছে, এবং ইংরেজরা লবণ এবং নিত্যপণ্যের যে দাম এটা দ্বিগুণ করে দিল। ফলে গ্রামগুলোতে অভাব-অনটন হানা দিতে শুরু করল।

তবে সবচেয়ে মারাত্মক আঘাত হলো যখন ইংরেজরা বাংলার দেওয়ানি লাভ করল তারপরে। ১৭৬৫ সালে, মানে শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা বিহার উড়িষার রাজস্ব আদায়ের অনুমতি নেয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

মোগল আমলে কৃষক তার আয়ের ১০-১৫ ভাগ খাজনা দিত। খাজনা দেয়ার পরও কৃষকের হাতে শস্য উদ্বৃত্ত থেকে যেত। ইংরেজরা একলাফে খাজনা বাড়িয়ে দিল ৫০ শতাংশ।

কোম্পানির গোমস্তরা খাজনা আদায়ের নামে লুট চালাতে লাগল এবং খোদ রবার্ট ক্লাইভের লেখা এক চিঠিতে আছে-

“বর্বরতার জন্যে ইংরেজদের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা এমন পর্যায় পৌঁছেছে যে নেটিভরা ইংরেজদের নাম শুনলে বা চেহারা দেখলে এমন আচরণ করে যেন তাদের নামের সাথে লেগে আছে অসহ্য দুর্গন্ধ।”

আর বাস্তবেও তারা তো গোসল করত না এবং দাঁত ব্রাশ করত না। এটা হচ্ছে উইলিয়াম ডালরিম্পলের ‘অ্যানার্কি’ বই থেকে। কারণ মুসলমান নামের বাঙালি নামের কারো উদ্ধৃতি দিলে বলে যে আচ্ছা এটা পার্শিয়াল আমাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব। প্রত্যেকটা সোর্স হচ্ছে ইউরোপিয়ান সোর্স। এবং যে কেউ বইগুলো পড়তে পারেন।

১৭৬৯ সালে বৃষ্টি কম, খরা হলো ফলন কম হলো। কিন্তু তখনও বাংলায় এক টাকায় তিন মণ চাল পাওয়া যেত। এক টাকায় তিন মণ।

১৭৭০ সালে শুরুতে ইংরেজরা সমস্ত চাল মজুদ করে ফেলল এবং বাইরে থেকে কোনো চাল আর সংগ্রহ করল না। চাল আটকে ফেলল এবং ১৭৭০ সালে এমন অবস্থা হলো যে মুর্শিদাবাদ যেটা জৌলুসের প্রতীক ছিল যেখানে বর্গিরা হানা দিত সবসময়, তার ৩০ মাইলের মধ্যে কোনো খাদ্যশস্য পাওয়া যায় নি কেনার জন্যে। এবং চালের দাম বেড়ে ৪০ গুণ হয়ে গেল। জুন মাসে টাকায় তিন মণ না তিন সের করে চাল বিক্রি হতে লাগল।

বেচলো কে? ইংরেজরা। এবং তাদের এদেশীয় বশংবদ দালালরা। কোম্পানির এক জুনিয়র এক্সিকিউটিভের বিবরণ রয়েছে তার বার্ষিক বেতন ছিল ৪০ পাউন্ড। তার বার্ষিক বেতন ছিল ৪০ পাউন্ড। এবং এই দুর্ভিক্ষের সময় চাল বেচে সে ৬০ হাজার পাউন্ড উপার্জন করে।

৪০ পাউন্ড থেকে বেতন হচ্ছে তার বার্ষিক। ৬০ হাজার পাউন্ড!

এখন বুঝতে পারছেন কী অস্বাভাবিক অবস্থা। এটা নিক রবিন্সের দি কর্পোরেশন দেট চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড এই বই থেকে।

“মরিবার পূর্বেই মুমূর্ষূদের দেহের মাংস শিয়াল কুকুর খাইয়া ফেলিত…”

জুলাই মাস থেকে চাল উধাও হয়ে গেল। কালো বাজারে টাকায় তিন সের মিললেও সেটা কেবল প্রভাবশালী লোকদের জন্যে। দুর্ভিক্ষ এমন মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে- এটা সুপ্রকাশ রায়ের ভারতের কৃষক বিদ্রোহ গণতান্ত্রিক সংগ্রাম থেকে- মানুষ তাদের সন্তান বিক্রি করিতে বাধ্য হইল। কিন্তু তাদের কে কিনিবে কে খাওয়াইবে। বহু অঞ্চলে জীবিত মানুষ মৃতের মাংস খাইয়া প্রাণ বাঁচাইবার চেষ্টা করিয়া ছিল। নদী তীরে মৃতদেহ ও মুমূর্ষু দেহে ছাইয়া গিয়াছিল মরিবার পূর্বেই মুমূর্ষূদের দেহের মাংস শিয়াল কুকুর খাইয়া ফেলিত। এ হচ্ছে ৭৬-এর মন্বন্তর।

ইংরেজ রেসিডেন্টের দরবার নিশ্চিত করল যে জীবিতরা মৃতদের মাংস খাচ্ছে

উইলিয়াম হান্টার তার বইতে যেটা লিখেছেন, “The husbandsman sold their cattle, they sold their implement of agriculture, they devour their seed-grains, they sold their sons and daughters still at land no buyers of children could be found. They ate the leaves of the trees and the grass of the field and in June the resident at the darbar found that the livings were feeding of the dead.”

উইলিয়াম হান্টারের ভাষায় হচ্ছে যে কৃষক তার গরু বিক্রি করল তাদের কৃষি সামগ্রী বিক্রি করল তাদের বীজ ধান খেয়ে ফেলল তাদের পুত্রকন্যাদের বিক্রি করতে শুরু করল। যখন আর পুত্রকন্যা বেচারও কেনারও লোক পাওয়া গেল না তখন তারা গাছের পাতা এবং ঘাস খেতে শুরু করল।

এবং ইন জুন রেসিডেন্ট এট দি দরবার- অর্থাৎ ইংরেজ রেসিডেন্টের দরবার তারা নিশ্চিত করল যে জীবিতরা মৃতদের মাংস খাচ্ছে। এবং এই দেশের তিন কোটি মানুষের এক কোটি মানুষ মারা যায়।

৭৬-এর দুর্ভিক্ষ ১৪ শতকের ইউরোপের ব্ল্যাক ডেথের চেয়েও বেশি নৃশংস

আমেরিকান ইতিহাসবিদ ও দার্শনিক জন ফিস্ক তার দি আনসীন ওয়ার্ল্ড বইতে ১৭৭০ সালের এই দুর্ভিক্ষকে ৭৬-এর দুর্ভিক্ষকে ১৪ শতকের ইউরোপের ব্ল্যাক ডেথের চেয়েও বেশি নৃশংস বলে উল্লেখ করেন।

তো আসলে ইংরেজরা তো লুট করার জন্যে আসছিল, এদেশের মানুষের কোনো কল্যাণের জন্যে আসে নাই।

বিপুল পরিমাণ কৃষক মৃত্যুর ফলে নিজেদের ব্যবসায়িক ক্ষতিপূরণ করার জন্যে কোম্পানি জমির খাজনা আরো ১০ শতাংশ বাড়িয়ে দিল।

৭৬-এর মন্বন্তরের ফলে আমাদের যে ঐতিহ্য সম্পদ সম্ভ্রম ছিল আত্মমর্যাদাবোধ ছিল এটা হারিয়ে যায়

তো আসলে ৭৬-এর যে দুর্ভিক্ষ এই দুর্ভিক্ষ বাংলার কৃষক সমাজের মেরুদণ্ডটাকে ভেঙে দেয়। মোগল আমলের যে বনেদি পরিবারগুলো ছিল সব নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তার জায়গায় কলকাতা নিবাসী নব্য ধনীর দল, যাদের সাথে প্রজার কোনো সম্পর্ক নাই তারা জমিদারির মালিক হয়ে যায়। যারা আসলে কখনো জমিদারিতে থাকত না, তারা শহরে থাকত।

তো আসলে এত বেশি সংখ্যক মানুষ মন্বন্তরে মারা গিয়েছিল যে কৃষি কাজ ও শিল্প কাজে লোকের অভাব দেখা দেয়। খাদ্য অর্থের অভাবে মানুষ চুরি ডাকাতি লুটপাট আরম্ভ করে। এবং খাদ্যের অভাবে গ্রামবাংলার মানুষ শহরমুখী হয় সামান্য খাবারের আশায়।

এর ফলে শহরগুলোর ওপর চাপ বাড়তে থাকে। পরিণতিটা কী হয়? দস্যুবৃত্তি বৃদ্ধি পায়। একই সাথে দারিদ্রের কবলে পড়ে সন্তান বিক্রি, ভিক্ষাবৃত্তি বেশ্যাবৃত্তি প্রভৃতি সমাজে বেড়ে যায় এবং আমাদের যে ঐতিহ্য ছিল সম্পদ ছিল সম্ভ্রম ছিল আত্মমর্যাদাবোধ ছিল এটা হারিয়ে যায়। যেটা এখনো আমরা উদ্ধার করতে পারি নাই।

যত দুর্যোগ আসুক, বাংলার জন্যে এটা হচ্ছে সুযোগ

কারণ যখন একটা জনগোষ্ঠীকে দুর্ভিক্ষ দিয়ে নির্মূল করা হয়, যখন সে খাবার পায় না, খাবারের জন্যে যখন তাকে সবকিছু করতে হয়, তখন তার আর কোনো সম্ভ্রমবোধ থাকে না।

তো আমরা সেরকম একটা জায়গা থেকে আমরা ক্রমাগত কী করছি? আজকে আমরা এমন একটা জায়গায় আসছি যে আমরা বলতে পারছি অন্তত কিছু মানুষ আমরা বলতে পারছি পৃথিবীতে যত দুর্যোগ আসে আসুক, দুর্ভিক্ষ আসে আসুক আমরা আমাদের কর্ম দিয়ে আমরা আমাদের ভাবনা দিয়ে আমরা আমাদের চিন্তা দিয়ে এটাকে সুযোগে রূপান্তরিত করব। (দর্শকের হাততালি)

এবং যত দুর্যোগ আসুক বাংলার জন্যে এটা হচ্ছে সুযোগ।

সবচেয়ে ভালোভাবে যখন আপনি কাজটা করতে পারবেন সমস্ত দুর্যোগ সুযোগে রূপান্তরিত হবে

কারণ আমরা ইতিবাচক ভাবতে পারছি বড় ভাবতে পারছি! ভাবনাটাকে এখন বিশ্বাস করতে হবে এবং কাজ করতে হবে। অর্থাৎ যার যে কাজ সে সবচেয়ে ভালোভাবে এই কাজটা করতে হবে। সবচেয়ে ভালোভাবে যখন আপনি কাজটা করতে পারবেন সমস্ত দুর্যোগ সুযোগে রূপান্তরিত হবে। যেভাবে করোনাকালে আমরা কাজ করেছিলাম বলে কিন্তু আমাদের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হয় নাই।

দেখেন ওখানে সবচেয়ে মজা কী? মানে আয়রনি কী? মানে বুদ্ধ মহামতি বুদ্ধ গয়াতে। উনি অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে বসছিলেন কী জন্যে?

ডিটাচড হওয়ার জন্যে। সংসার থেকে ডিটাচড হয়ে এবং সেই কি, সেই বোধি বৃক্ষের চারা নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীলঙ্কায়। সেটা গাছ হয়। ওটা হলো গিয়ে ছেলে এবং ওটার ওখান থেকে চারা নিয়ে আসা হয় আমাদের এই ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহার কমলাপুরে। ৬৩-৬৪ সালের দিকে। তো ওখান থেকে চারা আবার আমরা নিয়ে গেছি কোথায়? লামাতে। মুখতারানের সামনে অশ্বত্থ বৃক্ষ আছে।

তো বুদ্ধ অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে গিয়ে ছিলেন ডিটাচমেন্টের জন্যে, সবকিছু রেখে ডিটাচড হয়ে- এবং শ্রীলঙ্কা এখন সব অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে যায় ফিতা বাধে এটাচমেন্টের জন্যে। (হাসি) মানে এটা হচ্ছে কি, এটা হচ্ছে পরিহাস।

যে ওখানে যাচ্ছে সব এটাচমেন্টের জন্যে। অমুককে চাই তার নামে ফিতা বেঁধে আসো, ফিতা বেঁধে আসলে অমুককে পাওয়া যাবে। এটাচমেন্টের জন্যে।

নিজের ভাবনা বিশ্বাস এবং শক্তিকে যদি সংহত করা যায় তো বাইরের কেউ কিছুই করতে পারে না

তো আসলে নিজের ভাবনা নিজের বিশ্বাস এবং শক্তি এটাকে যদি সংহত করা যায় তো বাইরের কেউ কিছুই করতে পারে না।

বাইরে যত অপপ্রচার ছিল- যে বাংলাদেশের অর্থনীতি শেষ হয়ে যাবে করোনাকালে, বিপর্যস্ত হবে। বিপর্যস্ত হয় নাই। প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। কেন? আমরা ইতিবাচক ছিলাম আমরা বিশ্বাস করেছি। এবং এখনো যত দুর্যোগের কথাই বলা হোক, আমরা ভাববো বিশ্বাস করব কাজ করব এবং দুর্যোগ আমাদের জন্যে সুযোগে রূপান্তরিত হবে। তো আসলে এই বিশ্বাস এবং এই শক্তি সামর্থ্যটাই হচ্ছে সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট।

[প্রো-মাস্টার রিজুভিনেশন, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ থেকে ৩১ অক্টোবর, ২০২২ থেকে]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All rights reserved © RMGBDNEWS24.COM
Translate »