আসলে যে-কোনোকিছু ফেস করার যে সাহস শান্তভাবে বিনয়ের সাথে সম্মানের সাথে তমিজের সাথে এমনকি শত্রুকেও যিনি ফেস করতে পারেন শত্রুও তার কিছুই করতে পারে না।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!১. শোকরগোজার ও আশাবাদী হোন
সালাউদ্দীন ক্রুসেডের সময় কী করেছিলেন? যখন কিং রিচার্ড অসুস্থ হয়ে পড়লেন অন্য যে-কোনো সেনাপতি হলে এই সেনাপতি অসুস্থ হওয়ার সুযোগটা তিনি ব্যবহার করতেন। যেরকম ওয়াটার লু-র যুদ্ধে নেপোলিয়নের পরাজয়ের কারণ ছিল তার অসুস্থতা। প্রচণ্ড পেটের সমস্যা, ইনটার্নাল সমস্যা তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছিলেন না এবং রণক্ষেত্রে যেতেও ফিল্ডে কমান্ড পোস্টে যেতেও তার অনেক সময় লেগেছে এবং উনি যখন কমান্ড পোস্টে গেলেন বাই দ্যাট টাইম এভরিথিং ইজ ডিসাইডেড।
কিন্তু সালাউদ্দীন কী করলেন? সালাউদ্দীন হেকিম পাঠিয়ে দিলেন অথবা এমন কথাও আছে যে তিনি নিজেই তার চিকিৎসার জন্যে চলে গেলেন। চিকিৎসা হলো, সুস্থ হলেন। যুদ্ধ আর হলো না। রিচার্ড আর যুদ্ধ করলেন না।
একজন ধ্যানী যে-কোনো সিচুয়েশন যে-কোনো পরিবেশে সবচেয়ে বেশি শোকরগোজার সবচেয়ে বেশি আশাবাদী এবং সবচেয়ে বেশি স্রষ্টার ফয়সালার ওপরে নির্ভরশীল। কিন্তু তিনি করেন তার সবটুকুই, সবচেয়ে ভালোভাবে।
অর্থাৎ সে ধ্যানী যে কাজটাই করবেন সবচেয়ে ভালোভাবে করবেন। সেই কাজটা যতটা ভালোভাবে যতটুকু ভালোভাবে করা সম্ভব একজন মানুষের পক্ষে ততটুকু ভালোভাবে তিনি করবেন। এবং এটাই হচ্ছে ধ্যানের বিশেষত্ব যে, সে একজন মানুষকে তার সামর্থ্যের সবটুকু কাজে লাগাতে যে প্রক্রিয়া সে প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলে দেয়।
২. কাজের মধ্যে হৃদয়টাকে নিক্ষেপ করে দিন
এখন কিন্তু মানুষের প্রত্যাশা আমাদের কাছ থেকে সেরকমই। এরকম এক জায়গায় কথাবার্তা হচ্ছিল। যখন কেউ বলে যে, কাজটা কোয়ান্টামকে দিয়ে দাও ওরা করে ফেলবে তোমাদের জন্যে যদি এত চ্যালেঞ্জিং হয় গিভ ইট টু কোয়ান্টাম। করে ফেলবে এরা।
তো এই যে প্রত্যাশা এই যে ইমেজ এই ইমেজটাই হচ্ছে সাকসেসের জন্যে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যে, আপনি পারেন। কাকে স্যালুট করা হয়? যে পারে তাকে স্যালুট করা হয়। যে উদীয়মান সূর্য তাকে স্যালুট করা হয়। অস্তমিত সূর্যকে কেউ স্যালুট করে না।
তো আমরা আমাদের সর্বোত্তমটা করার চেষ্টা করব। অর্থাৎ যা আমরা করব যা আমরা করি থ্রো ইউর হার্ট ঐ কাজের মধ্যে, ঐ কাজের মধ্যে হৃদয়টাকে নিক্ষেপ করে দেবো। কাজ কথা বলবে। কোয়ান্টামমে আমরা আমাদের হৃদয়টাকে ঢেলে দিয়েছি। ওখানে যিনি যান যত অস্বস্তি নিয়ে যান না কেন যত বিরক্তি নিয়ে যান না কেন যাওয়ার পরে শান্ত। কারণ ওখানে গেলে হৃদয়ের ছোঁয়া পান। যারা এটাকে করেছে তারা যে এটা হৃদয় দিয়ে করেছে এই ছোঁয়া পান।
তাজমহলের আর্কিটেক্টও হৃদয় ঢেলেই তাজমহল গড়েছিলেন
ধরুন তাজমহল এটা একটা অপচয়। এর চেয়ে বড় অপচয় কিছু হতে পারে না। কিন্তু আপনি যখন তাজমহলে যাবেন, আপনার মনে হবে যে, আপনি একটা আলাদা জায়গায় চলে গেছেন।
আবার আপনি যখন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দেখতে যাবেন আপনার মনে হবে যে আপনি একটা জায়গা দেখছেন। এটা আলাদা জায়গা বলে মনে হবে না। কেন? কারণ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে দম্ভ আছে। যখন এটা করা হয়েছিল তখন তাজমহলকে অতিক্রম করার জন্যে করা হয়েছিল ভিক্টোরিয়ার স্মরণে। এটা হৃদয়কে আকর্ষণ করে না। হ্যাঁ বড় সুন্দর জিনিস ঠিক আছে!
কিন্তু তাজমহল যে শিল্পী বানিয়েছিলেন উনি জানতেন যে এটা বানানোর পরে আমি আর বাঁচব না। এবং এটা বানানোর পরে তিনি বাঁচেনও নি। যে আর্কিটেক্ট তিনি তার সমস্ত হৃদয় দিয়ে স্থাপনাটা গড়েছেন। যার ফলে ওখানে গেলে আপনি হারিয়ে যাবেন। পূর্নিমার রাতে যান আপনি হারিয়ে যাবেন। কিন্তু আপনি পূর্ণিমার রাতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তো কাছেই, কলকাতায় যান আপনি হারাবেন না আপনি দেখবেন।
দেখা আর দেখার মাঝে হারিয়ে যাওয়া এই দুটোর মধ্যে আকাশ এবং পাতালের তফাৎ রয়েছে।
তো একজন ধ্যানী যখন কাজ করবে, একজন ধ্যানী যখন কারো সাথে কথা বলবে সেই মানুষটা হারিয়ে যাবে তার কথার মধ্যে। কেন? ধ্যানী তার মঙ্গলের জন্যে তার কল্যাণের জন্যে অন্তর থেকে কথা বলছে হৃদয় দিয়ে কথা বলছে হৃদয় ঢেলে দিয়ে কথা বলছে।
৩. যে কাজই করুন- It should be memorable!
আসলে সূত্র কিন্তু সবসময় এক। কনফুসিয়াস যেটা বলেছেন, আমাদের অলি-বুজুর্গরাও বলেছেন যে, অন্তর ঢেলে দাও।
এখন অলিম্পিকের গোল্ড বিজয়ীরা বলছে যে থ্রো ইউর হার্ট! কথা কিন্তু এক। এখন কোন কাজে এটা নিক্ষেপ করবেন এটা হচ্ছে ইম্পর্টেন্ট।
অতএব কথা বলবেন বেস্ট কথা। কাউকে সাহায্য করবেন রাস্তা পার হতে, সে যেন জীবনে মনে রাখে যে, না একজন লোক আমাকে রাস্তা পার করে দিয়েছিল। খুব সহজ সাধারণ জিনিস কিন্তু। নাম না জানলেও যখন তার মনে হবে সে আপনার জন্যে দোয়া করবে।
অর্থাৎ যে কাজটাই করেন ইট শুড বি মেমোরিবল ওয়ান। কখন হবে? যখন আপনি অন্তর ঢেলে দিয়ে করবেন।
এই মনটাকেই যদি আমরা ঢেলে দেই প্রতিটি কাজে যখন পড়বেন পড়েন যখন লিখবেন লেখেন যখন কথা বলবেন বলেন। কিন্তু অন্তরটাকে ঢেলে দিয়ে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে সেটা যে-কোনো জায়গায় হোক। পেশাগত হোক সাংগঠনিক হোক পারিবারিক হোক ব্যক্তিগত হোক।
৪. লক্ষ্যের বিপরীত কোনো কাজে জড়াবেন না
ধরুন হোটেলের রান্না আর মায়ের রান্না তফাৎটা কোথায়? মা যখন রান্না করে সন্তানের জন্যে কিছু না থাকলেও সে ঐটা দিয়ে বেস্ট ওয়েতে করে। হার্টটা দিয়ে করে।
তো আপনি হার্টটা দিয়ে করবেন। যার সাথে কথা বলবেন, কী বলেন আপনার কথা শুনবে না? আরে আপনার কথা শোনার জন্যে সে আপনার বাসায় এসে বসে থাকবে। পরামর্শ নেয়ার জন্যে বাসায় এসে বসে থাকবে যখন আসলে পারপাস অব লাইফটা আমাদের কাছে পরিষ্কার হবে যে, আমার জীবনে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যটা কী, কেন বেঁচে থাকব, কী জন্যে আমি আমার জীবনটাকে ব্যয় করব, জীবনটাকে দেবো।
অতএব সবসময় লক্ষ্য থাকবে যে, আমি আমার লক্ষ্যের বিপরীত কোনো কাজের সাথে জড়িয়ে আছি কিনা, আমি যে পারপাস অব লাইফ, যে কারণে জীবনটাকে উৎসর্গ করতে চাচ্ছি সেই লক্ষ্যের বিপরীত কোনোকিছুর সাথে আমি জড়িয়ে পড়ছি কিনা! শয়তান কিন্তু সবসময় চেষ্টা করবে। অতএব আকলটাকে ব্যবহার করবেন, ব্রেনটাকে ব্যবহার করবেন।
[প্রো-মাস্টার রিজুভিনেশন, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ থেকে ৩১ অক্টোবর, ২০২২ থেকে]