ঘটনাবলি
১৭০২ : প্রথম ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য কোরান্ট’ প্রকাশিত হয়।
১৮২৩ : আমেরিকায় প্রথম সাধারণ স্কুল চালু হয়।
১৯৪৮ : পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা না দেয়ায় পূর্ব বাংলায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। পুলিশ ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
১৯৭২ : বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গ্রিস।
জন্ম
১৮৪০ : দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দার্শনিক, গণিতজ্ঞ ও বাংলা শর্টহ্যান্ড লিপি উদ্ভাবক।
১৯১৮ : শিশুসাহিত্যিক ইন্দিরা দেবী।
১৯৩৯ : সাহিত্যিক বাণী বসু।
মৃত্যু
১৮৯৪ : বিশিষ্ট নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক রাজকৃষ্ণ রায়।
১৯৫৫ : নোবেলজয়ী স্কটিশ অণুজীব বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং।
১৯৯১ : ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা অধ্যক্ষ আবুল কাশেম।
অধ্যক্ষ আবুল কাশেম
অধ্যক্ষ আবুল কাশেম ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ। তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্থপতি এবং তমদ্দুন মজলিস ও বাঙ্লা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯২০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার ছেদন্দি গ্রামে। বরমা হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে বিএসসি (অনার্স) এবং ১৯৪৫ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের লেকচারার পদে যোগ দেন। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।
আবুল কাশেমের উদ্যোগে ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিশ। তিনি ছিলেন এর সাধারণ সম্পাদক। এ সংগঠনই সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতিদানের দাবি তোলে। এই লক্ষ্যে ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা: বাংলা না উর্দু’ শিরোনামে একটি বই প্রকাশিত হয়। বইটিতে আবুল কাশেম প্রণীত একটি সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবনাও ছিল এবং তাতে ছিল বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম এবং পূর্ববাংলার অফিস আদালতের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার দাবি।
তারই উদ্যোগে তমদ্দুন মজলিশ ১৯৪৭ সালের ১ অক্টোবর সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনে নেতৃত্ব দেয়। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবির সপক্ষে ব্যাপক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে তিনি অসামান্য অবদান রাখেন। ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত প্রথম প্রতিবাদ সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ দেশব্যাপী ধর্মঘট সংঘটনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। বাংলা সাপ্তাহিক ‘সৈনিক’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। তমদ্দুন মজলিশের মুখপত্র হিসেবে এই পত্রিকা ভাষা আন্দোলনের আদর্শ ও লক্ষ্য প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আবুল কাশেম যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘ ১৯ বছর (১৯৬২-১৯৮১) বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।
এ সময় তিনি কলেজ থেকে কোনো পারিশ্রমিক বা বেতন গ্রহণ করেননি। তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, একমাত্র পথ, বিবর্তনবাদ, ইসলাম কি দিয়েছে এবং কি দিতে পারে, মুক্তি কোন পথে, শ্রেণি সংগ্রাম ইত্যাদি গ্রন্থ রচনা করেন। এছাড়া স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্যে শিক্ষা, ইসলাম, সংস্কৃতি ও রাজনীতি বিজ্ঞানের পাঠ্যবইসহ প্রায় ১০০টি বই রচনা করেন। এর মধ্যে ৪০টি পদার্থবিদ্যার পাঠ্যবই এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিজ্ঞান বিষয়।
পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ড পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ (মরণোত্তর) নানা পদকও সম্মাননা লাভ করেন তিনি।
প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম ১৯৯১ সালের ১১ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত