ঘটনাবলি
১৯২২ : দুই রঙ বিশিষ্ট টেকনিকালারে নির্মিত প্রথম ছবি ‘টোল অব দ্য সি’ মুক্তি পায়।
১৯৭৬ : ‘মাইক্রোসফট’ নামটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে ট্রেড মার্ক হিসেবে নিবন্ধিত হয়।
জন্ম
১৮৮৫ : দেবেন্দ্র মোহন বসু, প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান-প্রশাসক।
১৮৯৮ : কার্ল জিগলার, নোবেলজয়ী জার্মান রসায়নবিদ।
১৯১৯ : মুহম্মদ আবদুল হাই, ধ্বনি বিজ্ঞানী ও ভাষাতাত্ত্বিক।
১৯২১ : ভার্গিজ কুরিয়েন, ভারতে দুগ্ধ উৎপাদনে শ্বেত বিপ্লবের জনক।
মৃত্যু
১৯২৩ : গণিতবিদ যাদবচন্দ্র চক্রবর্তী।
২০১৭ : বাংলাদেশি নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যশিক্ষক রাহিজা খানম ঝুনু।
ধ্বনিবিজ্ঞানী মুহম্মদ আবদুল হাই
মুহম্মদ আবদুল হাই ছিলেন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও ধ্বনিবিজ্ঞানী। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি ছিল তাঁর গভীর অনুসন্ধিৎসা। ভাষায় ধ্বনির ব্যবহার, উচ্চারণ ও গঠন প্রকৃতি নিয়ে তিনি বস্তুনিষ্ঠ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেছেন। সুপরিচিত হয়েছেন ধ্বনিতাত্ত্বিক বা ধ্বনিবিজ্ঞানী হিসেবে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৯ সালের ২৬ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে। বাবা আবদুল গণি, মায়ের নাম ময়মুন্নেসা খাতুন। শিক্ষাজীবন শুরু হয় মরিচা গ্রামের কাছে বর্ধনপুর জুনিয়ার মাদ্রাসায়। ১৯৩৬ সালে হাই মাদ্রাসা, ১৯৩৮ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪১ সালে বাংলায় বিএ অনার্স এবং ১৯৪২ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তিনিই ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রথম মুসলমান ছাত্র।
‘বেঙ্গল জুনিয়র সার্ভিস’–এ বেশ কিছুকাল শিক্ষকতা করেন। এর পরে কৃষ্ণনগর কলেজ, রাজশাহী সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন।
ধ্বনিবিজ্ঞানে তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল। এ বিষয়ে গবেষণাও করেছেন বিস্তর। প্রাণের গভীরে ছিল বাঙালি, বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি প্রবল অনুরাগ। আর তাই পাকিস্তান সরকার রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধের সীদ্ধান্ত নিলে প্রতিবাদে সোচ্চার হন তিনি। পাক সরকার আরবি ও রোমান হরফে বাংলা বর্ণমালা সংস্কারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার বিরোধিতায়ও সরব ছিলেন আবদুল হাই। পাকিস্তানি সংস্কৃতির আগ্রাসনে বাঙালির নিজস্ব ঐতিহ্য ও কৃষ্টি যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্যে তাঁর নানান কর্ম তৎপরতা ছিল পরাধীন দেশে অন্যদের প্রেরণার উৎস।
আবদুল হাই রচিত বিভিন্ন গ্রন্থের মধ্যে সাহিত্য ও সংস্কৃতি, বিলাতে সাড়ে সাত শ’ দিন, তোষামোদ ও রাজনীতির ভাষা, ভাষা ও সাহিত্য, এ ফোনেটিক এন্ড ফোনোলোজিক্যাল স্টাডি অব নেইজালস অ্যান্ড নেইজালাইজেশন ইন বেঙ্গলি (বাংলায় নাসিকা ও নাসিকাকরণের স্বরবিষয়ক ও শব্দ-বিদ্যাগত গবেষণা), ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
গবেষণাধর্মী ও চিন্তাশীল বেশ কিছু প্রবন্ধ লিখেও তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন। বিদেশের বৌদ্ধিক সমাজের সঙ্গে জ্ঞানের অংশীদার হওয়ার জন্যে তিনি বহু আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পজিয়ামে, প্রশিক্ষণমূলক প্রোগ্রামে যোগদান ও সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে তিনি দশ মাস মেয়াদে ১৯৬৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার মিজোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন।
প্রথিতযশা এই মনীষী ১৯৬৯ সালের ৩ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত