1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন

ইতিহাসে আগস্ট ২১ – কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা নায়ক রাজ রাজ্জাক এর মৃত্যুদিন

  • সময় শনিবার, ২১ আগস্ট, ২০২১
  • ৯৫৮ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা নায়ক রাজ রাজ্জাক এর মৃত্যুদিন

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৩৩তম (অধিবর্ষে ২৩৪তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।

ঘটনাবলি

১৮৭৮ : প্রথম আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা।
১৯১১ : লিওনার্দো দা ভিঞ্চির চিত্রকর্ম মোনালিসার ছবিটি আজকের দিনে লুভর মিউজিয়াম থেকে চুরি হয়ে যায়।
১৯৫৯ : হাওয়াই আমেরিকার ৫০তম রাজ্যে পরিণত হয়।

জন্ম

১৯৭৩ : সের্গেই ব্রিন, রুশ বংশোদ্ভুত মার্কিন কম্পিউটার প্রকৌশলী ও সার্চ ইঞ্জিন গুগলে অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৮৬ : বিশ্বের দ্রুততম মানব উসাইন বোল্ট

মৃত্যু

১৯৪৩ : সাহিত্যে নোবেলজয়ী ডেনিশ লেখক হেইনরিক পন্টোপপিডান
১৯৯৫ : ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণকারী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর
২০০৬ : ভারতীয় সানাই বাদক ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেব
২০১৭ : নায়ক রাজ রাজ্জাক, বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা।

অভিনেতা রাজ্জাক

আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন একজন জনপ্রিয় বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা; যিনি নায়করাজ রাজ্জাক নামে সুপরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী তাকে ‘নায়করাজ’ উপাধি দিয়েছিলেন।

জন্মগ্রহন করেন ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জে। বাবার নাম আকবর হোসেন ও মায়ের নাম নিসারুননেছা। রাজ্জাকরা ছিলেন নাকতলা এলাকার জমিদার। তিনি কলকাতার বাশদ্রোণীর কাছে খানপুর হাইস্কুলে পড়াশুনা করেন।

নিজের জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবনের শুরু।

নায়ক রাজের জীবনের শুরুটাই কেটেছে মহাযুদ্ধের সঙ্গে লড়াই করে করে। সেই লড়াই জিতেই রাজা হয়েছিলেন। বাংলাদেশে এসেছিলেন শরণার্থী হিসেবে। সময়ের পরিক্রমায় তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে ‘নায়করাজ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে এক রাতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এক হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আশ্রয় নেন।

পরের দিন ২৬ এপ্রিল পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। সেসময় তার সাথে ছিল তার স্ত্রী লক্ষ্মী ও পুত্র বাপ্পারাজ এবং পীযূষ বসুর দেওয়া একটি চিঠি ও পরিচালক আব্দুল জব্বার খান ও শব্দগ্রাহক মণি বোসের ঠিকানা। স্ত্রী পুত্রকে শরণার্থী শিবিরে রেখে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সাথে সাক্ষাৎ করলে খান তাকে আশ্বাস দেন। তখন রাজ্জাক ৮০ টাকা মাসিক ভাড়ায় স্ত্রী-পুত্র নিয়ে কমলাপুরে এক বাসা ভাড়ায় ওঠেন।

নিজের সম্পর্কে রাজ্জাক বলেন, ‘আমি আমার জীবনের অতীত ভুলি না। আমি এই শহরে রিফিউজি হয়ে এসেছি। স্ট্রাগল করেছি। না খেয়ে থেকেছি। যার জন্যে পয়সার প্রতি আমার লোভ কোনোদিন আসেনি। ওটা আসেনি বলেই আজকে আমি এতো দূর শান্তিতে এসেছি।’

১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং সত্তরের দশকেও তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা এবং বড় ভালো লোক ছিলসহ মোট ৩০০টির বেশি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। তার মালিকানার রাজলক্ষী প্রোডাকশন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।

১৯৮২ সালে ‘বড় ভাল লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয় করেন রাজ্জাক। মহিউদ্দিন পরিচালিত ছবিটির রচনা করেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক। এই ছবিতে রাজ্জাককে একজন পীরের সন্তান চরিত্রে দেখা যায়, যার নিজের মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে। কিন্তু তার বাবার বন্ধুর মেয়ের (অঞ্জু ঘোষ) প্রতি তার মোহ জাগলে তার সেই ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকলে সে এই পথ থেকে ফিরে এসে মানবসেবায় ব্রতী হয়। এই ছবিতে ইয়াসিন চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার তৃতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

নিজের কাজের জন্যে কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, ইন্দো-বাংলা কলা মিউজিক পুরস্কার, ইফাদ ফিল্ম ক্লাব পুরস্কার, বাবিসাস পুরস্কার, মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার, টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রাব) পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।

একজীবনে সিনেমা ছাড়া অন্য কিছুই স্থায়ীভাবে করেননি। যতক্ষণ শক্তি ছিল, পুরোদমে ক্যামেরার সামনে–পেছনে কাজ করে গেছেন। নিজের কাজের প্রতি তার একাত্মতা ছিল অসাধারণ। রাজা হিসেবেই তাকে মনে রাখবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

 

সূত্র: সংগৃহীত

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com