গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২৪২তম (অধিবর্ষে ২৪৩তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৯০৯: কানাডায় জীবাশ্ম বহনকারী আমানত বার্গেস শেল আবিষ্কার করেন চার্লস ডুলিটল ওয়ালকোট।
১৯১৬ : আর্নেস্ট শ্যাকলটন অ্যান্টার্কটিকার এলিফ্যান্ট দ্বীপে আটকা পড়ে থাকা তার সমস্ত লোকের উদ্ধার কাজটি শেষ করেছেন।
১৮৫৬ : কার্ল ডেভিড টলমে রুঙ্গে, জার্মান গণিতবিদ ও পদার্থবিদ।
১৮৭১ : আর্নেস্ট রাদারফোর্ড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নিউজিল্যান্ড ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ।
১৮৮৪ : থিওডোর সভেডবার্গ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইডিশ রসায়নবিদ ও পদার্থবিদ।
১৯১২ : এডওয়ার্ড মিল্স পারসেল, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান পদার্থবিদ।
১৯১৩ : রিচার্ড স্টোন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ অর্থনীতিবিদ।
১৮৭৭ : ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার ভারতীয় বাঙালি কবি তরু দত্ত।
১৯১১ : বহু ভাষাবিদ ভারতীয় বাঙ্গালি পণ্ডিত হরিনাথ দে।
১৯৭৬ : ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির অবিসংবাদী নেতা ও প্রখ্যাত চিকিৎসক যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়।
২০০৬ : নোবেল বিজয়ী মিশরীয় সাহিত্যিক নাগিব মাহফুজ।
২০১৭ : বাংলাদেশি সঙ্গীত শিল্পী আব্দুল জব্বার।
আব্দুল জব্বার ছিলেন বাংলাদেশি বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পী। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম, জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অনেক উদ্বুদ্ধকরণ গানের গায়ক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়, সালাম সালাম হাজার সালাম ও জয় বাংলা বাংলার জয় গান’ তিনটি ২০০৬ সালে মার্চ মাস জুড়ে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান করে নেয়।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায়। ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান গেয়েছিলেন ১৯৬২ সালে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হোন।
১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সংগম’ ছবির গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। সে বছর ‘পিচ ঢালা পথ’ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ গান তাকে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ ছবিতে আলম খানের সুরে তার গাওয়া ‘ও রে নীল দরিয়া’ গানটিও ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘কোথায় আমার নীল দরিয়া’ শিরোনামে তার প্রথম মৌলিক অ্যালবাম।
১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা যোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের সময় ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন আব্দুল জব্বার।
বরেণ্য এ শিল্পী অনেক ছবিতেই প্লেব্যাক করেছেন। এর মধ্যে সংগম, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, পিচ ঢালা পথ, এতটুকু আশা, ঢেউয়ের পর ঢেউ, ভানুমতি, ক খ গ ঘ ঙ, দীপ নেভে নাই, বিনিময়, জীবন থেকে নেয়া, নাচের পুতুল, মানুষের মন, স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা, ঝড়ের পাখি, আলোর মিছিল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩)
একুশে পদক (১৯৮০)
স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬)
বাচসাস পুরস্কার (২০০৩)
সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস- আজীবন সম্মাননা (২০১১)
জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার
বরেণ্য এই শিল্পী ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত