গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ বছরের ২১৬তম (অধিবর্ষে ২১৭তম) দিন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যুদিনসহ আরও কিছু তথ্যাবলি।
১৮৭০ : ব্রিটিশ রেডক্রস সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৫৯ : ন্যুট হ্যামসুন, নোবেলজয়ী নরওয়েজীয় কথাশিল্পী।
১৯০৫ : বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি বেতার সম্প্রচারক, নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক।
১৯২৯ : কিশোর কুমার, ভারতীয় বিখ্যাত বাঙালি গায়ক এবং নায়ক।
১৯৪৭ : আবুল হাসান, বাংলাদেশি আধুনিক কবি।
১৯৬১ : বারাক ওবামা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট।
১৯৩১ : ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী বাঙালি রামকৃষ্ণ বিশ্বাস।
২০০৩ : মার্কিন বিজ্ঞানী, চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী ফ্রেডরিখ চ্যাপম্যান রবিন্স।।
২০২০ : প্রখ্যাত বাঙালি কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবুল হাসান ছিলেন বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি। পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। প্রকৃত নাম আবুল হোসেন মিয়া। তিনি ষাটের দশকের জনপ্রিয় কবিদের একজন এবং সত্তরের দশকেও কবিতার জন্যে উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৭ সালের ৪ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ার বর্ণি গ্রামে মাতুলালয়ে। তার পৈতৃক নিবাস পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের ঝনঝনিয়া গ্রামে। বাবা আলতাফ হোসেন মিয়া ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার।
ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে বরিশালের বিএম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে বিএ শ্রেণীতে ভর্তি হন, কিন্তু পরীক্ষা শেষ না করেই ১৯৬৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের বার্তা বিভাগে যোগদান করেন। পরে তিনি গণবাংলা এবং দৈনিক জনপদ-এ সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
আবুল হাসান অল্প বয়সেই একজন সৃজনশীল কবি হিসেবে খ্যাতিলাভ করেন। মাত্র এক দশকের কাব্যসাধনায় তিনি আধুনিক বাংলা কাব্যের ইতিহাসে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেন। আত্মত্যাগ, দুঃখবোধ, মৃত্যুচেতনা, বিচ্ছিন্নতাবোধ, নিঃসঙ্গচেতনা, স্মৃতিমুগ্ধতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবুল হাসানের কবিতায় সার্থকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। ১৯৭০ সালে এশীয় কবিতা প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম হন। তার উলেখযোগ্য গ্রন্থ: রাজা যায় রাজা আসে, যে তুমি হরণ করো ও পৃথক পালঙ্ক। মৃত্যুর পর কাব্যনাট্য ওরা কয়েকজন ও আবুল হাসান গল্প-সংগ্রহ প্রকাশিত হয়। কবিতার জন্যে ১৯৭৫ সালে তিনি মরণোত্তর ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার’ এবং ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের ‘একুশে পদক’ লাভ করেন।
মাত্র ১০ বছর তার কাব্য জীবন। ২৯ বছর তার জীবনকাল। আবুল হাসানের কবিতায় উদ্দাম যৌবনের গান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তার সৃষ্টিতে তিনি আজও স্বতন্ত্র। তিনি গতানুগতিক কবি নন। তিনি ছিলেন ভিন্ন মাত্রার অন্যরকম কবি। তার শব্দাবলী, বিষয় নির্বাচন, কবিতা কাঠামোর বিন্যাস, ব্যাঞ্জনাময় শব্দ, সৃষ্টির কৌশল, সব কিছুতেই ভিন্নতা রয়েছে। তিনি ঐতিহ্যবিরোধী কবি ছিলেন না, তবে ঐতিহ্যকে টায় টায় ব্যবহার করেন নি, বরঞ্চ তাকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টায় নিবেদিত ছিলেন। ফলে তার কবিতায় উঠে এসেছে নানা মাত্রিক সংশয়, সন্দেহ, উত্তেজনা, ভালো-মন্দের নানা চিত্রাবলী যা যৌবনেরই জয়গান।
কবি আবুল হাসান ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: সংগৃহীত