১৯৪৫ : বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৪৫ : ঐতিহাসিক মস্কো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির ভিত্তিতে কোরিয়াকে দুই অংশে বিভক্ত করা হয়।
১৯৪৫ : জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা ‘আইএমএফ’-এর কার্যক্রম শুরু হয়৷
১৫৭১ : ইয়োহানেস কেপলার, জার্মান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
১৭৯৭ : মির্জা আসাদুল্লাহ খাঁ গালিব, উর্দু ও ফার্সি ভাষার কবি।
১৮২২ : লুই পাস্তুর, জীবাণুতত্ত্ববিদ।
১৯২৬ : জেব-উন-নেসা জামাল, গীতিকার।
১৯২৭ : সুবল দাস, বাংলাদেশি সুরকার।
১৯৩২ : শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি গীতিকার।
১৯৩৫ : সৈয়দ শামসুল হক, বাংলাদেশি কবি ও সাহিত্যিক।
১৯৩৫ : রাবেয়া খাতুন, একুশে পদক বিজয়ী বাংলাদেশি লেখিকা।
১৯৭৯ : বাঙালি গল্পকার, কবি এবং ঔপন্যাসিক মণীশ ঘটক।
১৯৮৮ : রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের একাদশ অধ্যক্ষ স্বামী গম্ভীরানন্দ।
১৯৯৬ : বাংলাদেশের একজন পানি বিশেষজ্ঞ বি এম আব্বাস।
রাবেয়া খাতুন ছিলেন একজন বাংলাদেশি কথাসাহিত্যিক। তিনি বাংলাদেশের ভ্রমণসাহিত্যেরও অন্যতম লেখক। কর্মজীবনে অনেক মানুষের সান্নিধ্যে এসেছেন তিনি। উদ্বুদ্ধ হয়েছেন যাদের দ্বারা স্মৃতিমূলক রচনার মধ্য দিয়ে তাদের ব্যক্তিত্ব ও বৈচিত্র্যময় ব্যক্তিত্বকে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন। ছোটদের জন্যেও লিখে গেছেন।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে মামার বাড়িতে। পৈতৃক বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর গ্রামে। বাবা মৌলভি মোহাম্মদ মুল্লুক চাঁদ এবং মা হামিদা খাতুন।
আরমানিটোলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (মাধ্যমিক) পাস করেন ১৯৪৮ সালে। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতেই তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। রাবেয়া খাতুনের স্বামী প্রয়াত এ টি এম ফজলুল হক ছিলেন দেশের চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রথম পত্রিকা সিনেমার সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক। বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’-এর পরিচালকও তিনি। ১৯৫২ সালের জুলাই মাসে তাদের বিয়ে হয়। তাদের চার সন্তান ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী।
লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা করেছেন। সাংবাদিকতাও করেছেন। অর্ধ শতাধিক উপন্যাসের রচয়িতা রাবেয়া খাতুন রচিত প্রথম উপন্যাস ‘নিরাশ্রয়া’ (অপ্রকাশিত)। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে- ‘মধুমতি’, ‘সাহেব বাজার’, ‘অনন্ত অন্বেষা’, ‘রাজারবাগ শালিমারবাগ’, ‘মন এক শ্বেত কপোতী’, ‘ফেরারী সূর্য’, ‘অনেকজনের একজন’, ‘জীবনের আর এক নাম’, ‘দিবস রজনী’, ‘সেই এক বসন্তে’, ‘মোহর আলী’, ‘নীল নিশীথ’, ‘বায়ান্ন গলির এক গলি’, ‘পাখি সব করে রব’, ‘নয়না লেকে রূপবান দুপুর’, ‘মিড সামারে’, ‘হানিফের ঘোড়া’, ‘হিরণ দাহ’, ‘এই বিরহকাল’, ‘হোটেল গ্রীন বাটন’, ‘বাগানের নাম মালনিছড়া’, ‘প্রিয় গুলশানা’, ‘বসন্ত ভিলা’, ‘ছায়া রমণী’, ‘সৌন্দর্যসংবাদ’, ‘হৃদয়ের কাছের বিষয়’, ‘মালিনীর দুপুর’, ‘রঙিন কাচের জানালা’ ইত্যাদি।
তার মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক জনপ্রিয় উপন্যাস মেঘের পর মেঘ অবলম্বনে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র মেঘের পরে মেঘ। ২০১১ সালে তার আরেকটি জনপ্রিয় উপন্যাস মধুমতি অবলম্বনে পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী একই শিরোনামে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র মধুমতি। এছাড়াও অভিনেত্রী মৌসুমী ২০০৩ সালে তার লেখা ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ অবলম্বনে একই শিরোনামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
ছোটদের জন্যে তিনি লিখেছেন দুঃসাহসিক অভিযান, সুমন ও মিঠুন গল্প, তীতুমীরের বাঁশের কেল্লা, একাত্তরের নিশান, দূর পাহাড়ের রহস্য, লাল সবুজ পাথরের মানুষ, সোনাহলুদ পিরামিডের খোঁজে, চলো বেড়িয়ে আসি, রক্তমুখী শিলা পাহাড়, সুখী রাজার গল্প, হিলারী যখন ঢাকায় আমরা তখন কাঠমুন্ডুতে, রোবটের চোখ নীল ইত্যাদি৷
এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার ছিলেন। জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরীবোর্ডের বিচারক, শিশু একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার ও টেলিভিশনের ‘নতুন কুড়ি’র বিচারক ছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জাতীয় বিতর্কের জুরি বোর্ডের বিচারক ও সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্ত ছিলেন বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, ঢাকা লেডিজ ক্লাব, বিজনেস ও প্রফেশনাল উইমেন্স ক্লাব, বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ ও মহিলা সমিতির সঙ্গে।
সাহিত্যে অবদানের জন্যে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক, জসীমউদ্দীন পুরস্কার, শেরেবাংলা স্বর্ণপদক, ঋষিজ সাহিত্য পদক, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, শেল্টেক্ পদকসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশানে নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র : সংগৃহীত