1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন

খুঁজতে হবে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে

  • সময় মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ১৩৬১ বার দেখা হয়েছে

অন্বেষণ অর্থ খোঁজা। তাহলে ‘অন্বেষায়ন’ শব্দটির তাৎপর্য কি? এর কোনো ভিন্ন অর্থ আছে কি?

আসলে ‘অন্বেষায়নের’ অর্থ খুব সহজ। অন্বেষণ প্রক্রিয়ায় নিজেকে সঁপে দেয়ার নাম হচ্ছে, অন্বেষায়ন।

ভিক্ষু একাপলের অনুসন্ধানে ছিল ‘অন্বেষায়ন’!

তো এই অন্বেষণ বা খোঁজা, খোঁজার তো একটা process আছে। নাসিরুদ্দিন হোজার মতো যদি খোঁজেন তাহলে হবে? তো খোঁজার process আছে। সেই process অনুসারে খুঁজতে হবে। কোথায় খুঁজবেন কীভাবে খুঁজবেন সে খোঁজারও process আছে।

আপনি ধরেন, ধ্যান কী পরিমাণ আত্মপ্রত্যয়, আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারে এই কালেও আমরা উদাহরণ হিসাবে কার কথা ব্যবহার করেছিলাম?

ভিক্ষু একাপল। তো একাপলের খোঁজ পাওয়া গেল কেন?

যারা খুঁজছিলেন তারা খোঁজার প্রক্রিয়া জানতেন। কীভাবে খুঁজতে হবে জানতেন এবং সেটার জন্যে যা উপকরণ প্রয়োজন ছিল সমস্ত উপকরণ নিয়ে তারা খুঁজতে নেমেছেন। এবং সমস্ত উপকরণ ও পদ্ধতি অনুসরণে খুঁজতে নেমেছিলেন বলেই তারা খোঁজ পেয়েছেন।

তারপরেও প্রক্রিয়াটা কত জটিল ছিল যে একজন ডুবুরী, খুব trained ডুবুরী মারা গেছেন।

হয়তো তিনি যদি মেডিটেশন জানতেন ভেতরের শক্তিটাকে যদি জাগ্রত করতে পারতেন এই প্রক্রিয়ার সাথে, তাহলে হয়তো বা তিনি সেই প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে পারতেন।

এই জন্যে খুঁজতে হবে। কিন্তু কীভাবে? প্রক্রিয়া অনুসারে, process অনুসারে।

যে পথ চিনে তাকেই ফলো করুন!

এই যে পাহাড়ে আমরা যখন প্রথম আসি, এটা এখন যারা আসছেন তারা টের করতে পারবেন না কী জিনিস ছিল এটা! বুঝতেই পারবেন না।

তো পাহাড়ে চলার আবার নিয়ম আছে। যে পথ চিনে তাকে ফলো করেই পাহাড়ে চলা লাগে।

কারণ জঙ্গলে কোনো মাইলফলক থাকে না, কোন চিহ্ন থাকে না। যে অভিজ্ঞ, চলাচল করে সে জানে তিনটা, চারটা, পাঁচটার মধ্যে পায়ে চলা পথ কোনটা। যেখানে গিয়ে ভাগ হয়ে গেছে দু’ভাগ, তিন ভাগ, চার ভাগ সেখানে যদি জানা না থাকে তাহলে সে পথ হারিয়ে ফেলে…

আর পাহাড়ে পথ হারানো মানে রাতে…… রামকুকুর জানেন? মানে বন্য কুকুরের নাম হচ্ছে হায়েনা। যে কুকুর অত্যন্ত হিংস্র থাকে, বন্য থাকে এবং এরা পাল বেঁধে থাকে।

কোনো শিকার যদি পায়… ধরেন একটা মানুষ, জলজ্যান্ত একটা মানুষ। এটা জাস্ট মিনিট লাগবে ছিন্ন-ভিন্ন করে ফেলতে । you will no more। আপনি কিছু ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হাড্ডি থাকবেন মাত্র। just a minute।

তো পুরো জায়গা জঙ্গল ছিল। নোয়াপাড়া বলে জায়গা সেখান থেকে ফিরছি। দুপুর পার হয়ে গেছে।

আমাদের সাথে একজন ছিলেন যিনি নিজেকে একটু… মানে অনেকে আছে না ওভারস্মার্ট!

তিনি বলে যে, ঐ তো দেখা যাচ্ছে! আমি যাচ্ছি, আপনারা আসেন, আপনাদের আমি রিসিভ করব।

আমি বললাম যে দেখেন, পথ আপনি চেনেন না, অতএব দেখলেই যাওয়া যায় না। চাঁদও দেখা যায়। কিন্তু যাওয়া যায় না।

তো ইয়ংম্যান হলে যেটা হয় বলে যে I am a devil dare young man! আপনাদের আগে পৌঁছে আমি আপনাদেরকে রিসিভ করব।

তো আমরা আসছি আমাদের যে গাইড, পাহাড়ি তার সাথে।

গাইড নির্ণয়ে বাছবিচার করুন!

আমি আবার গাইড খোঁজার ব্যাপারে বাছবিচার করি। কিন্তু একবার যদি মনে করি he is my guide তার কথার বাইরে আমি নড়ি না। তার চেয়ে আমি কম জানি বা বেশি জানি, লিডার মানে লিডার। কারণ তিনি তার সাবজেক্টে বেশি জানেন বলেই তিনি এখানে আমার গাইড।

অতএব সেখানে আমার মাতবরি করার তো দরকার নাই। আমি যদি মাতবরি করতে যাই তাহলে আমি ভুল করব।

নবীজীর (স) অচেনা অজানা পথের গাইড ছিলেন একজন পৌত্তলিক!

আপনি দেখেন রাসুলুল্লাহ (স) যখন হিজরত করলেন মক্কা থেকে রাতের অন্ধকারে তার গাইড কে ছিল?

একজন বেদুইন যিনি পৌত্তলিক ছিলেন, নবীজীর (স) ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না।

কিন্তু নবীজী তাকে ‘গাইড’ মনোনীত করলেন। তার মাথার ওপর হুলিয়া ছিল ১০০ উট। মানে তাকে জীবিত বা মৃত ধরে দিতে পারে তাহলে ১০০ উটনী।

উট কিন্তু দাম কম, পুরুষ উটের দাম কম, উটনীর দাম বেশি। এবং পুরুষ উটের চেয়ে মহিলা উট অনেক বেশি শক্তিশালী, অনেক বেশি কষ্টসহিষ্ণু এবং মানে দেখতে শুনতেও বড়।

১০০ উটনী! কী বিপজ্জনক ব্যাপার!

কিন্তু নবীজী (স) তাকে বিশ্বাস করলেন এবং তার নির্দেশিত পথে মরুভূমির অচেনা অজানা পথ দিয়ে যেটা এই গাইড চিনতেন।

যে প্রচলিত যে পথ সে পথের বাইরের পথ দিয়ে তিনি নিয়ে গেলেন।

এবং নবীজী (স) আল্লাহর রাসুল হওয়ার পরও তার ওপরে কী করেছিলেন? পুরো নির্ভর করেছিলেন, পুরো বিশ্বাস করেছিলেন! এবং তিনিও তাকে বিশ্বস্ততার সাথে নিয়ে গেলেন।

যে পথ জানে তাকে গ্রহণ করুন ‘গাইড’ হিসেবে!

তো হ্যাঁ ইয়ং ম্যান, ইয়ং ম্যান তো চলে গেলেন!

যখন সে বলল, রিসিভ করবে আমাদেরকে; তো মনে মনে তো বুঝলাম এইবার তো আল্লাহ জানে কোন বিপদে পড়ে। কারণ দেখা গেলেই যাওয়া যায় না।

তো আমরা আসছি আমাদের যে পাহাড়ি গাইড সে নিয়ে আসছে। সে যেভাবে আমরা সেইভাবে।

তো আমরা ৭-৮ জন ছিলাম। মাঝ পথে এসে একটা জায়গাতে যেটা হলো? খুব বেগ পেল। এত বেগ আমার নরমালি হয় না!

যখন তিন রাস্তার মোড় দুইদিকে চলে গেছে রাস্তা, বাম দিকে, আমি তাদেরকে বললাম আপনারা সোজা রাস্তায় একটু কিছুদূর এগোন।

তো যখন আমি বেরিয়ে আসলাম, আবার মেইন রাস্তায় সেই ইয়ং ম্যান ফ্যাকাসে মুখ হাঁপাতে হাঁপাতে হাঁপাতে আসছে আর কি।

তো আমি তাকালাম। আমি বললাম কী হলো ইয়ংম্যান?

বলে যে, “গুরুজী বলেন না আমি তো সোজা রওনা দিয়েছি, রওনা দিয়ে তো গিয়েছি দেখছি আর আধা কিলোমিটার দূরেই। কিন্তু মাঝখানে হচ্ছে খাদ, ৩০ ফিট নিচু খাদ! যেটা পার হওয়ার কোনো উপায় নাই। আর আমি চিন্তা করছি যে, ইয়া আল্লাহ আমি একা! একটু পরে সন্ধ্যা নামবে।

সন্ধ্যা নামলেই বন্য কুকুররা তারা হচ্ছে বনের রাজা তখন। এখানে তো বাঘ নাই! বাঘ থাকলে তো আলাদা কথা! এতো কুকুরের মানে এক মিনিটের খাবারও না, আর আল্লাহ আপনাকে এখানে রেখেছে!”

আসলে এটা আল্লাহ তাকে বাঁচালেন। আমার যদি ওরকম বেগ না হয় এবং আমার যদি ৩-৪ মিনিট সময় ওখানে ব্যয় না হয়, আমরা কিন্তু চলে যেতাম।

এবং আমরা চলে গেলে এই ইয়ং ম্যান আর কখনো… সে পথ খুঁজে পেত না, কারণ পথ অনেকগুলো মানে এদিক ওদিক যায়। সে হাতড়ে বেড়াত এবং যখন সন্ধ্যা নামত তখন আল্লাহ জানেন কী হতো!

তো এই জন্যে পথ চলার জন্যে কী দরকার?

যে পথ চেনে, যে পথ জানে তাকে গাইড হিসাবে গ্রহণ করা।

আমাদের কোনো চিন্তা ছিল না। কারণ আমার গাইড পাহাড়ি ছিল। সে সব রাস্তাঘাট চেনে।

এবং হাতে একটা দা। দা মানে হচ্ছে এটা নরমালি যেটা হয় যে লতাপাতা থাকে তো পাহাড়ি পথে, কাঁটা থাকে, লতা থাকে ওগুলোকে কেটে পথটাকে ক্লিয়ার করার জন্যে।

শুধু অন্বেষণ করলেই অন্বেষায়ন হয় না…

‘অন্বেষায়ন’ মানে হচ্ছে কী?

শুধু অন্বেষণ করলে অন্বেষায়ন হয় না। একটা প্রক্রিয়ার মাঝে, অন্বেষণ প্রক্রিয়ার মাঝে নিজেকে সমর্পিত করা with a guide যাতে করে আপনি আপনার destination এ পৌঁছতে পারেন।

কারণ অন্বেষায়ন করে তো পেতে হবে। অন্বেষণ করলেন, কিছুই পেলেন না এমন যেন না হয়।

ধরুন, ঘুরে বেড়ালেন কতক্ষণ। ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে ক্লান্ত হয়ে গেলেন। হতাশ হয়ে গেলেন। বললেন, আসলে কিছু নাই!

যেমন, ফেরাউন অনেক উঁচু করে প্রাসাদ বানিয়েছে। ওপরে উঠেছে যে, আকাশে আল্লাহকে দেখবে! ওপরে উঠে দেখল যে আল্লাহ নাই!

এখন দশতলা ওপরে যদি কেউ আল্লাহকে খোঁজে, তো আল্লাহকে পাবে?
তো খুঁজতে হবে প্রসেস মতন, প্রক্রিয়া অনুসারে। সেজন্যে অন্বেষায়ন।

[শিক্ষার্থী অন্বেষায়ন, কোয়ান্টামম, ০৩ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ০৭ জানুয়ারি, ২০২০]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com