1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০২:২১ পূর্বাহ্ন

দীর্ঘসূত্রিতা : ধর্মীয় ব্যাখ্যা

  • সময় সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৩০ বার দেখা হয়েছে

ভগবদ্গীতায় বলা হয়েছে, আলস্য ও দীর্ঘসূত্রিতা এই দুটোই হচ্ছে তামসিক। তামসিক মানে হচ্ছে অবিদ্যা অজ্ঞতার অন্ধকারের একটা রূপ, যা এই দীর্ঘসূত্রিতা এবং আলস্য।

আলস্য থেকে মুক্তির জন্যে নবীজী (স) যে প্রার্থনা করতেন…
তো আসলে এই দীর্ঘসূত্রিতা এবং আলস্য থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে আল্লাহর রসুল (স) কিন্তু একটা দোয়া করতেন আমাদের হাদীস শরীফ বাংলা মর্মবাণীতেও রয়েছে এটা যে, কোনো কর্মসম্পাদনের অক্ষমতা থেকে এবং আলস্য থেকে আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। অর্থাৎ আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছেন এটা হচ্ছে নবীজীর (স) প্রার্থনা।

অর্থাৎ এই দীর্ঘসূত্রিতা এবং আলস্য এই দুটো ‘কারণ’ সৃষ্টি করে এই আজকের কাজ আজকে না করার। অর্থাৎ আজকের কাজ যদি আজকে না করেন এই দীর্ঘসূত্রিতা এবং আলস্য আপনার সৃষ্টি হবে। এবং এই দীর্ঘসূত্রিতা আলস্য থেকে, কর্মসম্পাদনের অক্ষমতা থেকে এবং আলস্য থেকে আল্লাহর রসুল সবসময় আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়েছেন।

ধম্মপদে যা বলা হয়েছে…
ধম্মপদে খুব চমৎকারভাবে বলা হয়েছে যে, আলস্যকে প্রশ্রয় দিও না, ধর্মকে অনুসরণ করো ইহলোক ও পরলোকে দুই লোকেই সুখে থাকবে। আলস্য হয়ে বিছানায় গড়াগড়ি দেয়া স্বভাবে পরিণত হলে সেই মূর্খের জীবনে দুঃখের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। তার জীবন থেকে দুঃখ কখনো দূর হবে না।

বাইবেল কী বলে?
বাইবেলে হিতোপদেশে বলা হয়েছে, আরেকটু ঘুম আরেকটু তন্দ্রা বিছানায় আরেকটু গড়াগড়ি দারিদ্র্য ও অভাব দস্যুর মতো দেবে হানা তোমার অন্দরে।

অর্থাৎ আপনি হিন্দুধর্ম বলেন বৌদ্ধধর্ম বলেন খ্রিষ্টধর্ম বলেন ইসলাম বলেন, প্রত্যেকটা ধর্মে এই আলস্য থেকে দীর্ঘসূত্রিতাকে পরিত্যাগ করে প্রত্যেকটা কাজ সময়মতো করার জন্যে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

মা সারদা দেবীর অভিজ্ঞতা
এবং আলস্য সম্পর্কে মা সারদা দেবী রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের সাথে যার নাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত তিনি খুব চমৎকারভাবে বলেছেন, “যে জপ ধ্যান সবসময় আলস্য ত্যাগ করে করতে হবে। দক্ষিণেশ্বরের রাত তিনটায় উঠতাম। একদিন শরীরটা খারাপ লাগায় একটু দেরিতে উঠেছি। পরদিন আরো দেরিতে উঠলাম। ক্রমে দেখি আর সকালে ওঠতেই ইচ্ছা হচ্ছে না। তখন মনে হলো ওরে এই তো আলস্য পেয়েছে! তারপর জোর করে উঠতে লাগলুম। এবার সব পূর্বের মতো হতে লাগল। সাধনার বিষয়ে রোজ জোর করে অভ্যাস রাখতে হয়। ধ্যান জপের একটা নিয়মিত সময় রাখা খুব দরকার। কারণ কখন যে ক্ষণ বয় বলা যায় না। ও হঠাৎ এসে উপস্থিত হয় টের পাওয়া যায় না। সেজন্যে যত গোলমাল হোক নিয়ম রাখা খুব দরকার। এটা হচ্ছে মা সারদা দেবীর অভিজ্ঞতা”।

সময়ের গুরুত্বের ব্যাপারে কোরআনের শিক্ষা!
এবং ইসলাম সময়কে যে কী গুরুত্ব দিয়েছে সময়মতো কাজকে যে কী গুরুত্ব দিয়েছে আমাদের কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলি যে, সূরা আর রাহমানের একটি আয়াত হচ্ছে, কুল্লো ইয়াওমিন হুয়া ফিস্শান, ফাবি আইয়্যে আলায়ে রাব্বি ক্যুমা তুকাজ্জিবান।

আল্লাহ বলেন যে, সময়ের প্রতিটি মুহূর্তে আমার মহিমা নব নবরূপে দীপ্যমান। তোমরা আমার কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে? যে কারণে ইসলামে ইবাদতের সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে যে, ফজরের নামাজ কখন পড়তে হবে। তখনই ফজরের নামাজ আদায় হবে এবং ফজরের বরকত পাবেন।

এরপরে যখন পড়বেন কাজা আদায় হবে, এটা কিন্তু কাজা হয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ বাসি। তাজার যে মানে স্বাদ ফজিলত এই স্বাদ এবং ফজিলত আপনি পাবেন না। যোহরের নামাজ যোহর, আসরের নামাজ আসরে, প্রত্যেকটা নামাজের সময় ভাগ করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আজকের কাজ আজকেই করতে হবে এখনকার কাজ এখন করতে হবে।

তো এটা করতে পারলেই আপনি আপনার এই যে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স এই কর্টেক্সের যে প্ল্যানমাস্টার যে প্ল্যান দেবে সেই প্ল্যানটাকে আপনি বাস্তবায়িত করতে পারবেন। এ প্ল্যান দিতে পারে কিন্তু একে সচেতনভাবে আপনাকে পরিচালিত করতে হবে। তাহলে You will get the result. মা সারদা দেবী যেভাবে কী করেছেন? জোর করে উঠেছেন যে, না! উঠতে হবে।

সুফি হাসান বসরীর সতর্কতা!
প্রখ্যাত তাবেঈ সুফি হাসান বসরী। হাসান বসরী খুব চমৎকারভাবে বলেছেন যে, হে আদম সন্তান! তুমি দীর্ঘসূত্রিতার ব্যাপারে সতর্ক থাকো। আজ তুমি যা আছো কালকে তুমি তা না-ও থাকতে পারো। যদি আগামীকাল তোমার জীবনে আসে সেটা আগামীকাল, যদি আগামীকাল তোমার জীবনে না আসে তাহলে তুমি তোমার সুযোগটা হারিয়ে ফেললে। অতএব আজকের কাজ কখনো আগামীকালের জন্যে ফেলে রাখবে না।

আমরা মনে করি যে, সুফিরা বোধহয় অলস ছিলেন। আমরা মনে করি যারা সাধনা করেন তারা বোধহয় অলস ছিলেন। মা সারদা দেবী ঐ বয়সেও কী করেছিলেন? রাত তিনটার সময় উঠে ধ্যান জপ করতেন।

এবং হাসান বসরী যিনি তাবেঈদের মধ্যে একদম প্রথম সারির তাবেঈ। তিনি বলছেন, আগামীকালের জন্যে অপেক্ষা করবে না আগামীকাল তোমার জীবনে না-ও আসতে পারে। আজকের কাজটা আজকে যা করার আজকে করে ফেলো।

এবং প্রত্যেক ইমাম এই সময়মতো কাজ করাটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তারা সময়মতো কাজ করেছেন।

তো এখন এই দীর্ঘসূত্রিতা কাটিয়ে ওঠার জন্যে কী করতে হবে? দীর্ঘসূত্রি আপনি যাতে না হন কী করতে হবে? এটার জন্যে মেডিটেশন করতে হবে।

[শিক্ষক ওয়ার্কশপ, ২৬ মে, ২০২৩]

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com