বিয়ের আগে স্বামী বা স্ত্রী যে কারো প্রেমের সম্পর্ক বা গোপন বিষয় থাকতেই পারে। কিন্তু বিয়ের পরে উভয় পক্ষই যদি এই বিষয় অনুসন্ধান এবং পর্যালোচনা করার চেষ্টা করেন তবে সেটা শুধু জটিলতা সৃষ্টি করবে।
কারণ বিয়ের পর যদি একজন স্বামী এবং একজন স্ত্রী পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার মানসিকতা রাখতে পারে, তাহলে বিয়ের আগে কী কী হয়েছে, এসব নিয়ে কারো-ই মাথা ঘামান উচিত না। এমনকি এগুলো পরস্পরকে বলারও কিছু নাই।
কারণ অতীতে ফিরে যাওয়া যায় না। যেতে হয় ভবিষ্যতে। অতীত নিয়ে অগ্রসর হওয়া যায় না, এগুতে হয় ভবিষ্যতকে নিয়ে।
যাইহোক এরপরও যদি আপনি কিছু জেনে থাকেন বা শুনে থাকেন বা সন্দেহ তৈরি হয়ে থাকে, তবে এটা নিয়ে অগ্রসর হওয়া মানে নিজের হাতে নিজের সুখী হওয়ার সুযোগকে সীমিত করে ফেলা।
সরাসরি কথা বনাম তৃতীয় পক্ষ
দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টির একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে, এই সম্পর্কে তৃতীয় পক্ষের কোনো কথায় প্রভাবিত হওয়া। অথবা স্বামী স্ত্রীর ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষকে (আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী) জড়ানো। এই বিষয়টিও সুখের সংসারে সন্দেহ হয়ে ঘর বাধে এবং ধীরে ধীরে ভয়াল ব্যধির মতো নিঃশেষ করে দিতে চায় মধুর স্মৃতিগুলোকেও।
তাই সম্পর্কের জটিলতায় সবসময় সরাসরি কথা বলুন। কাউকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবেন না। কারণ সর্ম্পক যত সরাসরি হবে, ভুল বুঝাবুঝি তত কম হবে।
সন্দেহ থেকে যখন আত্মউপলব্ধি
সন্দেহ একটি মনের রোগ। তাই এই রোগ ভালো হয়ে যায় ঔষুধ ছাড়া। স্বামী/ স্ত্রী যে কারো এটা হতে পারে যে, তিনি তার এই প্রিয় মানুষটিকে অহেতুক সন্দেহ করেন। এটা যে সঠিক হচ্ছে না সেটা বুঝতেও পারেন। কিন্তু কোনোক্রমেই সন্দেহের জাল থেকে বের হতে পারেন না। পরবর্তীতে এই নিয়ে তার মনে একটা কষ্ট এবং এ থেকে অনুশোচনা সৃষ্টি হয়।
এক্ষেত্রে মেডিটেশনে কমান্ড সেন্টারে আপনার সঙ্গীকে নিয়ে আসবেন এবং অনুভব করবেন যে তাকে কত ভালবাসেন। অনুভব করবেন এবং মনে মনে বলবেন যে, আমি তোমাকে এত ভালবাসি এত ভালবাসি। পাশাপাশি তার গুণগুলো নিয়ে ভাবতে থাকুন। এটা নিয়মিত প্রত্যেক দিন করুন।
আসলে নিজের স্বামী/ স্ত্রীকে যদি সবচেয়ে ভালো মানুষ হিসেবে ভাবতে না পারেন আপনি কখনো সুখী হতে পারবেন না। তাই সব মহিলাই ভালো কিন্তু আমার স্ত্রীর জুড়ি নেই সব পুরুষেরই এমনটা ভাবা উচিত। একইভাবে প্রত্যেকটা স্ত্রীর এমনটা ভাবা উচিত যে আমার স্বামী হচ্ছেন পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালো।
দাম্পত্য জীবনে আমাদের একান্ত আপন সর্ম্পকগুলোতে যোজন যোজন দুরত্ব সৃষ্টি করবে, এহেন কোনো নেতিবাচক আবেগ কারো কাম্য নয়। তাই আসুন আমাদের এই সর্ম্পকগুলো যেন নিজ নিজ সৌর্ন্দযে অটুট থাকে, সেজন্যে সচেতন হই। আমাদের মানবিক আবেগকে জাগ্রত করে গড়ে তুলি শান্তি সুখের নীড়।
তাই এক্ষেত্রে ক্ষমা করে দেয়াটাই আপনার জন্যে ভালো হবে। কারণ আপনি যদি মানুষকে ক্ষমা করেন স্রষ্টাও আপনাকে ক্ষমা করবেন।
সুন্দর জীবন গড়তে হলে পরস্পরকে সম্মান করতে হবে, ক্ষমা করার মনমানসিকতা থাকতে হবে, ভালবাসতে হবে মন থেকে।