1. [email protected] : আরএমজি বিডি নিউজ ডেস্ক :
  2. [email protected] : adminbackup :
মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন

যৌবন যার সেবক হবার শ্রেষ্ট সময় এখন তার। 

  • সময় মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১
  • ১২৩১ বার দেখা হয়েছে

যৌবন যার সেবক হবার

শ্রেষ্ট সময় এখন তার।

মেধাকে সেবায় রূপান্তর করার নির্ধারিত পেশাগুলোর নাম বললে ভালো হয়। আমি এ ব্যাপারে কিছুটা দ্বিধান্বিত এজন্যে যে, সকল পেশায় সরাসরি সেবার সুযোগ পাওয়া যায় না।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘তিনি (মুসা আলাইহিস সালাম) যখন পূর্ণ যৌবনে পৌছিলেন, তখন তাকে প্রজ্ঞা ও বুৎপত্তি দান করলাম।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ১৪)

আসহাবে কাহাফের ৭ ব্যক্তিও ছিল যুবক। যারা এক আল্লাহর ইবাদতে বিশ্বাসী ছিলেন। যাদেরকে শত্রুর হাত থেকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করেছিলেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন যুবকেরা পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করে তখন দোয়া করে- হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে (তোমার) নিজের কাছ থেকে রহমত দান করুন এবং আমাদের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করুন।’ (সুরা কাহাফ : আয়াত ১০)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘(হে রাসুল!) আপনার কাছে তাদের ইতিবৃত্তি সঠিকভাবে বর্ণনা করেছি। তারা ছিল কয়েকজন যুবক। তারা তাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং আমি তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।’ (সুরা কাহাফ : আয়াত ১৩)

যুবকদের উদ্দেশ্যে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নসিহত হলো- ‘একজন বৃদ্ধের ইবাদতের চেয়ে আল্লাহ বেশি খুশি হন যেসব তরুণ-তরুণী যৌবন বয়সে আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকে।’

প্রিয়নবি আরো বলেন, ‘কেয়ামতের দিন ৫টি প্রশ্নের উত্তর দেয়া ব্যতীত মানুষকে এক কদম নড়তে দেয়া হবে না; তার মধ্যে একটি হলো- ‘সে তার যৌবনকাল কোন পথে ব্যয় করেছে।’

অন্য হাদিসে তিনি ৫টি অবস্থার পূর্বে ৫টি অবস্থাকে মর্যাদা দেয়ার কথা বলেছেন, তন্মধ্যে একটি হলো- ‘তোমরা বার্ধক্যের আগে যৌবনকে মর্যাদা দাও।’

হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, ‘যৌবনের ইবাদত বৃদ্ধ বয়সের ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি দামী। আবার বৃদ্ধ বয়সের পাপ যৌবনের পাপের চেয়ে অনেক বেশি জঘন্য।’

হজরত শেখ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘দুনিয়া ও পরকালের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা এ যৌবন কালেই সংগ্রহ কর।’ আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে নবুয়ত ও রেসালাতের দায়িত্ব দিয়ে নবি ও রাসুলদেরকে টগবগে যুবক বয়সেই দুনিয়াতে প্রেরণ করছেন।

এ কারণেই হজরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা যুবক ছাড়া যেমন কোনো নবি পাঠাননি তেমনি যুবক ছাড়া কাউকে ইলমও দান করেননি।’

আসলে প্রত্যেকটি পেশাতেই সেবাদানের সুযোগ রয়েছে। যেখানে আপনার যে কাজটুকু করা প্রয়োজন সেই কাজটুকু আরেকজন মানুষকে কষ্ট না দিয়ে যদি আপনি করে দেন—এটাই হচ্ছে সেবা।

আপনি যদি কম্পিউটার টেকনিশিয়ান হন, যে কাজটি দুমিনিটে করে দেয়া সম্ভব, সেটা দুমিনিটে করুন। যদি ওয়ার্কশপে না নিয়ে তখনই কাজ করে দিতে পারেন, তা-ই করুন।

টেস্ট করতে হবে বলে নিয়ে গিয়ে দুইদিন এমনিই ফেলে রাখলেন। পরে মাত্র তিন মিনিট কাজ করে দাবী করলেন অনেক বেশি—এটা সেবা হলো না, শোষণ হলো।

কাস্টমসের একজন ইন্সপেক্টর আমাকে একদিন বললেন, গুরুজী, লজ্জায় বলতে পারি না। আমি বললাম, কী? তিনি বললেন, আমার রুজি তো হালাল হয় না। বেতন যা পাই, তা দিয়ে তো খাওয়ার খরচই ওঠে না।

বাকি সব মিটবে কী করে! কাজেই উপরি নিতেই হয় বাধ্য হয়ে। বুঝলাম, তিনি একটা রূঢ় বাস্তবতার কথা বলছেন। এক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি এটাই হতে পারে যে, আপনি যে চাকরিই করেন না কেন ফাইলটাকে আটকে রাখবেন না।

ফাইল ছেড়ে দিন। আপনি তাকে কষ্ট দিলেন না। তারপর যদি খুশি হয়ে কেউ কিছু করে সেটা অন্য কথা।

যদি ডাক্তার হন—প্রত্যেক রোগীকে সময় দিন, তার সাথে সদ্ব্যবহার করুন, তাকে আশার বাণী শোনান। ফি দিতে পারছে না বলে কাউকে ফিরিয়ে দেবেন না।

শিক্ষক হলে প্রতিটি ক্লাসে সময়মতো উপস্থিত হোন, ছাত্রছাত্রীদের দিকে মনোযোগ দিন, সবার ওপরে স্থান দিন জ্ঞান বিতরণকে।

অর্থাৎ সেবা কোনো সংকীর্ণ ব্যাপার নয়। প্রতিটি পেশায় সেবার সুযোগ আছে। কারণ প্রতিটি পেশাই জন্ম নিয়েছে মানুষের কোনো না কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্যে।

অতএব আপনি যে পেশাতেই থাকুন, সে পেশার মাধ্যমে যেটুকু উপকার করা সম্ভব, পূর্ণ মমতা ও আন্তরিকতা নিয়ে তা করুন। আপনার জীবন পরম করুণাময়ের আশীর্বাদে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।

শেয়ার করুন

এই শাখার আরো সংবাদ পড়ুন
All Rights Reserved © rmgbdnews24.com